Courses for 12th pass Students

বন্যপ্রাণ এবং অরণ্য সংরক্ষণের প্রশিক্ষণ হাতেকলমে, কলকাতা চিড়িয়াখানায় ক্লাসের সুযোগ

অরণ্যের জীবনচক্র সংরক্ষণের সঙ্গে মানবজীবনের স্বাভাবিক জীবনযাপনের পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়টি শেখা এবং জানার আগ্রহ বৃদ্ধি করতেই এই কোর্সটি করানো হবে।

Advertisement
স্বর্ণালী তালুকদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৪ ১৪:৪৯
A representative image of Wild Life Conservation and Bird watching lessons given by experts.

বন্যপ্রাণ এবং অরণ্য সংরক্ষণের কাল্পনিক রূপ (ডানদিকে) এবং পড়ুয়াদের পাখি চেনাচ্ছেন এক বিশেষজ্ঞ (বাঁদিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

দৈনন্দিন জীবনে পরিবেশবান্ধব শব্দটি অজানা কিছু নয়। এর সঙ্গে অরণ্য এবং বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ ও তাদের রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টিও যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। এই সমস্ত বিষয়গুলিই হাতে কলমে শেখাতে তিন মাসের বিশেষ কোর্স করাবে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ় (সিইএস)। নেচার এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সোস্যাইটি (নিউজ)-এর যৌথ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আগ্রহীদের বন্যপ্রাণ এবং অরণ্য সংরক্ষণের বিভিন্ন বিষয় শেখানো হবে। কোর্সের নাম, ‘ফরেস্ট অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজ়ারভেশন’।

Advertisement

প্রসঙ্গত, সিইএস ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর কনটিউনিয়িং অ্যান্ড অ্যাডাল্ট এডুকেশন (সিসিএই)-এর অধীনে সমস্ত কোর্সগুলি করিয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট কোর্স সম্পর্কে সিসিএই-র কর্মী সৌভিক বক্সী জানিয়েছেন, দ্বাদশ উত্তীর্ণ থেকে শুরু করে যে কোনও বিষয়ে স্নাতক প্রার্থীরা এই কোর্সটি করার সুযোগ পাবেন। কোর্স সম্পূর্ণ হওয়ার পর অংশগ্রহণকারীদের শংসাপত্র দেওয়া হবে। তাঁদের কী কী বিষয় শেখানো হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সেই সম্পর্কিত একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

  • কী ভাবে বন্যপ্রাণীদের উপর নজরদারি চালাতে হয় এবং তাদের গতিবিধিতে কোনও সমস্যা থাকলে বিষয়টি কর্মরত বনকর্মীদের জানানোর পদ্ধতি।
  • বিভিন্ন ধরনের মাছ, স্তন্যপায়ী প্রাণীদের চেনা এবং তাদের জীবনচক্রের সঙ্গে পরিচিত হওয়া।
  • বন্যপ্রাণ এবং অরণ্য সংরক্ষণে প্রাসঙ্গিকতার লক্ষ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি।
  • পাখি দেখে চেনার পাঠ। কী ভাবে পাখি দেখতে হবে, কোথায় যেতে হবে, এই সংক্রান্ত বিষয়ে শেখানো হবে।
  • উন্নত মানের সামগ্রী ব্যবহারের মাধ্যমে হাতেকলমে প্রকৃতির সান্নিধ্যে থেকে কাজ শেখার সুযোগ।

সংশ্লিষ্ট কোর্সটি কী উদ্দেশে করানো হচ্ছে? সেই সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল নিউজ-এর যুগ্ম সম্পাদক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিএই-র ফ্যাকাল্টি মেম্বার অজন্তা দে-র কাছে। তিনি বলেন, “যাঁরা অরণ্য কিংবা প্রকৃতিকে পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট লেখেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে তেমন ভাবে জ্ঞান নেই, কিংবা পুঁথিগত বিদ্যাকে পেশাগত ভাবে ব্যবহারের দক্ষতা নেই। এই ধরনের সমস্যা দূর করতে এবং আগ্রহী পড়ুয়াদের ফিল্ড ওয়ার্কিংয়ে সাবলীল করে তুলতেই সংশ্লিষ্ট কোর্সটি ২০১৮ সালে শুরু করা হয়েছিল।”

কোর্স চলাকালীন ফিল্ড সার্ভে থেকে রিপোর্ট লেখা কিংবা প্রাণীদের গতিবিধির বিষয়ে বিবৃতি লেখার মতো ‘টাস্ক’ অংশগ্রহণকারীদের সম্পূর্ণ করতে হবে। তাই কিছু ক্লাস আলিপুর চিড়িয়াখানাতেও করানো হবে। এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার অধিকর্তা শুভঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, “প্রাথমিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই কোর্সের বিষয়ে কিছু কথা হয়েছে। গবেষণা এবং ট্রেনিংয়ের জন্য এমনিতেই বহু প্রার্থী উপস্থিত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্সের অংশগ্রহণকারীরাও যাতে শেখার সুযোগ পান, সে ব্যবস্থা থাকবে। তবে এনক্লোজ়ারের ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।”

আগ্রহীদের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে মূল বিজ্ঞপ্তিটি দেখে নিতে হবে। ফার্স্ট কাম ফার্স্ট সার্ভডের নিরিখে ভর্তি নেওয়া হবে। সর্বাধিক ৫০ জনকে নিয়ে শুরু হবে ক্লাস। সশরীরে কিংবা অনলাইনে ইমেল মারফত একটি ফর্ম পূরণ করে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। ৩১ জুলাই পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হবে। আবেদনমূল্য হিসাবে ২০০ টাকা জমা দিতে হবে। কোর্স ফি ৬,০০০ টাকা।

আরও পড়ুন
Advertisement