প্রতীকী ছবি
ছোটবেলায় চিকিৎসকের সেট নিয়ে খেলার সময় থেকেই মনে মনে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখে অনেকেই। সেই স্বপ্নকেই বাস্তব করার তাগিদে চলতে থাকে পড়াশোনা। তবে, দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করার পর চিকিৎসকের পেশায় যাওয়ার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন নিট প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশ করা। এক কথায় বলা যায় চিকিৎসক হওয়ার প্রথম ধাপ নিট পরীক্ষা। এই প্রতিবেদনে নিট পরীক্ষার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হল।
নিট (ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট) পরীক্ষা কী?
এমবিবিএস, বিডিএস কোর্সে পড়ার জন্য নিট পরীক্ষা পাশ করা বাধ্যতামূলক। ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট বা নিট সর্বভারতীয় স্তরে আয়োজন করে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)। প্রতি বছর কমপক্ষে ৪৭৯টি কলেজে ভর্তির জন্য সর্বভারতীয় স্তরে এই প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয়।
নিটে বসতে কী কী যোগ্যতা প্রয়োজন:
নিট –এ বসতে হলে প্রার্থীকে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা এবং জীববিদ্যা বিষয়গুলি থাকা বাধ্যতামূলক। একই সঙ্গে ওই বিষয়গুলিতে ন্যূনতম ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ নম্বর না থাকলে নিট-এ বসার সুযোগ দেওয়া হয় না।
নিটে বসার নূন্যতম বয়স:
নিট পরীক্ষায় বসার জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ১৭ বছর হতে হবে। সে ক্ষেত্রে ২০০৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে প্রার্থীর জন্ম তারিখ হতে হবে। এই পরীক্ষায় বসার বয়সের ঊর্ধ্বসীমা নেই।
কোন কোন ভাষায় নিট দেওয়া যায়:
নিট-এ বসতে ইংরেজিতে দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। তবে, ইংরেজি ছাড়াও হিন্দি-সহ আরও ১১টি ভাষায় দেওয়া যায় নিট পরীক্ষা। বাংলা, অসমিয়া, গুজরাটি, মালয়ালাম, কন্নড়, মরাঠি, ওড়িয়া, তামিল, তেলুগু, উর্দু এবং পঞ্জাবি ভাষাতেও নিট-এ অংশগ্রহণ করা যায়।
নিট–এর ফি কত?
সাধারণত একটি নির্দিষ্ট মূল্যই নির্ধারিত থাকে নিট ফর্ম ফিল-আপ করার জন্য। নিচে বিস্তারিত উল্লেখ করা হল কোন পরীক্ষার ক্ষেত্রে কত টাকা দিতে হয়।
নিট কোন সময় হয়:
সারা বছরে একবারই নিট-এর আয়োজন করা হয়। বছরের মাঝামাঝি জুলাই মাসে সাধারণত এই প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয়।
আবেদন করার সময়:
যদি জুলাই মাসে পরীক্ষা হবে ঠিক হয়, তা হলে ঠিক তার তিন মাস আগে থেকে আবেদনের ফর্ম দেওয়া শুরু হয় থাকে। একমাস দেওয়া হয় ফর্ম। তবে, এই দিন ক্ষণ পরিবর্তনও হতে পারে।
নিটের ফি কোন ডিজিটাল মাধ্যমে জমা দেওয়া যায়:
নিট প্রবেশিকা পরীক্ষার ফর্ম অনলাইনের মাধ্যমেই ছাড়া হয়। এবং সেক্ষেত্রে ফর্মের পেমেন্ট করা যায় ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, নেট ব্যাঙ্কিং, ইউপিআই এবং এটিএম এর মাধ্যমে।
নিট-এর ফর্ম ফিল-আপের জন্য কী কী নথি প্রয়োজন:
নিট প্রবেশিকা পরীক্ষার ফর্ম ফিল-আপের সময় নিম্নলিখিত নথিগুলি স্ক্যান করে জেপিজি বা পিডিএফ করে আপলোড করতে হয়। নিচে কী কী তথ্যের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বিস্তারিত দেওয়া হল:
ভারতের মেডিক্যাল বিভাগে ক’টা আসন রয়েছে:
এমবিবিএস এর আসন সংখ্যা ৮৩,০৭৫।
বিডিএস এর আসন ২৮,৫৯০।
আয়ুষের আসন ৫২,৭২০।
এমস-এ আসন রয়েছে ১২০৫ টি।
জিপমার-এ আসন রয়েছে ২০০ টি।
যদিও এই আসনগুলি প্রতি বছরই চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে থাকে।
নিটে বসার জন্য কী ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন:
সাধারণত দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ের থেকেই প্রশ্ন করা হয় নিটে। ৮০০ নম্বরের এমসিকিউ নির্ভর প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়। ঠিক হলে +৪ এবং ভুল হলে -১ নম্বর কাটা হয়। যে হেতু এই পরীক্ষায় নেগেটিভ মার্ক রয়েছে তাই অতি অবশ্যই খুব ভাল প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে নিট পরীক্ষায় বসার জন্য।
নিচে প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল:
সিলেবাস সম্বন্ধে খুব ভাল ভাবে অবগত থাকতে হবে। সিলেবাসের খুঁটিনাটি রপ্ত করে নিতে হবে। নিটের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্য বইয়ের বাইরে গিয়েও আরও বিভিন্ন বই পড়া প্রয়োজন। যে হেতু এই পরীক্ষা এমসিকিউ নির্ভর তাই কোথায় সিলেবাসের কোথায় কী রয়েছে তার সম্পূর্ণ তথ্য ভাল করে রপ্ত করতে হবে। সম্ভব হলে প্রস্তুতির একটি নোটস তৈরি করে নেওয়া ভাল।