সংগৃহীত চিত্র।
মিউচুয়াল ট্রান্সফার চালুর ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা নেই। সরকারকে এমনটাই জানাল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন। তা হলে কি নতুন বছরের শুরুতেই চালু হচ্ছে উৎসশ্রী পোর্টাল? শিক্ষা দফতরের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
আবেদন করেও দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে থমকে শিক্ষকদের ‘মিউচুয়াল ট্রান্সফার’ বা আপস-বদলি। অভিযোগ, শিক্ষা দফতরের অফিসে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মিউচুয়াল বদলি চাওয়া বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা। ৩১ ডিসেম্বর উৎসশ্রী পোর্টাল বন্ধের বিজ্ঞপ্তি রয়েছে সরকারের তরফ থেকে।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “এই মুহূর্তে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। জেনারেল ট্রান্সফার চালু হলে তাতে ব্যাঘাত করতে পারে। তবে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। সে কথা আমরা শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি।”
মূলত, ২০২২ সালে শিক্ষক বদলির পোর্টাল বন্ধ রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তার পর থেকে পোর্টাল খোলার ইচ্ছে পর্যন্ত দেখাচ্ছে না শিক্ষা দফতর, এমনটাই অভিযোগ শিক্ষক মহলের। বদলির পোর্টাল বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রায় ২২০০-এর বেশি বদলির আবেদন থমকে রয়েছে জেনারেল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে। একই ভাবে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রেও আবেদন জমা পড়ে রয়েছে। শিক্ষক মহলের একাংশের প্রশ্ন, যদি নিয়োগের সমস্যার জন্যই এই বদলির পোর্টাল বন্ধ রাখা হয়, তবে উচ্চ প্রাথমিকের ক্ষেত্রে নিয়োগের শূন্য আসন যেহেতু ইতিমধ্যেই স্থির করা হয়ে গিয়েছে, তা হলে ট্রান্সফার চালুর ক্ষেত্রে কী সমস্যা? মিউচুয়াল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে এই ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা নেই। তা হলে কেন তা চালু করা হচ্ছে না?
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “মিউচুয়াল ট্রান্সফার চালু হলে দূরত্ব যন্ত্রণায় যাঁরা ভুগছেন, অন্তত তাঁদের কিছুটা সুরাহা হয়। আমরা চাই অবিলম্বে সরকার তা চালু করুক।”
যদিও এ বিষয়ে শিক্ষা দফতরের ব্যাখ্যা, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের মাধ্যমে নিয়োগ চলছে। বদলির ফলে যাতে কোনও সমস্যা না তৈরি হয় তাই আপাতত বন্ধ রাখা হচ্ছে পোর্টাল।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “গত প্রায় আড়াই বছর ধরে উৎসশ্রী পোর্টাল বন্ধ আছে। এর ফলে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মতো শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের বাড়ির কাছে বদলি হয়ে আসার আশা নিরাশায় পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রাইমারি বোর্ড ও এসএসসি যে প্রস্তাব দিয়েছে শিক্ষা দফতরের তা মেনে নেওয়া উচিত এবং অবিলম্বে মিউচুয়াল ট্রান্সফার চালু করা উচিত।”
শিক্ষক মহলের একটি অংশ মনে করছে, এই সমস্যার সমাধানে শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ জরুরি। তা না হলে শিক্ষকদের মধ্যে বদলি নিয়ে ক্ষোভ বৃদ্ধি পেতেই থাকবে উত্তরোত্তর। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেন, “আপস-বদলির ক্ষেত্রে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। আমরা এ বিষয়ে যা জানানোর সরকারকে জানিয়েছি। ট্রান্সফার চালু করার সিদ্ধান্ত সরকারের। তারা চালু করলে দ্রুত ট্রান্সফার সম্পূর্ণ করা হবে।”