তীব্র দাবদাহে পড়ুয়াদের সুরক্ষিত রাখতে ঘণ্টায় ঘণ্টায় জল খেতে বলা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।
তীব্র দাবদাহের জেরে গরমের ছুটি এগিয়ে আনা হল। বৃহস্পতিবার রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে এই খবর জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজ্যর কালিম্পং, কার্শিয়াং এবং দার্জিলিং ব্যতীত অন্য সমস্ত জেলার সরকার এবং সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে ছুটি থাকবে। চলতি মাসের ২২ তারিখ থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি, বেসরকারি স্কুলগুলিকেও গরমের ছুটি এগিয়ে আনার কথা বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।
বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছিলেন, আগামী সোমবার, ২২ এপ্রিল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে গরমের ছুটি শুরু হয়ে যাবে। এর পরই বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষা দফতরের তরফে ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিষয়টি আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দেওয়া হল।
কিন্তু গরমের কারণে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্কুল বন্ধ রাখা বিষয়ে প্রশ্ন তুলছে শিক্ষামহলের একাংশ। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের দাবি, ‘‘২২ এপ্রিল থেকে যে ছুটি সরকার ঘোষণা করেছে, তা আমরা চাইনি। বরং আমাদের দাবি ছিল, তাপপ্রবাহের কারণে আগামী ২২শে এপ্রিল পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখা হোক। কিন্তু ২২ তারিখের পর যদি আবহাওয়ার উন্নতি ঘটে, তখন কী করা হবে? তাই এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ রইল।’’
অন্য দিকে, অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতির দাবি, ‘‘বিকল্প ব্যবস্থার বদলে গ্রীষ্মপ্রধান দেশে প্রতি বছর পরিকল্পনাহীন ভাবে দিনের পর দিন একতরফা ছুটি দেওয়া হচ্ছে। এতে পড়ুয়াদেরই ক্ষতি হচ্ছে। ফলে বেসরকারি স্কুলগুলিতে ভর্তি হওয়ার ঝোঁক বেড়েই চলেছে।’’
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হওয়ার কথা ৯ মে। ছুটি শেষ হত ২০ মে। অথচ বিগত কয়েক বছর ধরে মাত্রাতিরিক্ত তাপপ্রবাহের কারণে ওই ছুটি এগিয়ে আনা হয়েছে বার বার। এ বারও ছুটির সময় ৬ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত ধার্য করা হয়েছিল। অথচ ফের সেই সূচির পরিবর্তন হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী। তাঁর দাবি, ‘‘আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, অল্প দিনের ব্যবধান রেখে ছুটি ঘোষণা করা উচিত ছিল।’’
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য ছুটি দেওয়ার বদলে অনলাইনে ক্লাস করানোর প্রস্তাব পেশ করেছেন। তা বাস্তবায়িত হয় কি না, তা সময়ই বলবে।