সংগৃহীত চিত্র।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের প্রথম বারের জন্য সাম্মানিক দেওয়া হবে বলে জানাল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ গত দু’বছর ধরে এই সাম্মানিকের ব্যবস্থা করলেও, সংসদের তরফে এমন কিছুই দেওয়া হত না। ২০২৫-এ পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সকলকে নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ দেওয়া হবে।
তবে, শিক্ষা সংসদের এই সান্মানিক নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এত দিন পর্যন্ত শুধুমাত্র ডিআই-দের টাকা দিত শিক্ষা সংসদ। নয়া বিজ্ঞপ্তিতে ডিআইদের প্রদেয় অর্থের অঙ্ক ২০ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। তার পরের ধাপে জয়েন্ট কনভেনাররা পাবেন ২৫০০ টাকা। দুই ক্ষেত্রে প্রদেয় অর্থের এই ব্যবধান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিভিন্ন সংগঠন-সহ প্রাক্তন জয়েন্ট কনভেনারদের বক্তব্য, ‘‘সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার জন্য যাঁরা পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সব থেকে বেশি যুক্ত থাকেন, তাঁদের যৎসামান্য সাম্মানিক দেওয়া হচ্ছে। আর ডিআইদের এত টাকা কেন?’’
প্রাক্তন জয়েন্ট কনভেনার সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “ডিআইদের কেন এত সান্মানিক দেওয়া হবে? পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সব থেকে বেশি যুক্ত থাকেন যাঁরা, তাঁদের যৎসামান্য সাম্মানিক। যাঁদের জন্য প্রথম বার চালু করল, তাঁরাই পরীক্ষার এক মাসের আগে থেকে ব্যবস্থা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার সমস্ত দায়িত্বভার সামলান। শিক্ষা সংসদের এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল।”
শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় একটি জেলায় কতগুলি সেন্টার, মূল কেন্দ্র ও কতগুলি সাব ভেনু হবে তা ঠিক করে দেন জয়েন্ট কনভেনারেরা। এমনকি পরীক্ষা পরিচালন সংক্রান্ত বৈঠক, পরীক্ষা চলাকালীন কোনও অভিযোগ করলে তা নিষ্পত্তি করার দায়িত্বতেও থাকেন তাঁরাই।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে এর আগে সাম্মানিক দেওয়া হত না। প্রথম বার আমরা তা চালু করলাম। পরীক্ষা সংক্রান্ত খরচ বাবদ শুধুমাত্র ডিআই-দের টাকা দেওয়া হত। পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সকলেই প্রচুর পরিশ্রম করেন, তাঁদের দাবিকে মান্যতা দিয়ে তাই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী, জয়েন্ট কনভেনরের অধীনে থাকা ডিএসি সাম্মানিক পাবেন ১৫০০ টাকা। পরীক্ষার ভেনুর দায়িত্বে থাকা কাউন্সিল নমিনি পাবেন ৬০০ টাকা। উচ্চ মাধ্যমিকে অনেকগুলি সেন্টার নিয়ে একজন সেন্টার ইনচার্জ থাকেন। তিনি পাবেন ১৫০০ টাকা। ভেনু সুপারভাইজ়ার পাবেন ১৫০০ টাকা। যাঁরা প্রশ্ন দেখভাল করবেন, তাঁরা পাবেন ৭০০ টাকা।
শিক্ষক সংগঠনের একাংশের বক্তব্য, পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব পালন করেন ইনভিজিলেটর, পরীক্ষক এবং প্রধান পরীক্ষকেরা। তাঁদের পারিশ্রমিক অবিলম্বে বৃদ্ধি করা হোক। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “যাঁদের পারিশ্রমিক বাড়ানো হয়েছে, তাঁরা মূলত সরকার মনোনীত এবং সরকার ঘনিষ্ঠ। কিন্তু যাঁরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে পরীক্ষা ব্যবস্থা চালান, তাঁদের পারিশ্রমিক বাড়ানোর ক্ষেত্রে সংসদের তৎপরতা দেখছি না। আমরা দাবি করছি, ইনভিজিলেটর, পরীক্ষক, প্রধান পরীক্ষক এবং নিরীক্ষকদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করা হোক।”