Last Minute Tips for Madhyamik 2024

হাতে আর কয়েক ঘণ্টা! পরীক্ষার দুশ্চিন্তা দূর করে কী ভাবে ভাল ফল সম্ভব? জানালেন মনোবিদ

পরীক্ষার দুশ্চিন্তা থেকে মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটে। যে বিষয়গুলি এতদিন ধরে পড়াশোনার পর প্রায় মনে গেঁথে গেছিল, সেগুলিও ঠিক করে মনে পড়ে না অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, স্ট্রেস বা ‘অ্যাংজাইটি’-র কারণে।

Advertisement
প্রিয়াঙ্কা দাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৪৭
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

হাতে আর চব্বিশ ঘণ্টাও নেই। আক্ষরিক অর্থেই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। সকলেই প্রায় প্রস্তুত আগামী ১১ দিনের ম্যারাথন পরীক্ষার জন্য। তবে প্রস্তুতিতে ফাঁক না থাকলেও বহু পরীক্ষার্থীর মনেই চিন্তা এবং আশঙ্কার মেঘ জমা হয় পরীক্ষা নিয়ে। শেষ কয়েক ঘণ্টায় যা অনেকের ক্ষেত্রে মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় কী ভাবে? পরীক্ষার্থীদের জন্য তারই সমাধান বাতলে দিচ্ছেন মনোবিদ্যার শিক্ষিকা এবং মনোবিদ প্রিয়াঙ্কা দাস।

Advertisement

যে কোনও পরীক্ষার আগেই সামান্য টেনশন, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ আমরা প্রায় সকলেই করে থাকি। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না বলা বাহুল্য। সাধারণত পরীক্ষার্থীদের যে যে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, সেগুলি হল—

  • পরীক্ষার দুশ্চিন্তা থেকে মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটে। যে বিষয়গুলি এতদিন ধরে পড়াশোনার পর প্রায় মনে গেঁথে গেছিল, সেগুলিও ঠিক করে মনে পড়ে না অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, স্ট্রেস বা ‘অ্যাংজাইটি’-র কারণে। এ ছাড়া টেনশন থেকে বিরক্তি, রাগের মতো নেতিবাচক অনুভূতিও তৈরি হয়।
  • পরীক্ষার জন্য দুশ্চিন্তা থেকে আত্মবিশ্বাসেও প্রভাব পড়ে। আর আত্মবিশ্বাসের অভাব থেকে জানা বিষয়বস্তুর উত্তর লিখতে গিয়েও ভুল হয়ে যায়।
  • এ ছাড়া, মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটায় পরীক্ষার দিন উত্তরপত্রে ‘সিলি মিস্টেক’ বা ছোট ছোট ভুলের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

এই সমস্ত সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য তাই কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি—

  • প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হলেও পরীক্ষার আগের দিন আবারও পাঠ্য বিষয়গুলি ‘রিভিশন’ করব।
  • ‘রিভিশন’ করার সময় নতুন কোনও টপিক বা প্রশ্ন না পড়াই ভাল। এতে ‘রিভিশন’ -ও সঠিক ভাবে হবে না। নতুন বিষয় পড়তে গিয়ে অনেকটা সময়ও নষ্ট হয়।
  • যতটা সম্ভব রিল্যাক্সড বা শান্ত থাকা জরুরি। প্রয়োজনে নিজেকেই নিজে মনে করাতে হবে ‘রিল্যাক্স, রিল্যাক্স, সব ঠিক আছে’।
  • পরীক্ষার দিন পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে বন্ধুরা কে কী পড়েছে, সেই বিষয়গুলি আলোচনা না করাই ভাল। এতে কোনও বিষয় যদি না পড়া বা জানা থাকে, তা হলে অকারণ উদ্বেগ তৈরি হতে পারে।
  • প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর প্রথমেই তা ভাল করে পড়ে নিতে হবে। অনেক সময় দুশ্চিন্তার কারণে কিছু প্রশ্ন পড়েই প্রশ্নপত্র সোজা না কঠিন সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে পরীক্ষার্থীরা। আর তার ফলে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
  • প্রশ্নপত্রের যে প্রশ্নগুলি জানা বা খুব ভাল ভাবে তৈরি, সেগুলি দিয়ে পরীক্ষা শুরু করলে অনেকটাই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় পরীক্ষার্থীদের। যার ফলে ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই তারা গোটা পরীক্ষাটি দিতে পারে।
  • পরীক্ষার আগে বা পরীক্ষার সময় পরীক্ষার ফল কেমন হবে, কত শতাংশ নম্বর পেতে হবে, এই বিষয়গুলি ভেবে অযথা সময় নষ্ট করা উচিত নয়। তার বদলে নিজের যা পড়া বা জানা রয়েছে, সেগুলি পরীক্ষার খাতায় ভাল ভাবে লিখে আসার কথাই মাথায় রাখতে হবে। যা সহজেই ভাল নম্বর এনে দেবে।
  • পরীক্ষা দিয়ে বেরোনোর পর সেই পরীক্ষা নিয়ে ভাবা, বাড়ি ফিরে পরীক্ষার উত্তর মেলানো, কারও সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করা — এই অভ্যাসগুলি থেকেও নিজেকে দূরে রাখতে হবে। না হলে বাকি পরীক্ষাগুলির প্রস্তুতিতে তার প্রভাব পড়বে।
  • এই ১১ দিন ধরে পরীক্ষা চলাকালীন প্রস্তুতির ফাঁকে পরীক্ষার্থীরা গান শুনে, হাসির গল্প পড়ে, টিভি দেখে, ইতিবাচক চিন্তা করে, আনন্দের মুহূর্তের কথা মনে করে নিজেদের উদ্বেগ কমিয়ে ‘রিল্যাক্স’ করতে পারেন।
  • তবে এই সময়ে সমাজমাধ্যম বা মোবাইল ঘাটাঘাটি থেকে নিজেদের দূরে রাখতে হবে। না হলে মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটবে।
  • যতটা সম্ভব নেতিবাচক ঘটনা বা পরিস্থিতি এই সময়ে এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
  • এ ছাড়া পুষ্টিকর খাদ্যও এই সময়ে জরুরি। যে কোনওরকম জাঙ্ক ফুড থেকে নিজেদের দূরে রাখতে হবে।
  • রাত জেগে পড়ার অভ্যাস না থাকলেই ভাল। কেননা পর্যাপ্ত ঘুম না হলে পরীক্ষাকেন্দ্রে তার প্রভাব পড়বে।

সবশেষে, এটাই মাথায় রাখতে হবে এটি জীবনের প্রথম পরীক্ষা হলেও বিভীষিকার মতো নয়। মাথা ঠাণ্ডা রেখে সঠিক ভাবে উত্তর লিখে আসতে পারলে সাফল্য আসবেই।

আরও পড়ুন
Advertisement