ছবি: সংগৃহীত।
২০২৫ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য এখনও রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেনি বহু পড়ুয়া। স্কুলের কত সংখ্যক পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন বাকি আর কত সংখ্যক সম্পূর্ণ হয়ে গেছে তা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারে এ বার লিখে দিতে হবে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের।
নবম শ্রেণিতে ওঠার পরই মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য পর্ষদের কাছে নাম নথিভুক্তকরণ বা রেজিস্ট্রেশন করতে হয় পড়ুয়াদের। এই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট স্কুলের। বিগত বছরে দেখা গেছে নবম শ্রেণির পর দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও দেখা গিয়েছে কারও কারও রেজিস্ট্রেশন হয়নি। এমনকি, মাধ্যমিক পরীক্ষার ক’দিন আগেও পর্ষদের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি বেশ কিছু স্কুলের বহু সংখ্যক পড়ুয়ার। যার ফলে বারবার জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে স্কুল এবং পর্ষদকে। এর ফলে বেশ কিছু মামলা আদালত অবধিও গড়িয়েছে।
পর্ষদের তরফে নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এ বছরও সেই সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তার পরেও একাধিক স্কুলের পড়ুয়াদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। এরপর ন্যূনতম অতিরিক্ত ফি বাবদ টাকা নিয়ে ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বৃদ্ধি করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আর সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই এ বার রেজিস্ট্রেশন নিয়ে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করল পর্ষদ।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “এটি একটি নজিরবিহীন পদক্ষেপ পর্ষদের। এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি শুধুমাত্র প্রধান শিক্ষকদের অপমান নয়। প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থারও অপমান।”
পর্ষদের দেওয়া নির্দেশিকায় ডিসেম্বরের ৩১ তারিখের পরও নাম নথিভুক্তকরণের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। সেখানে যে সমস্ত পড়ুয়া রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেনি তাদের রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে অতিরিক্ত ৩০০ টাকা ফি ধার্য করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকদের স্কুলের তরফ থেকে মুচলেকা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এই বিজ্ঞপ্তিতে পরিষ্কার করে উল্লেখ করা হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা অ্যাডমিট কার্ড নিতে যাওয়ার সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারে মুচলেকা জমা দিতে হবে। সেখানে প্রধান শিক্ষককে উল্লেখ করতে হবে যে তাঁর বিদ্যালয়ের কোন পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন আর বাকি নেই। আর বাকি থাকলে তা-ও স্পষ্ট ভাবে কত জনের তা উল্লেখ করতে হবে।
যাদবপুরের বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “পড়ুয়ারা সময় মতো রেজিস্ট্রেশন না করায় স্কুলগুলিকে ও পর্ষদকে বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয়। যাতে পড়ুয়ারা সঠিক সময় নাম নথিভুক্ত করেন ও সচেতনতা বাড়ে তাই এই পদক্ষেপ পর্ষদের।”
বেশ কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা জানিয়েছেন, স্কুলের তরফ থেকে সময়সীমার মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করার চেষ্টা করা হয়। অনেক সময় পড়ুয়ারা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় না। তার জন্য অতিরিক্ত ফি ধার্য করার অবধি ঠিক ছিল কিন্তু প্রধান শিক্ষকদের স্ট্যাম্প পেপারে মুচলেকা দেওয়ার এই নির্দেশিকা কেন? গ্রামের ক্ষেত্রে বহু পড়ুয়া সামাজিক ওঅর্থনৈতিক কারণে স্কুলে অনুপস্থিত থাকে সেই দিকটাও পর্ষদের বিবেচনা করা উচিত ছিল। এই ধরনের নির্দেশ যথেষ্ট অপমানজনক।