(বাঁ দিকে) জগন্মোহন রেড্ডি এবং নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
তেলুগু দেশম প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডুর পরে এ বার দিল্লিতে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সভাপতি জগন্মোহন রেড্ডি। শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দফতরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠকও করলেন জগন। অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্যের জন্য ‘বিশেষ মর্যাদা’ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আবেদন জানাতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে তাঁর এই দিল্লি সফর ‘রাজনৈতিক মাত্রা’ পেয়েছে। ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই অন্ধ্রের নেতা, প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিংহ রাওকে মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মাননা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মোদী।
অন্ধ্রের রাজনীতিতে জগনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী, তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)-র প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডু বুধবার রাতে দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। অন্ধ্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু ছ’বছর পরে আবার বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-তে ফিরতে চলেছেন বলে জল্পনা। সেখানে ক্ষমতাসীন ওয়াইএসআর কংগ্রেসকে হারানোর উদ্দেশে ইতিমধ্যেই তেলুগু অভিনেতা-রাজনীতিক পবন কল্যাণের দল জনসেনা পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে টিডিপি। বিজেপিও সেই জোটে শামিল হলে জগনের হারের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইতিমধ্যেই কয়েকটি জনমত সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে।
আগামী এপ্রিল-মে মাসে লোকসভা ভোটের সঙ্গেই অন্ধ্রে বিধানসভা ভোট হওয়ার সম্ভাবনা। ঘটনাচক্রে, ইতিমধ্যেই জগনের বোন শর্মিলা কংগ্রেস যোগ দিয়ে সে রাজ্যের সাংগঠনিক প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন। ক্ষমতা দখল করতে না পারলেও প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডির কন্যাকে সামনে রেখে কংগ্রেস এ বার জগনের দলের ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন। সে ক্ষেত্রে সুবিধা হবে চন্দ্রবাবুর।
সেই সম্ভাবনা এড়াতেই অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ মোদীর ‘দরবারে’ হাজির হয়েছেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। যদিও গত দেড় দশকে প্রতিটি লোকসভা-বিধানসভা ভোটের আগেই অন্ধ্রে ‘বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা’ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরুর উদাহরণ রয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন অখণ্ড অন্ধ্রের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা রাজশেখর রেড্ডি। তাঁর মৃত্যুতে খালি হওয়া কাড়াপা জেলার পুলিভেন্ডুলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জেতেন স্ত্রী বিজয়াম্মা। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে ২০১১ সালে নয়া দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস গড়েন রাজশেখর-পুত্র জগন। সে সময় পাশে পেয়েছিলেন মা বিজয়াম্মা এবং বোন শর্মিলাকে। পরে জগনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে দু’জনেরই।