WBBSE Madhyamik Result 2023

বাবা মৃত, মা নিরুদ্দেশ, মাধ্যমিকে ৯৩% পেল নদিয়ার বীণা

বীণা দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তেই হারিয়েছে বাবাকে। পাঁচ বছর হল মা-ও নিরুদ্দেশ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৩ ১২:৫৮
মাঝে বীণা দাস। পাশে তার দিদিরা।

মাঝে বীণা দাস। পাশে তার দিদিরা। নিজস্ব চিত্র।

ছোটবেলাতেই বাবাকে হারিয়েছে। মা-ও কোথায় রয়েছেন জানা নেই। বাবা-মায়ের শূন্যতা নিয়েই মাধ্যমিকে ৯৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছে বীণা।

চলতি বছর বীণা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল কাঁঠালবেরিয়া হরকুমার বিদ্যানিকেতন থেকে। বাড়ি নদিয়ার নাকাশিপাড়া ব্লকের বেথুয়াডহরি ছাড়িয়ে। অভিভাবকহীন অবস্থা দমিয়ে রাখতে পারেনি বীণার ইচ্ছাশক্তিকে। ছোট থেকেই মেধাবী পড়ুয়া সে। বাড়িতে নিজের বলতে দুই দিদি। রিনা ও সুপর্ণা। বোনের এমন রেজাল্টে খুশি হলেও আক্ষেপ একটাই। এর পর আর বোনকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ানোর ক্ষমতা তাঁদের নেই। তবে, কলা বিভাগ নিয়ে পড়লে বোনের পড়াশোনায় কখনও প্রতিকূলতার আঁচ আসতে না দেওয়া নিয়ে বদ্ধপরিকর বীণার মেজদি ও বড়দি।‌

Advertisement

বীণা দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তে পড়তেই হারিয়েছে বাবাকে। পাঁচ বছর হল মা-ও নিরুদ্দেশ। অনেক চেষ্টা করেও মায়ের খোঁজ পাননি তিন বোন। মুখ ফিরিয়েছেন আত্মীয়স্বজনও। অভিভাবকহীন হওয়ার পর থেকেই তিন বোন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংসার সামলেছেন। পাশাপাশি নিজেদের পড়াশোনাও এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। বীণা বড় হয়ে শিক্ষক হতে চায়। বিশেষ কোনও পছন্দের বিষয় না থাকলেও পড়তে ভালবাসে সে। এখানেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্র। বাড়ির বড়দি রিনা দাসের টিউশনি আর হাতের কাজের উপার্জনেই কোনও রকমে দিন চলে। মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার সময়ও দিনে মাত্র ৪ ঘণ্টা পড়েছে। বাকি সময় সামলেছে বাড়ির কাজ। বীণার মাথার উপর বাবা-মায়ের জায়গায় এখন দিদিরাই রয়েছেন। আর্থিক অনটনের মধ্যেও মনে বিশ্বাস এবং ইচ্ছার জোরে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নে এগিয়ে চলেছে নদিয়ার বীণা দাস।

Advertisement
আরও পড়ুন