—প্রতীকী ছবি।
মুদ্রাস্ফীতিতে জেরবার পাকিস্তান। ভেঙে পড়া অর্থনীতিতে ‘অক্সিজেন’ দিতে বড় সিদ্ধান্ত নিল ইসলামাবাদ। বড়দিনের মুখে ২০০ বেসিস পয়েন্ট সুদের হার কমিয়েছে পশ্চিমের প্রতিবেশী দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। ফলে সুদের হার ১৫ থেকে ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। ১৭ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার থেকেই নতুন নীতি কার্যকর করেছে শাহবাজ় শরিফ প্রশাসন।
সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর বৈঠকে বসেন পাক কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ‘স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান’-এর (এসবিপি) মুদ্রানীতি কমিটির সদস্যেরা। সেখানেই সুদের হার কমানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ১৯৭১ সালে এই দিনেই ভারতীয় ফৌজের কাছে হেরে আত্মসমর্পণ করেন ৯৩ হাজার পাক সেনা। পশ্চিমের প্রতিবেশী দেশ ভেঙে জন্ম নেয় নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশ। ৫৩ বছর পর সেই পরাজয় দিবসেই বৈঠক করলেন স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানের পদস্থ কর্তারা।
সোমবার সুদের হার কমানো নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে এসবিপি। সেখানে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্তের জেরে কমবে খাদ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার। গত বছরের (পড়ুন ২০২৩) নভেম্বর থেকে গ্যাসের উপর উচ্চ হারে শুল্ক নেওয়া হচ্ছে। ফলে আমজনতাকে যথেষ্ট চড়া দামে কিনতে হচ্ছে গ্যাস। সুদের হার কমার ফলে সে দিক থেকেও কিছুটা স্বস্তি পাবে সাধারণ মানুষ। উল্লেখ্য বর্তমানে পাকিস্তানের মুদ্রাস্ফীতির হার ৯.৭ শতাংশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফলে মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুতে ভোক্তা এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অস্থিরতা রয়েছে।
পাক মুদ্রানীতি কমিটি জানিয়েছে, এ বছরের অক্টোবরে দেশের ব্যাঙ্কগুলিতে উদ্বৃত্ত কারেন্ট অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে। দুর্বল আর্থিক অবস্থার মধ্যেও এই নিয়ে টানা তিন মাস উদ্বৃত্ত কারেন্ট অ্যাকাউন্টের তথ্য দিলেন তাঁরা। পাশাপাশি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ ১,২০০ কোটি ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান। ফলে আগামী দিনে সরকারি ঋণের পরিমাণ ইসলামাবাদ কিছুটা কমাতে পারবে বলে মনে করছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
পাক ব্যবসায়িক সংগঠনগুলি অবশ্য সুদের হারে ৪০০ থেকে ৫০০ বেসিস পয়েন্টের অব্যাহতি চেয়েছিল। এ ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করতে রাজি নয় এসবিপি। ধীরে ধীরে সুদের হার আরও কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন তাঁরা। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, চলতি আর্থিক বছরের (২০২৪-’২৫) শেষে সুদের হার একক সংখ্যায় বা দশের নীচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হবে পাক কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।