Education Parikrama

শারদ উপহারে বস্ত্র, জলদাপাড়াকে গ্রামীণ মডেল করতে উদ্যোগী শিক্ষক-ছাত্ররা

পুজোয় মানেই রংবেরঙের জামাকাপড়, ঠাকুর দেখা ও দেদার আনন্দ। কিন্তু সমস্ত শিশুর ভাগ্যে কি সেই সুখ থাকে? এমন শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে প্রতি বছরই নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগ।

Advertisement
অরুণাভ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৪৫
পুজো উপলক্ষে জলদাপাড়া গ্রামে বস্ত্র বিতরণ।

পুজো উপলক্ষে জলদাপাড়া গ্রামে বস্ত্র বিতরণ। নিজস্ব চিত্র।

আজ, বুধবার মহালয়া। দেবীপক্ষের শুরুতে আলিপুরদুয়ারের দুঃস্থ শিশুদের পাশে দাঁড়াল মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগ। পুজোর আগে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হল এক টুকরো খুশি। পাশাপাশি, জলদাপাড়া গ্রামকে গ্রামীণ পর্যটনের মডেল করতে উদ্যোগী হয়েছেন বিভাগীয় অধ্যাপক বিশ্বজিৎ দাস ও ছাত্রছাত্রীরা। সঙ্গে ছিলেন বেশ কয়েক জন প্রাক্তনীও।

Advertisement

পুজোয় মানেই রংবেরঙের জামাকাপড়, ঠাকুর দেখা ও দেদার আনন্দ। কিন্তু সমস্ত শিশুর ভাগ্যে কি সেই সুখ থাকে? এমন শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে প্রতি বছরই নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগ। ১৪তম বর্ষে তাদের গন্তব্য ছিল আলিপুরদুয়ারের উত্তরে ভুটান সীমান্তের ছোট্ট গ্রাম জলদাপাড়া।

পুজো উপলক্ষে জলদাপাড়া গ্রামে বস্ত্র বিতরণ।

পুজো উপলক্ষে জলদাপাড়া গ্রামে বস্ত্র বিতরণ। নিজস্ব চিত্র।

শহর থেকে ঢের দূরে সেখানকার গ্রামে নেই আধুনিকতার লেশমাত্র। নিত্য অনটনে পুজোর খুশিও তাই অধরাই থাকে। এ বার তাই শারদ-উপহার হিসেবে গ্রামের বাসিন্দা আশা, নীলিমা, লুইসের মতো ৩০০ শিশুর হাতে নতুন জামাকাপড় তুলে দেওয়া হল। এ ছাড়া, ১০০ জন মহিলাকে দেওয়া হল নতুন শাড়ি। শুধু তাই নয়, সকলকে পাত পেড়ে খাওয়ানো হয়েছে মাংস ভাত।

পুজো উপলক্ষে জলদাপাড়া গ্রামে বস্ত্র বিতরণ।

পুজো উপলক্ষে জলদাপাড়া গ্রামে বস্ত্র বিতরণ। নিজস্ব চিত্র।

বিভাগীয় প্রধান বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “১৩ বছর আগে এই উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জায়গায় এই বস্ত্র বিতরণ করা হতো। ধীরে ধীরে বাংলায় সমস্ত জেলায় শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে আমরা সফল হয়েছি।”

তবে শুধু পোশাক বিতরণ নয়, উত্তরবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে কী ভাবে এই গ্রামকে আনা যায়, সে নিয়েও এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন পড়ুয়া এবং অধ্যাপকরা। যাতে উত্তরবঙ্গের এই ছোট্ট গ্রামটি মডেল গ্রাম হিসেবে আগামী দিনে বাংলায় পরিচিত পায়।

জলদাপাড়া আসলে হল এই গ্রামের নাম। পরে গ্রামের নামানুসারেই পাশের বনাঞ্চলের নাম হয় জলদাপাড়া। সেই বনাঞ্চল অভয়ারণ্যের মর্যাদা পায়। ২০১২ সালে ২১৬ বর্গ কিলোমিটার বনাঞ্চলকে জাতীয় উদ্যানের মর্যাদাও দেওয়া হয়। একশৃঙ্গ গণ্ডারের বিচরণভূমি হিসেবে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান বিশ্ববিখ্যাত হয়েছে। দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক এখানে আসেন।

বনাঞ্চল জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা পেলেও উন্নয়নের লেশ এখনও এসে পৌঁছয়নি জলদাপাড়ার গ্রামটিতে। গ্রামের জনসংখ্যা ১৭০০ মতো।রাজবংশী, নেপালি, আদিবাসী-সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের ২৫ জন ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপক ও প্রাক্তনীরা এই মানুষদের আগমনীর আনন্দের পাশাপাশি উন্নয়নেরও বার্তা দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement