—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এখনও সরাসরি শিল্পের তকমা না পেলেও, গত বারের বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে (বিজিবিএস) পর্যটনকে আলাদা একটি ক্ষেত্র হিসাবে তুলে ধরেছিল রাজ্য সরকার। নভেম্বরের আসন্ন বিজিবিএস-এও পর্যটন পৃথক গুরুত্ব পেতে চলেছে। এই অবস্থায় সর্বভারতীয় স্তরের পর্যটন সম্মেলনে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য। চলতি মাসের ২৯ তারিখ থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত ঔরঙ্গাবাদে হতে চলেছে ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুর অপারেটর্স’-এর সম্মেলন। সেখানে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের পাশাপাশি রাজ্যের পর্যটন দফতরের উপস্থিতিও থাকবে বলে খবর।
এত দিন অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গে ‘প্যাকেজ-ট্যুর’ বা নির্দিষ্ট সময় এবং খরচ বেঁধে পর্যটকদের কাছে ঘোরাফেরার বিকল্প তেমন সুলভ ছিল না। সূত্রের খবর, ঔরঙ্গাবাদের সম্মেলনে রাজ্যের পাহাড় থেকে সমুদ্র— সব পর্যটনকেন্দ্রের জন্য নির্দিষ্ট ‘প্যাকেজ-ট্যুর’ তুলে ধরার কথা পর্যটন দফতরের। অর্থাৎ, দার্জিলিং হোক বা সান্দাকফু, দিঘা-মন্দারমণি হোক বা সুন্দরবন— কী ভাবে, কত দিনের জন্য এবং কতটা খরচে ভ্রমণ করা সম্ভব, তার তথ্য পাবেন পর্যটকেরা। পর্যটন কেন্দ্রে পৌঁছনোর উপায়, থাকা-খাওয়া, ঘোরার ব্যবস্থা ইত্যাদি সবেরই স্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকার কথা তাতে।
‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুর অপারেটর্স’-এর রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ দত্তের কথায়, “২০১৯ সালের সম্মেলন পশ্চিমবঙ্গে হয়েছিল ১৭ বছর পরে। জি-২০ গোষ্ঠীর বৈঠককে বাদ দিলে সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় সম্মেলন। পর্যটন সংস্থাগুলির সামনে রাজ্যের সম্ভাবনাগুলি তুলে ধরার উপযুক্ত মঞ্চ এটি।”
প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, কোভিডের কয়েকটি বছর বাদ দিলে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হচ্ছে। রাজস্ব বৃদ্ধির ইঙ্গিতও রয়েছে সেখানে। তাই সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের মতে, দেশের জিডিপি-তে ৬.৫% এবং রাজ্যের জিএসডিপি-তে (রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন) পর্যটন ক্ষেত্রের অবদান প্রায় ১২%। প্রাক্-করোনাকালে এ রাজ্যে বছরে প্রায় ১৬ লক্ষ এবং তার মধ্যে অন্য রাজ্য থেকে কমবেশি ৯ লক্ষ পর্যটকদের আসার তথ্য নথিবদ্ধ হয়েছিল। পুরোদমে নির্দিষ্ট ‘প্যাকেজ-ট্যুর’ শুরু হয়ে গেলে তা আরও অনেক বাড়বে বলে আশা।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পর্যটন থেকে আয় এবং কর্মসংস্থানকে সামনে রেখে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। তার মধ্যে যেমন পর্যটন-গাইডের (পর্যটকদের ঘুরিয়ে দেখানো) সুনির্দিষ্ট নীতি রয়েছে, তেমনই রয়েছে দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসুদের চাহিদা পূরণে পর্যটন সংস্থাগুলিকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। তা ছাড়া, দুর্গাপুজো এবং পর্যটনের অন্যতম গন্তব্য হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার পরে এ রাজ্যে ঘোরার ব্যাপারে পর্যটকদের বাড়তি আকর্ষণ কাজ করতে পারে। সূত্রের খবর, আসন্ন পর্যটন সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ আলাদা ভাবে তাদের সম্ভাবনাগুলিকে যেমন তুলে ধরতে পারবে, তেমনই তাদের জন্য থাকবে পৃথক প্যাভেলিয়ন। তাই জাতীয় স্তরের ওই সম্মেলনকেই পাখির চোখ করা হচ্ছে বিজিবিএস-এর আগে।