দেশের আমদানি বিল নিয়ে সাবধান করল বাণিজ্য উপদেষ্টা জিটিআরআই। —প্রতীকী চিত্র।
ডলারের সাপেক্ষে টাকার তলানি ছোঁয়া দাম নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছে মোদী সরকার। আসন্ন বাজেটে তাদের এই সমস্যা থেকে বেরনোর পথ খোঁজার পরামর্শও দিচ্ছে বাণিজ্য মহল। এই অবস্থায় দেশের আমদানি বিল নিয়ে সাবধান করল বাণিজ্য উপদেষ্টা জিটিআরআই। রিপোর্টে তারা বলেছে, যে সব পণ্যের আমদানি খাতে ভারতের খরচ দ্রুত চোখে পড়ার মতো বাড়বে তার মধ্যে আছে অশোধিত তেল, ভোজ্য তেল, সোনা, হিরে, বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশ, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, প্লাস্টিস ও রাসায়নিক সামগ্রী। এক দশকে চিনের মুদ্রার তুলনায় ভারতীয় টাকার কয়েক গুণ বেশি অবমূল্যায়ন হয়েছে বলেও দাবি তাদের।
উদাহরণ হিসেবে উপদেষ্টাটি সোনা আমদানির কথা বলেছে। ডলারের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্ব বাজারে দামি হওয়ায় ভারতের মতো দেশে তার আমদানি খাতে বিদেশি মুদ্রার খরচ বাড়ছে। তাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্ব বাজারে সোনার দাম এক বছরে ৩১.২৫% বেড়েছে। কেজিতে ২০২৪-এর জানুয়ারিতে ছিল ৬৫,৮৭৭ ডলার। এখন ৮৬,৪৬৪ ডলার।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ভারত চাহিদার ৮৫% তেল আমদানি করে। সোনার বিপুল চাহিদাও আমদানি ছাড়া মেটানো সম্ভব নয়। ভোজ্যতেল, রাসায়নিক সামগ্রী, প্লাস্টিক-সহ সবই আমজনতার দৈনন্দিন জীবনে জরুরি। তাই আমদানি খাতে খরচ বাড়লেই দেশে এগুলির দাম চড়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু যে সব পণ্য আমদানি করে বিক্রি হচ্ছে কিংবা অন্য পণ্য তৈরির জন্য কাঁচামাল হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে, সেগুলি কেনার বাড়তি খরচ শেষ পর্যন্ত সাধারণ ক্রেতার ঘাড়ে চাপলে বাজারে চাহিদা আরও কমতে পারে। যা আর্থিক বৃদ্ধির গতি বৃদ্ধির পথে বাধা হতে পারে।
জিটিআরআই-এর প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তবের দাবি, দুর্বল টাকা আমদানি খরচ বাড়ানোয় জ্বালানির পাশাপাশি উৎপাদনের কাঁচামালের দামও বাড়বে। তাতে পণ্যটির উৎপাদন খরচ বাড়ায় বর্ধিত দাম প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে দেবে। ফলে টাকার দাম কমলে রফতানিকারীদের সুবিধা হয় বলে যে ধারণা আছে, সেটাও ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন অজয়। বলেন, ‘‘টাকার দাম কমলে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় রফতানি পণ্য তৈরির সেই সব শিল্প, যেখানে উৎপাদনের ক্ষেত্রে কর্মী বেশি লাগে। তবে গত ১০ বছরে দেখা গিয়েছে, যে সব শিল্পে আমদানিকৃত কাঁচামাল বেশি প্রয়োজন, সেগুলির বৃদ্ধির হার ভাল। অথচ তুলনামূলক ভাবে কম আমদানি নির্ভর শিল্প (যেমন বস্ত্র) সমস্যার মধ্যে রয়েছে।’’