adhir chowdhury

‘জোট আমার সাবজেক্ট নয়’! তৃণমূল প্রসঙ্গ উঠতেই জানিয়ে দিলেন অধীর, তবে শানিয়ে গেলেন আক্রমণও

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর এই সাংবাদিক বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে তৃণমূলের সঙ্গে জোট নিয়ে ‘বিরূপ মন্তব্য’ করার জন্য অধীরকে তীব্র আক্রমণ করেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৩০
Adhir Chowdhury

অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।

ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা নিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী আসছেন মুর্শিদাবাদে। আবার মঙ্গলবার রাত পোহালেই বহরমপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার কয়েক ঘণ্টা আগে ইন্ডিয়া নিয়ে হাই কমান্ডের উপরই দায় ছেড়ে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর মন্তব্য, ‘‘জোট আমার সাবজেক্ট নয়।’’ আবার খানিক ‘অপ্রত্যাশিত ভাবে’ মমতার সফর প্রসঙ্গে সাবধানী শোনাল জেলা কংগ্রেস মুখপাত্রদেরও।

Advertisement

আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি বিরোধী দলগুলি এক ছাতার নীচে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে অনেক আগে। কিন্তু বাংলায় তৃণমূল একাই লড়াই করবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, মুর্শিদাবাদে তিনটি লোকসভা আসনেই দলকে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত হতে বলেছেন তিনি। রাহুল গান্ধী-সহ কংগ্রেস বাংলায় জোট নিয়ে আশাবাদী হলেও মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, এ সব ভোটের পর ভাববেন। অন্য দিকে, বাংলায় জোটে জটিলতার প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় কারণ হিসাবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরকেই দায়ী করেছে তৃণমূল। কারণ, অধীর প্রথম থেকেই জানিয়ে এসেছেন তাঁর লড়াই তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, মমতা যখন তাঁর দলকে বার্তা দিয়েছেন যে, অধীর কোনও ‘ফ্যাক্টর’ নন, পাল্টা বহরমপুরের সাংসদ বলেছেন, ‘‘আমি তো লড়াই করে জিতেছি। প্রতিপক্ষকে হারিয়ে বড় হয়েছি। আমি কাউকে পরোয়া করি না। আমি কাজ করে দেখিয়ে দিয়েছি। কংগ্রেস চাইলে সব পারে। আমি লড়াই করতে প্রস্তুত।’’

মুর্শিদাবাদে মমতার সফরের ঠিক আগে জোট নিয়ে প্রশ্ন করতেই এ বার অধীর বললেন, ‘‘কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট হবে সে বিষয়ে আমি অবহিত নই। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতও নই।’’ বস্তুত, জোট নিয়ে এ বার অধীরের সুর এখন কিছুটা নরম। তিনি জানাচ্ছেন, জোটের বিষয়টি দেখবেন শীর্ষ নেতৃত্ব। এ নিয়ে তাঁর কিছু বলার নেই। তবে বহরমপুরে তাঁকে দল লড়তে বললে লড়বেন। এবং সেখানে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল এবং বিজেপি দুই-ই। বহরমপুরের সাংসদের কথায়, ‘‘আমি তো এই জোটের প্রক্রিয়ায় নেই। প্রথম থেকেই সেটা বলেছি। আমি তৃণমূল-বিজেপিকে হারিয়েছি। আগামিদিনে কংগ্রেস যখন আমায় লড়তে বলবে, আমি সে ভাবেই লড়বে।’’ অধীরের সংযোজন, ‘‘বাকি কে কার সঙ্গে জোট করবে না কি বিজোড় হবে, তা নিয়ে অধীর চৌধুরী অবহিত নন। এটা আমার সাবজেক্ট নয়। আর যেটা আমার সাবজেক্ট নয়, সেটা নিয়ে প্রশ্ন না করলেই খুশি হব।’’

অন্য দিকে, অধীরের এই সাংবাদিক বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে তৃণমূলের সঙ্গে জোট নিয়ে ‘বিরূপ মন্তব্য’ করার জন্য অধীরকে বেনজির আক্রমণ করেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তাঁর কথায়, ‘‘অধীর চৌধুরী পাগলামো করছেন। উনি লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা। পাশাপাশি কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য। ওই কমিটির বাকি সদস্যরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি যে সুরে কথা বলেন, অধীর সেই সুরে কথা বলেন না।’’ এ নিয়ে অধীর অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “তিনি (মমতা) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। জেলা সফরে তাঁর নির্দিষ্ট কিছু কর্মসূচি রয়েছে। এখনও তাঁর সভা হয়নি। তার আগে রাজ্যের দায়িত্বশীল বিরোধী দল হিসাবে আর কোনও কথা বলা উচিত হবে না।’’

সিপিএম অবশ্য এ সবের ধার ধারছে না। তারা মমতার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে মুর্শিদাবাদ জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে সেটিং করে তো বিজেপি বিরোধী লড়াই করা যায় না। তাই তৃণমূলকে বাদ দিয়েই রাজ্যে বিজেপি বিরোধী শক্তির সঙ্গে লোকসভায় জোট তৈরি হবে।’’ পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘‘আগে প্রশাসনিক বৈঠক হলে সমস্ত দলের বিধায়ক থাকতেন। এখন এই রকম সরকারি বৈঠক হলে শুধুমাত্র তৃণমূলের বিধায়কেরাই থাকেন। আসলে প্রশাসনিক বৈঠককেও উনি দলীয় সভা বলে মনে করেন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement