অমিত শাহ। — ফাইল চিত্র।
ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। বিজেপি শাসিত অসম, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিও ওই আইন চালু করতে কাজ শুরু করে দিয়েছে। আর আজ এক বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে অমিত শাহ বলেন, ‘‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিজেপি সরকারের এমন এক প্রতিশ্রুতি, যাতে দেশের হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধ এবং পার্সি সমাজকে একই আইনের ছাতার তলায় নিয়ে আসা যাবে।’’
পুরো সাক্ষাৎকারে শাহ ওই বিধিতে সবথেকে বেশি জোর দেওয়ায় বিজেপিরই একাংশ বলছে, ফের ক্ষমতায় এলে এই বিধি যে গোটা দেশে চালু হবে, তা ফের বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আরও আলোচনা হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন শাহ।
লোকসভা নির্বাচনের আগে আজ ওই আলাপচারিতায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, সংশোধিত, নাগরিকত্ব আইন, নির্বাচনী বন্ড ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কেমন ফল করবে, তা নিয়ে মুখ খোলেন শাহ। গত লোকসভায় পশ্চিমবঙ্গে ১৮টি আসন জিতেছিল বিজেপি। শাহ বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে কমপক্ষে ২৫টি আসনে জিততে চলেছে বিজেপি। পঁচিশের বেশি আসনই আমরা নিশ্চিত ভাবে পশ্চিমবঙ্গে জিততে চলেছি। এ বার পশ্চিমবঙ্গে সব থেকে বেশি আসন পাবে বিজেপি।’’
তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা বক্তব্য, ‘গণতন্ত্রে যিনি যা খুশি বলতেই পারেন। আগে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে সবক’টি আসনে প্রার্থী তো ঘোষণা করুক। প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও, তাঁরা তো পালিয়ে যাচ্ছেন।’ পাশাপাশি দেশ জুড়ে সংশয় ও বিতর্ক তৈরি হলেও, ভবিষ্যতে কৃষি আইনের মতো সিএএ প্রত্যাহার করার প্রশ্ন নেই বলে জানিয়েছেন শাহ।
তবে আজ শাহ সবথেকে বেশি জোর দিয়েছেন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রসঙ্গে। জনসঙ্ঘ ১৯৫০ সাল থেকে দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার পক্ষে সওয়াল করে এসেছে। আজ শাহ বলেন, ‘‘ওই আইন কোনও ধর্মে হস্তক্ষেপ করবে না, বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় অনুশীলনে হস্তক্ষেপ করবে না। সংবিধান প্রণেতারা যেমন নির্ধারণ করেছিলেন, ঠিক সে ভাবেই এক আইন তাদের পরিচালনা করবে।’’ কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন বিরোধী দলগুলি অভিন্ন দেওয়ানি বিধির সমালোচনায় সরব। শাহের কথায়, ‘‘অথচ সর্দার পটেল, জহওরলাল নেহরু, বি আর অম্বেডকর মনে করতেন, ঠিক সময়ে দেশে ওই আইন রূপায়ণ করা হবে।’’
বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন, একাধিক বিরোধী দল এ দেশের মুসলিমদের শরিয়া আইন মেনে চলার পক্ষে সওয়াল করেছেন। যার জবাবে শাহ বলেন, ‘‘এ সব হল কংগ্রেস ও বিরোধীদের সংখ্যালঘু তোষণ নীতি। ধর্ষণকারীকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা, চোরেদের হাত কেটে ফেলা, দেশবিরোধীদের ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা—বিরোধীরা কি এটাই চাইছেন?’’ শাহের কথায়, বহু মুসলিম দেশ শরিয়া আইন প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারতেও ১৯৩৭ সালের পর থেকে শরিয়া আইন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।