সংগৃহীত চিত্র।
চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি এ বার কি তিন বছরে! এই বিষয়টি সামনে আসার পরেই শিক্ষক মহলে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। জাতীয় শিক্ষানীতিকে মান্যতা দিয়ে দেশ জুড়ে উচ্চশিক্ষার যে বিধি মানা হচ্ছে, তা এ ভাবে পরিবর্তন হলে স্নাতকস্তরের পরিকাঠামোয় ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে মনে করছে শিক্ষক মহলের একাংশ।
সম্প্রতি ইউজিসির চেয়ারম্যান এম জগদীশ কুমার চেন্নাইয়ে এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, আইআইটি মাদ্রাজের অধিকর্তা ভি কামাকোটি নেতৃত্বাধীন কমিটি এই সংক্রান্ত সুপারিশ করেছিলেন। যাঁরা ‘ফাস্ট লার্নার’ বা মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী তাঁরা যাতে দ্রুত পাঠ্যক্রম শেষ করতে পারে এবং নিজেদের স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে পারে, তার প্রস্তাব দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে বলেও জানান তিনি।
এই বক্তব্যের পরেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকেই কি এই প্রক্রিয়া চালু হতে চলেছে? জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে এখন তিন বছরের বদলে স্নাতক স্তরের চার বছরের অনার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। যেখানে প্রত্যেক বছরের শেষে পড়ুয়ারা চাইলে পড়াশোনা থেকে বিরতি নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাদের ডিগ্রির মর্যাদা ভিন্ন হবে। যেমন, প্রথম বছর শেষে পড়াশোনায় ইতি টানলে তাঁকে এক বছরের সার্টিফিকেট কোর্স হিসাবে চিহ্নিতকরণ করা হবে। দ্বিতীয় বছর শেষ করলে ডিপ্লোমা কোর্সের সমতুল্য মর্যাদা মিলবে। তৃতীয় বছর শেষ হওয়ার পর তাকে ডিগ্রি কোর্স হিসাবে ধরা হবে এবং শেষ ও চতুর্থ বছর শেষ করার পর কোনও পড়ুয়ার নম্বর ৭৫ শতাংশের বেশি থাকলে তিনি স্নাতকোত্তরে এক বছরের কোর্স করার সুযোগ পাবেন। আর যদি কারর নম্বর ৭৫ শতাংশের কম থাকে তবে দু’বছরের স্নাতকোত্তর কোর্স করতে হবে। এর মধ্যে এক বছর রিসার্চ-এর জন্য ধার্য থাকবে।
এ প্রসঙ্গে চন্দননগর কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস সরকার বলেন, “চার বছরের অনার্স বা তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স, বিজ্ঞপ্তিতে নিয়ম স্পষ্ট করে উল্লেখ রয়েছে। কেউ যদি কোনও বক্তব্য রাখেন, তবে তা ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। তাই বিজ্ঞপ্তির আগে এ বিষয়ে আলোচনা মূল্যহীন।”
এ প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, “নানা অসুবিধার মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। তার উপর ইউজিসি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে নানা বিধি আরোপ করছে। এই ধরনের পরিবর্তন করতে গেলে সমস্ত রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন। পাশাপাশি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ান ইউনিভার্সিটিতেও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। তা না করে কোনও একটি সিদ্ধান্ত জনসমক্ষে বলে দেওয়া অবাঞ্ছনীয়।”