ব্যারাকপুরে পুলিশের সঙ্গে বিজেপির সংঘর্ষ। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য ও জেলার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে এসপি অফিসের সামনে ‘আইন অমান্য আন্দোলন’-এর কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি যুব সংগঠন। সোমবার দুপুরের সেই কর্মসূচিকে ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালেন বিজেপি নেতাকর্মীরা। চলল ইটবৃষ্টি থেকে জলকামান। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় তাঁদের উপর হামলা করেছে পুলিশ। মহিলাদের উপর আক্রমণ হয়েছে। এ নিয়ে মহিলা কমিশনে অভিযোগ জানাবেন তিনি।
সোমবার দুপুরে সুকান্তের নেতৃত্বে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বিজেপি কর্মীরা এগোতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। কিছু ক্ষণের মধ্যেই কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ব্যারাকপুরের সিপি অফিসের সামনের এলাকা। পুলিশের সঙ্গে বিজেপির খণ্ডযুদ্ধে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ প্রথম পাথর ছুড়েছে! অন্য দিকে, বিজেপির এই মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান চালায় পুলিশ। তাতে কর্মীদের সঙ্গে ভিজে যান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত। তার মধ্যেও উত্তেজনা কমেনি। এর পর বিক্ষোভকারীদের মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়। টেনেহিঁচড়ে তাদের নিয়ে যায় পুলিশ। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে বিটি রোড। সুকান্তের অভিযোগ, ‘‘বিজেপির মহিলা কর্মীদের পুলিশ মারধর করেছে। এ নিয়ে মহিলা কমিশনে যাব। আর পুলিশ পাথর ছুড়ে প্ররোচনা দিয়েছে।’’
এর মধ্যে ঘটনাস্থলে যান ডিসি (সেন্ট্রাল) আশিস মৌর্য। উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা চলে। বিটি রোডের একটি অংশে যান চলাচল সচল হয়েছে।
বিজেপি জানিয়েছে, রাজ্য জুড়ে অপশাসন, পুলিশি অত্যাচার এবং তাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া ইত্যাদি বেশ কিছু অভিযোগ নিয়ে সহ একাধিক অভিযোগ তুলে বিজেপির যুব মোর্চা ‘আইন অমান্য’ কর্মসূচির আয়োজন করছে। ব্যারাকপুরে মিছিলের নেতৃত্বে যেমন সুকান্ত ছিলেন, মেদিনীপুরের এলআইসি মোড়ে ওই কর্মসূচির সূচনায় ছিলেন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। মিছিল নিয়ে দিলীপরা এসপি অফিসের দিকে এগিয়ে গেলে অফিসের গেটে পুলিশ বাধা দেয়। তখন রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।পরে দিলীপ বলেন, ‘‘আমাদের পার্টির গণতান্ত্রিক অধিকার লুট করা হচ্ছে। কর্মসূচির জন্য অনুমতি চাইলে দেয় না। আবার বিনা অনুমতিতে কর্মসূচি করলে ‘কেস’ দেয়। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলা হচ্ছে। গোয়ালারা গরু-মোষ বাইরে থেকে নিয়ে আসছে রসিদ দিয়ে। সেগুলো লুট করে নিচ্ছে পুলিশ। এখানে পুজো উদ্বোধন থেকে খেলার উদ্বোধন এসপি করেন। এর বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। ভোট এলেই পুরনো কেস দিয়ে বিজেপি কর্মীদের জেলে ঢোকানো হয়। এর বিরুদ্ধে আমরা পথে নেমেছি।’’
এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ বলে অশান্ত জনতাকে জলকামান দিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে তো এই পরিস্থিতিতে গুলি চলত।’’