প্রতীকী চিত্র।
‘ইউনিফাইড ডিসট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন প্লাস’ পোর্টালের মাধ্যমে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে চিহ্নিত করতে চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে ১১ ডিজিটের ‘ইউনিক আইডিন্টিফিকেশন’ নম্বর বা ‘পার্মানেন্ট এডুকেশন’ নম্বর(পেন) চালু করতে চলেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। জাতীয় শিক্ষানীতিতে এই বিশেষ ‘পেন’-এর কথা উল্লেখ করা আছে। এ বার রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরও ২০২৪ -২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ‘পেন’ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে চলেছে।
শিক্ষা দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, ‘পেন’-এর বাস্তবায়ন হলে পড়ুয়াদের একই স্কুল থেকে অন্য স্কুলের স্থানান্তরের প্রক্রিয়া অনেকটাই সরল হয়ে যাবে। বহু সময়ে দেখা গিয়েছে ছাত্রছাত্রীরা তাদের স্কুল পরিবর্তন করে। বিশেষত প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরে নতুন স্কুলে স্থানান্তরের বিষয়টা অনেকটাই জটিল হয়ে পড়ে। এই নতুন প্রক্রিয়ায় তা সহজ হয়ে যাবে বলেই ধারণা রাজ্য সরকারের।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, বেশির ভাগ স্কুল এই স্থানান্তরের সময়ে শংসাপত্র, জাত এবং জন্মের নথিগুলির উপর জোর দেন। এগুলি জোগাড় করতে বিভিন্ন সময়ে অভিভাবকেরা সমস্যায় পড়তেন এবং তার জেরে স্কুল বদলের প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট পরিমাণে দেরি হতো। শিক্ষার্থীদের স্কুল স্থানান্তর সুষ্ঠু এবং নিশ্চিত করতে তাই একটি বিশেষ দল গঠন করার চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে শিক্ষা দফতর।
এ প্রসঙ্গে নারায়ণ দাস বাঙুর মাল্টিপারপাসের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “বাংলার শিক্ষা পোর্টালে প্রত্যেক পড়ুয়ার একটি করে আইডি রয়েছে। নতুন করে এই ধরনের ইউনিকোড দিয়ে আর কী নতুন পাওয়া যাবে? বরং এতে ছাত্র-ছাত্রী এবং প্রধান শিক্ষকদের বিভ্রান্তি বাড়বে।”
এ প্রসঙ্গে শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যের বাংলা শিক্ষা পোর্টালের মাধ্যমে ভোকেশনাল স্নাতক, অঙ্গনওয়াড়ি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে পড়ুয়াদের এই ভাবে ইউনিক আইডির মাধ্যমে চিহ্নিতকরণের ব্যবস্থা রয়েছে। কেন্দ্রের ‘পেন’ বাংলা শিক্ষা পোর্টালের সঙ্গে যুক্ত করা থাকলে রাজ্যের স্কুলগুলো এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা তা দেখতে পাবেন।
এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “কেন্দ্রের শিক্ষানীতি অনুযায়ী দেশের সব ছাত্র ছাত্রীকে একটি নির্দিষ্ট আইডি দিচ্ছে, যার পোশাকি নাম ‘পেন’। এতে কী লাভ বা ক্ষতি হবে, তা ভবিষ্যৎ বলবে। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন, এই সরকার বিধানসভায় আইন পাশ করে কেন্দ্রের শিক্ষানীতি বিরোধী বিকল্প শিক্ষা নীতি তৈরি করেছে। কথায় কথায় শিক্ষামন্ত্রী কেন্দ্রের শিক্ষা নীতির সমালোচনা করেন। অথচ কেন্দ্রের প্রায় সব কিছুই মেনে নিচ্ছে রাজ্য। তাহলে রাজ্য সরকারের এই কেন্দ্র বিরোধিতা স্রেফ লোক দেখানো নয় কি!”
শিক্ষা দফতরের আধিকারিক জানান, এত দিন কেউ পশ্চিমবঙ্গের বাইরে পড়তে গেলে বাংলা শিক্ষা পোর্টাল থেকে সেই পড়ুয়াকে শনাক্ত করা যেত না। ‘পেন’-এর মাধ্যমে এ বার থেকে তা সহজেই করা যাবে। তাই বাংলা শিক্ষা পোর্টালে এই ‘পেন’ এর নম্বর সংযুক্তিকরণের কাজ শুরু করা হয়েছে।