Adani Group

মধ্যবিত্তের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা! শেয়ার দরে ধস কেন, আদানিদের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে এলআইসি

সম্প্রতি আমেরিকার লগ্নি নিয়ে গবেষণাকারী সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ দাবি করে, গৌতম আদানির গোষ্ঠী কারচুপি করে তাদের সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০২:১৮
LIC says will seek explanation from Adani on stock crisis

আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে প্রায় সাড়ে ৩৬ হাজার কোটি টাকার লগ্নি রয়েছে এলআইসি-র। ফাইল ছবি।

সাম্প্রতিক সময়ে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দরে যে ভাবে ধস নেমেছে, শীঘ্রই তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। শুধু তা-ই নয়, কী ভাবে তারা এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করার কথা ভাবেছে, তা-ও জানতে চাওয়া হবে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা জীবন বিমা নিগম (এলআইসি)।

আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে প্রায় সাড়ে ৩৬ হাজার কোটি টাকার লগ্নি রয়েছে এলআইসি-র। কারচুপির অভিযোগের ধাক্কায় যখন আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দর হু হু করে পড়ছে, তখন এলআইসিতে গচ্ছিত সঞ্চয়ের টাকা সুরক্ষিত কি না, তা নিয়ে মধ্যবিত্তের চিন্তা বেড়েছে। সরগরম জাতীয় রাজনীতিও। প্রায় প্রতি দিনই আদানি-বিতর্ক নিয়ে উত্তাল হচ্ছে সংসদ। লাগাতার বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে এলআইসির কর্ণধার এম আর কুমার বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে শীঘ্রই আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। গত কয়েক দিন ধরে যা ঘটে চলেছে, সেই পরিস্থিতি কী ভাবে মোকাবিলা করার কথা ভাবছে তারা, তা জানতে চাওয়া হবে। তারা এ বিষয়ে আলোকপাত করলে আমাদেরও সুবিধা হবে বুঝতে।’’

Advertisement

সম্প্রতি আমেরিকার লগ্নি নিয়ে গবেষণাকারী সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ দাবি করে, গৌতম আদানির গোষ্ঠী কারচুপি করে তাদের সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে। মরিশাস-সহ বিভিন্ন দেশে আদানি পরিবারের মালিকানাধীন ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে বিপুল অর্থ লেনদেনও হয়েছে। কৃত্রিম ভাবে ফাঁপিয়ে তোলা দামের শেয়ার বন্ধক রেখে আদানিরা ঋণ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ ওই বিদেশি সংস্থার। যদিও আদানিরা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তা সত্ত্বেও গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বেশ কয়েকটি সংস্থার শেয়ার দরে ধস নামে। রিপোর্ট বলছে, গত ২৫ জানুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ, মঙ্গলবার পর্যন্ত সংস্থাগুলির লগ্নিকারীরা প্রায় ৯.৫ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ হারিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এর ফলে বন্ধকি শেয়ারের দামও কমেছে দ্রুত। যা ঋণদাতাদের পক্ষে বড় ঝুঁকির কারণ।

এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়ে দিয়েছেন, আদানিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের নয়। প্রয়োজন হলে সেই পদক্ষেপ করবে সংশ্লিষ্ট নিয়ামক সংস্থা। এ ক্ষেত্রে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। কেন্দ্রীয় অর্থসচিব টি ভি সোমনাথনও আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘আমি স্পষ্ট করে জোর দিয়ে বলতে চাই, সরকারি আর্থিক সংস্থা, তা সে বিমা সংস্থা হোক বা ব্যাঙ্ক, সেখানে কোনও বিপদের আশঙ্কা নেই। কারণ, কোনও একটি নির্দিষ্ট সংস্থায় এলআইসির লগ্নি তার মোট লগ্নির তুলনায় এতটাই সামান্য যে সেই সংস্থার ভাগ্যের উপর এলআইসির ভাগ্য নির্ধারিত হয় না। ফলে এলআইসিতে যাঁদের বিমা রয়েছে, তাঁদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। এলআইসির শেয়ারে যাঁরা লগ্নি করেছেন, তাঁদের উপরেও খুব সামান্যই প্রভাব পড়বে। যে বেসরকারি সংস্থাটি খবরে রয়েছে, সেই সংস্থায় এলআইসি, স্টেট ব্যাঙ্কের ১ শতাংশেরও কম অর্থ আটকে রয়েছে। ফলে সঞ্চয়কারীদের অর্থের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তার দরকার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement