বিরোধীদের দাবি, দুর্নীতির সূত্রপাত ২০১৫-র মে মাসে। —ফাইল চিত্র।
মোদী জমানায় কয়লা খনি শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা হওয়া প্রায় ৩১৫ কোটি টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। সূত্রের খবর, আজ সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) বৈঠকে দলমত নির্বিশেষে বিষয়টির বিহিত চেয়েছেন সমস্ত সদস্য। স্বর চড়িয়েছেন তৃণমূল এবং কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা।
সূত্র জানাচ্ছে, তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ সৌগত রায় বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দুর্নীতির জেরে খনি শ্রমিকদের ৩১৫.৩৫ কোটি টাকা ক্ষতি হওয়ার জন্য। দলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের দাবি, বিষয়টি পাঠানো হোক কর্পোরেট মন্ত্রকের ‘সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস’ (এসএফআইও)-এ। খতিয়ে দেখা প্রয়োজন, কেলেঙ্কারির পিছনে কোনও উচ্চপদাধিকারী রয়েছেন কি না। যে বেসরকারি সংস্থায় পিএফের টাকা লগ্নি করা হয়েছিল, সেই দেওয়ান হাউসিং ফিনান্স কোঅপারেটিভের (ডিএইচএফএল) সঙ্গে কয়লা মন্ত্রকের আঁতাঁত আছে কি না, তারও তদন্ত জরুরি। বিশেষত সংস্থাটির বিরুদ্ধে যেহেতু একাধিক ব্যঙ্ক প্রতারণার মামলায় সিবিআই-ইডির তদন্ত চলছে। জানা গিয়েছে, বৈঠকে উপস্থিতি বিজেপি-র অনুরাগ ঠাকুর, জগদম্বিকা পাল, সুধাংশু ত্রিবেদী, ডিএমকে-র টি আর বালু, কংগ্রেসের শক্তি সিংহ গোয়েল, অমর সিংহ প্রমুখ সাংসদেরাও চেয়েছেন দুর্নীতির পিছনে কারা রয়েছেন তার পর্দা ফাঁস হোক।
বিরোধীদের দাবি, দুর্নীতির সূত্রপাত ২০১৫-র মে মাসে। মোদী সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তির সময়। কোল মাইনস প্রভি়ডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজ়েশন (সিএমপিএফও) পিএফের তহবিল থেকে ১৩৯০.২৫ কোটি টাকা লগ্নি করে ডিএইচএফএল-এর ঋণপত্রে। শর্ত ছিল, এর ৮৬৪ কোটি আগেই ভাঙিয়ে নেওয়া যাবে। ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারি-মার্চে বাজারে সংস্থাটির মূল্যায়ন তলানিতে ঠেকে। ভরাডুবি আঁচ করে সিএমপিএফও-কে তহবিলের লগ্নি পরিচালনায় যুক্ত আধিকারিকেরা (পোর্টফোলিও ম্যানেজার) বারবার পরামর্শ দেন দেরি না করে ওই ৮৬৪ কোটি তুলে নিতে। এই পরামর্শ অনুযায়ী সিএমপিএফও-র কমিশনার তাঁদের ট্রাস্ট বোর্ডের বৈঠক ডাকেন। বৈঠক হয়, কিন্তু বিষয়টি তোলাই হয় না। ওই বছরই জুনে সিএমপিএফও কয়লা মন্ত্রকের যুগ্ম সচিবকে অনুরোধ করেন বিষয়টি ট্রাস্ট বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে তুলতে। সময় গড়ায় অগস্ট পর্যন্ত। ক্ষতি বাড়তে থাকে পিএফ ফান্ড থেকে লগ্নি করা অর্থের। পরে যখন তা তুলে নেওয়া হয় ৩১৫.২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। মন্ত্রক গোটা বিষয়টি পাঠায় সিভিসি-কে। সিভিসি মন্ত্রককে নির্দেশ দেয় পিএফ কমিশনারের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করতে। প্রক্রিয়াটি এখনও চলছে।
সূত্রের অভিযোগ, এই ডিএইচএফএল উত্তরপ্রদেশের একটি সরকারি সংস্থার প্রায় ৪০০০ কোটি টাকা একই ভাবে নয়ছয় করেছে। এ নিয়ে ফৌজদারি মামলা চলছে।