Book Review

চলচ্চিত্র চর্চার আন্দোলন, চারণকবির ডাক

গোটা চালচিত্রটি বুঝতে বা জানতে পড়তেই হবে চিদানন্দ দাশগুপ্ত মৃগাঙ্কশেখর রায় রাম হালদার প্রবোধকুমার মৈত্র শুভেন্দু দাশগুপ্ত হিরণ মিত্র প্রমুখের রচনা।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৩ ০৬:১১
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

ফিল্ম সোসাইটি আন্দোলনের উৎপত্তি বা ভিত্তি যে ইতিহাসবোধ থেকে, সেই ইতিহাসেরই ধারা নথিবদ্ধ করেছেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, সে চেষ্টা যে অসম্পূর্ণ তাও বলে রেখেছেন শুরুতে, “আন্দোলনে ভাটা পড়লে আমার লেখাও অসময়ে বন্ধ হয়ে যায়।” ফিল্ম সোসাইটির ইতিহাস জানতে শমীকবাবুর এ-প্রবন্ধ অবশ্যপাঠ্য। তেমনই অবশ্যপাঠ্য দেবীপ্রসাদ ঘোষের ‘ভারতের প্রথম সংগঠিত চলচ্চিত্র চর্চা’।

Advertisement

চিত্রভাবনা ফিল্ম সোসাইটি আন্দোলনের ৭৫ বছর

সম্পা: প্রেমেন্দ্র মজুমদার, অঞ্জন দাস মজুমদার

৫০০

ফেডারেন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব ইন্ডিয়া, পূর্বাঞ্চল

সিনেমা সংক্রান্ত সাংস্কৃতিক চেতনা ও মননের বিকাশই যে ফিল্ম সোসাইটির মূল লক্ষ্য তা এ-সঙ্কলনের মুখবন্ধেই কবুল করেছেন ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ় অব ইন্ডিয়া-র সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ ঘোষ, আর সে অভিপ্রায় লাগাতার বাস্তবায়িত করতে, ‘বলতে দ্বিধা নেই, একমাত্র কেরালা সরকারই অদ্যাবধি ফেডারেশনকে যথাযথ গুরুত্ব ও মর্যাদা দিয়ে চলেছে’, লিখেছেন সহ-সভাপতি প্রেমেন্দ্র মজুমদার। গোটা চালচিত্রটি বুঝতে বা জানতে পড়তেই হবে চিদানন্দ দাশগুপ্ত মৃগাঙ্কশেখর রায় রাম হালদার প্রবোধকুমার মৈত্র শুভেন্দু দাশগুপ্ত হিরণ মিত্র প্রমুখের রচনা। ইরাবান বসু রায় ও মিহির সেনগুপ্তের চলচ্চিত্র চর্চার পত্রিকা নিয়ে সমালোচনা। আছে অতনু ঘোষ শেখর দাশের মতো ছবি-করিয়েদেরও আলোচনা; পূর্বাঞ্চলীয় ফিল্ম সোসাইটি ও তাদের পত্রপত্রিকার তালিকা। নতুন প্রজন্মের যাঁরা সিনেমার সিরিয়াস চর্চায় আগ্রহী, তাঁদের জন্য সঙ্কলনটি প্রয়োজনীয় ও জরুরি।

চারণকবি মুকুন্দদাস: জীবনসাধন ও গীতসম্ভার

বদিউর রহমান

৪০০.০০

নয়া উদ্যোগ

‘আয়রে বাঙ্গালী, আয় সবে আয়...’— যজ্ঞেশ্বর দে ওরফে চারণকবি মুকুন্দদাস এই আহ্বান জানিয়েছিলেন। মুকুন্দদাসের এই আহ্বান ছিল দেশের কাজের জন্য। দেশ তো বটেই, তাঁর জীবন ও সৃষ্টি সম্পর্কিত চর্চার ক্ষেত্রেও বাঙালি বোধ হয় এই আহ্বানকে মনে রেখেছে। জয়গুরু গোস্বামী, পুলক চন্দেরা মুকুন্দদাস ও তাঁর কাজকর্ম নিয়ে প্রায় পূর্ণাঙ্গ চর্চা করেছেন। সেই ধারাবাহিকতাতেই এ বার যুক্ত হল বদিউর রহমানের নামও। বইটি দু’টি পর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্বে মুকুন্দদাসের জীবন, তার অভিমুখটি লেখক বুঝতে চেয়েছেন পাঁচটি অধ্যায়ে। সেগুলিতে মুকুন্দদাসের জীবন আলোচনার পাশাপাশি বাংলা স্বদেশি গানে তাঁর ভূমিকা, তাঁর সমসাময়িক গীতিকবি, গানের বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি নিয়ে কথা বলেছেন লেখক। এই পর্বে ‘চারণ আন্দোলনের ইতিহাস সন্ধান’ শীর্ষক অধ্যায়টি বিশেষ কৃতিত্বের দাবি রাখে। কারণ, চারণ কী, কেন ও তার সঙ্গে মুকুন্দদাস কোথায় লগ্ন, এটি স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। চারণ বিষয়টি নিয়ে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে কী ধারণা, বাংলাদেশেই বা তার বিকাশ কী ভাবে, এ সবও খুঁজতে চেয়েছেন লেখক। দ্বিতীয় পর্বটি মূলত ‘মুকুন্দদাসের গীতসম্ভার’-এর আরও একটি সঙ্কলন। এখানে ‘সমাজ’, ‘পল্লীসেবা’, ‘ব্রহ্মচারিণী’, ‘কর্ম্মক্ষেত্র’ শীর্ষক মুকুন্দের চারটি যাত্রাপালা এবং সেগুলির বাইরে থাকা গানগুলি সঙ্কলিত হয়েছে।

সাহিত্য়ের ইয়ারবুক: ঠিকানাপঞ্জি ২০২৩

সম্পা: বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য

৪০০.০০

পূর্বা

“কৃষ্ণধন দে/ পাঁচ-এর এক-এর এ/ পাঁচু খানসামা লেন/ গেলেই পাবেন।” বাংলা সবাক ছবির গোড়ার দিকের অন্যতম গীতিকার এ ভাবেই ছড়া কেটে নিজের ঠিকানা জানাতেন জিজ্ঞাসুজনকে, এ বইয়ের ভূমিকায় লিখেছেন সবিতেন্দ্রনাথ রায়। ছড়ার সে দিন নেই আর, ঠিকানার সঙ্গে লেখকের প্রয়োজনীয় তথ্যে জুড়েছে ল্যান্ডফোন মোবাইল ইমেল কত কিছু, এবং সবচেয়ে বড় কথা, এত সব মনে আর মাথায় রাখবে, সাধ্য কার! মুশকিল আসান সাহিত্যের ইয়ারবুক। জাহিরুল হাসান প্রতিষ্ঠিত এই ঠিকানাপঞ্জি-বইটি আড়াই দশক ধরে প্রকাশিত হয়ে আসছে, এবং বাঁচিয়ে আসছে বাংলা লেখক-পাঠক-প্রকাশক-সম্পাদক সমাজের প্রভূত পরিশ্রম। কে না জানে এই বইয়ে বরাবরই থাকে শিল্পী-সাহিত্যিকদের ঠিকানা, যোগাযোগের নম্বর, ইমেল— বর্ণানুক্রমে বিন্যস্ত; নামের পাশে সংক্ষিপ্ত কয়েকটি শব্দে লেখা পরিচিতিও কাজে দেয় বিস্তর: এক নামের একাধিক লেখকের ক্ষেত্রে বিশেষত। শুধু তা-ই নয়, প্রকাশক ও প্রায় সমস্ত পত্রপত্রিকা, গ্রন্থবিপণি ও সংস্থার যোগাযোগ-তথ্য, ওয়েবসাইট, বাংলাদেশের লেখক-প্রকাশক-বিপণির তালিকা আলাদা করে। আর অন্তিমে ইংরেজি মাস ধরে ধরে বাংলার সাহিত্যব্যক্তিত্বদের জন্ম ও প্রয়াণদিনের তথ্য— যারপরনাই কাজের।

আরও পড়ুন
Advertisement