London Diary

লন্ডন ডায়েরি: ক্যামডেন-এর নতুন আবাসনে নুরের নাম 

টিপু সুলতানের বংশধর নুর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ক্যামডেনের ব্লুমসবেরিতে তাঁর মা আর বোনের সঙ্গে থাকতেন। গুপ্তচর হিসাবে নিযুক্ত নুরকে রেডিয়ো-অপারেটর সাজিয়ে ফ্রান্সে পাঠানো হয়।

Advertisement
শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩২
london diary

লন্ডন ডায়েরি। —ফাইল চিত্র।

চলতি বছরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীরাঙ্গনা নুর ইনায়েত খানের ১১০তম জন্মবার্ষিকী। নর্থ লন্ডনের ক্যামডেন-এর বাসিন্দারা নতুন একটি হাউজ়িং ব্লককে তাঁর নামে নামাঙ্কিত করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এলাকার ইতিহাসপ্রসিদ্ধ বাসিন্দাদের তালিকা থেকে ভোট দিয়ে নুরকে বেছে নিয়েছেন বাসিন্দারা। টিপু সুলতানের বংশধর নুর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ক্যামডেনের ব্লুমসবেরিতে তাঁর মা আর বোনের সঙ্গে থাকতেন। গুপ্তচর হিসাবে নিযুক্ত নুরকে রেডিয়ো-অপারেটর সাজিয়ে ফ্রান্সে পাঠানো হয়। ১৯৪৩-এ, গর্ডন স্কোয়্যারের কাছে ৪, ট্যাভিটন স্ট্রিটের বাড়িটি থেকেই তিনি বিপদযাত্রায় বেরিয়েছিলেন। ১৯৪৪-এর সেপ্টেম্বরে দাখাউ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে তাঁকে হত্যা করা হয়। সাহসিকতার জন্য তাঁকে মরণোত্তর জর্জ ক্রস (ব্রিটেনের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান) দেওয়া হয়। ২০১২-য় প্রিন্সেস অ্যান গর্ডন স্কোয়্যারে নুরের একটি আবক্ষ মূর্তি উন্মোচিত করেন। ২০২০-তে তাঁর সম্মানে ৪, ট্যাভিটন স্ট্রিটের বাড়ির বাইরে নীল প্লাক বসানো হয়। নুরের স্মৃতিসৌধের কাছে একটি ‘কিউআর’ কোড রেখেছে ক্যামডেন কাউন্সিল। এটির মাধ্যমে মানুষ অনলাইনে ‘পিপলস মিউজ়িয়ম অব ক্যামডেন’-এর সাইটে নুরের বিষয়ে আরও জানতে পারবেন। ‘নুর ইনায়েত খান হাউস’-এর নামকরণের অনুষ্ঠানে ছিলেন এলাকার কাউন্সিলর ও স্থানীয় মানুষেরা। এসেছিলেন পার্লামেন্টে ক্যামডেন বরোর প্রতিনিধি, লেবার পার্টির নেতা কায়ার স্টার্মার।

Advertisement
শ্রদ্ধা: নুরের নামে নতুন আবাসন।

শ্রদ্ধা: নুরের নামে নতুন আবাসন।

ঋষির রসিকতা

২০২৪-এ ভোট আসছে ব্রিটেনে। ঋষি সুনক চাইছেন, ভোট তাঁর জন্য শুভসংবাদ নিয়ে আসুক। কারণ, তিনি ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে থাকতে পারবেন কি না, এই ভোটই তা স্থির করবে। এ দিকে, জনমত সমীক্ষায় লেবার পার্টির থেকে ২০ পয়েন্টে পিছিয়ে আছেন কনজ়ার্ভেটিভরা। সুনক নিজের রসিক দিকটি তুলে ধরে ভোটারদের মন ভোলাতে চাইছেন। জনপ্রিয় সিনেমা হোম অ্যালোন-এর আদলে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে একটি ছোট্ট ভিডিয়ো তুলেছেন, বড়দিনে মুক্তি পেয়েছে সেটি। হোম অ্যালোন-এ বড়দিনের ছুটিতে সবাই বেড়াতে চলে যায় আর ছোট্ট কেভিন ম্যাকালিস্টার বাড়িতে ভুল করে একা থেকে যায়। এখানে দেখা যাচ্ছে, ডাউনিং স্ট্রিটের ফাঁকা, অন্ধকার অফিস। সবাই ছুটিতে চলে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলছেন, “আমি কি এখানে একা?” কেভিনের মতো তিনিও গোটা বাড়িতে একলা থাকার মজা উপভোগ করছেন। নরম পানীয়ের ক্যান পর পর সাজিয়ে ডাউনিং স্ট্রিট করিডরকে বোলিং লেন বানিয়ে ক্যানগুলি ফেলছেন। (সুনক নাকি এই পানীয়ের ভক্ত)। এলফ সিনেমা চালিয়ে এক বাটি স্প্যাগেটি খাচ্ছেন। একটা কাঠি লজেন্সকে মোমবাতির আগুনে সেঁকছেন, ডাউনিং স্ট্রিটের বিড়াল ল্যারিকে আদর করছেন। এমন সময় ফোনের আওয়াজ। প্রেস অফিসে প্রধানমন্ত্রীই ফোনটি তুলে অম্লানবদনে বলছেন, “ওহে হ্যারি, রং নম্বরে ফোন করেছ।” তার পর আবার মজা শুরু। সিনেমা শেষ। ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল। অনেকে জিজ্ঞেস করছেন, সত্যি নাকি? কেউ বলছেন, ঝুটো ভিডিয়ো। আর অনেকেরই প্রশ্ন, ওই বিশেষ পানীয় সংস্থাই স্পনসর করেছে না তো?

ডেভন-এ বাড়িছে সে

নর্দাম্বারল্যান্ড-এর যে বিখ্যাত সিকামোর গাছটি গত সেপ্টেম্বরে দুষ্কৃতীরা কেটে দেওয়ায় দেশ শোকে ডুবে গিয়েছিল, সেটি নিয়ে এখনও আশা রয়েছে। গাছটি ২০০ বছরেরও বেশি দাঁড়িয়েছিল হেড্রিয়ান’স ওয়াল-এর ফাঁকে, সারা বিশ্বের মানুষ দেখতে আসতেন, ছবি উঠত অজস্র। দেখা গিয়েছিল রবিনহুড: প্রিন্স অব থিভস সিনেমাতেও। গাছটি কাটা পড়ার পর অকুস্থলে দৌড়ে আসেন ন্যাশনাল ট্রাস্ট-এর গাছ বিশেষজ্ঞরা। এত দিনে তাঁরা জানিয়েছেন, গাছ থেকে সংগৃহীত কাটা অংশ ও বীজ থেকে অঙ্কুর দেখা দিয়েছে, নতুন বংশধরের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। ডেভন-এর এক গোপন জায়গায় ট্রাস্টের বিরল উদ্ভিদের বংশবিস্তারের নার্সারিতে চারাগুলিকে লালন করা হচ্ছে। বলা হয়েছে, প্রাণের লক্ষণ যথেষ্ট ইতিবাচক, ভবিষ্যতে গাছটির উত্তরসূরিরা ডালপালা মেলবে। পরের বছরই চারাগুলি বেড়ে উঠবে, তার পর নর্দাম্বারল্যান্ডের চার পাশে সেগুলি পুঁতে দেওয়া হবে।

ত্রাণ: সিকামোর গাছ, কাটা পড়ার আগে।

ত্রাণ: সিকামোর গাছ, কাটা পড়ার আগে।

দলবদল

নির্বাচনী প্রস্তুতিতে কায়ার স্টার্মারের জোর চমক। লেবার পার্টির নেতা তাঁর আইনি উপদেষ্টার দলে বরিস জনসনের প্রাক্তন স্ত্রী মারিনা হুইলারকে নিয়োগ করেছেন। চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত। হুইলার খ্যাতনামা আইনজীবী হলেও, জনসনের সঙ্গে অতিবাহিত বছরগুলিতে তিনিও কনজ়ার্ভেটিভ সমর্থক ছিলেন। বোঝাই যাচ্ছে, তিনি অবস্থান বদলেছেন এবং লেবারদের হয়ে প্রাক্তন স্বামীর দলের বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে প্রস্তত। তাঁর বাবা বিবিসির সাংবাদিক চার্লস হুইলার। মা দীপ সিংহ ছিলেন শিখ।

আরও পড়ুন
Advertisement