সংগৃহীত চিত্র।
রাজ্য জুড়ে ৫০ শতাংশরও বেশি স্কুলে প্রধানশিক্ষক নেই। নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিধি তৈরি শেষ করা হয়েছে বহু বছর আগে। এখন মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদনের অপেক্ষায় শিক্ষা দফতর।
বুধবার শেষ হয়েছে রাজ্যের শীতকালীন বিধানসভার অধিবেশন। এই অধিবেশনে সংশোধিত বিল পেশ করা হল না সরকারের তরফ থেকে। স্কুলগুলি চলছে টিচার ইনচার্জের মাধ্যমে। যার ফলে প্রশাসনিক থেকে পরিকাঠামো উন্নয়ন— নানান জায়গায় অসুবিধায় পড়ছে স্কুলগুলি। স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, বর্তমানে সরকার এবং সরকার পোষিত স্কুল মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজারের বেশি শূন্যপদ রয়েছে। ছয় মাস আগে এই শূন্যপদের সংখ্যা ছিল চার হাজারের বেশি। ২০১৯ সালে শেষ নিয়োগের সময় প্রধানশিক্ষকের শূন্য আসন ছিল প্রায় আড়াই হাজার।
এ প্রসঙ্গে অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “দীর্ঘ দিন হয়ে গেল স্কুলগুলিতে প্রধানশিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে না। যে সমস্ত টিআইসিদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা বেশির ভাগ সরকারের লোক। বিভিন্ন সময় টিচার ইনচার্জের পদ নিয়ে হাতাহাতির অভিযোগ আসছে স্কুলগুলি থেকে। অবিলম্বে প্রধানশিক্ষক নিয়োগ করা উচিত।”
২০২৩ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশন স্বচ্ছ নিয়োগের জন্য বিধি তৈরি করে স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে পাঠিয়েছিল। সেখানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়। সূত্রের খবর, প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হবে ওএমআর শিটের মাধ্যমে। প্রত্যেক পদপ্রার্থীকে ওএমআর শিটের ‘ডুপ্লিকেট কপি’ দেওয়া হবে। এ ছাড়া, নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে কমিশনের তরফ থেকে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “প্রধানশিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কোনও আইনি জটিলতা না থাকলেও সরকার ইচ্ছে করেই নিয়োগের ব্যাপারে উৎসাহ দেখাচ্ছে না। প্রায় পাঁচ হাজার স্কুলে প্রধানশিক্ষক নেই। সেগুলোতে শাসকদলের শিক্ষকদের টিআইসি হিসাবে বসিয়ে চালানো হচ্ছে। শুনেছি, নবান্নের জন্য এই নিয়োগ আটকে আছে। শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকাও আশাব্যঞ্জক নয়।”
বিকাশ ভবনের সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানশিক্ষক নিয়োগের ফাইল পুনরায় সংশোধন করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ক্যাবিনেটের অনুমতির জন্য। এখনও পর্যন্ত সেই অনুমোদন পাওয়া যায়নি। সেখানে অনুমোদন পেলে তা যাবে রাজ্যপালের কাছে। তার পর তা বিধানসভায় পেশ করা হবে।
শিক্ষা দফতরের এক উচ্চপদস্থের আধিকারিক জানিয়েছেন, “সেপ্টেম্বর মাসে আমরা অনুমোদনের জন্য যখন খোঁজ খবর নিই, শূন্য আসনের সংখ্যা ছিল ৫৬০০ মতো। এই ক’দিনে আরও বেশ কয়েক জন অবসর নিয়েছেন। সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।”