‘দমদমের বড়মা’র পুজো
টানা চোখের দেবীর শ্বেতশুভ্র বেশ। কারুকার্যময় অলঙ্কারে সজ্জিত জগদ্ধাত্রী। টানা ৫ দিন ধরেই চলে আরাধনা। না, গঙ্গাপাড়ের চন্দননগরের কোনও পুজো নয়, ‘দমদম ইউথ কর্নার’-এ এই উদযাপন রীতি। এ বছর ৫৫তম বর্ষে পদার্পণ করলেন ‘দমদমের বড়মা'।
কেন এমন নামকরণ? এই প্রসঙ্গে পুজো কমিটির প্রধান উপদেষ্টা অমিত পোদ্দার বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই দেবী জগদ্ধাত্রী পূজিত হয়ে আসছেন এখানে। তবে গত ৫ বছর ধরে টানা পাঁচ দিনই পুজো করি আমরা। এই নিয়ম মেনেই মূলত চন্দননগর কিংবা হুগলির বিভিন্ন প্রান্তে পুজো হলেও কলকাতার দিকে পাঁচ দিন ধরে চলা জগদ্ধাত্রী পুজোর নজির খুবই কম। আমরা চেয়েছিলাম দেবী পাঁচ দিনের পুজোই গ্রহণ করবেন এবং আমাদের কাছে বড়মা নামেই পূজিত হবেন। তিনি আমাদের সকলেরই বড়মা।”
শুধু দেবীদর্শন নয়, এখানে গেলে আমেজ পাবেন শান্তিনিকেতনেরও। পুজো মণ্ডপ ঘিরে যেন আস্ত সোনাঝুরির হাট! যদিও এর নেপথ্যেও রয়েছে এক দারুণ উদ্যোগ। এ ভাবেই প্রান্তিক শিল্পীদের দিকে আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পুজো কমিটির সদস্যরা। অমিত বাবু বলেন, “অতিমারির সময়ে তখন শহরে এসে শিল্পীদের রোজগারের পথ একেবারেই বন্ধ ছিল। সেই সময়ে এমন হাটের প্রস্তাব আসে আমাদের কাছে এবং আমরাও রাজি হয়ে যাই মুহূর্তেই। শিল্পীদের আশ্বাস দিয়েছিলাম যে অতিমারির সময়ে সমস্ত নিয়ম মেনেই তাঁদের রোজগারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। যাতে খেটে খাওয়া এই মানুষেরা শহরে এসে উৎসবে সামিল হতে পারেন এবং একইসঙ্গে লক্ষ্মীলাভও করতে পারেন।”
দমদমে ঠাকুর দেখতে গেলে সময়ে করে দেখা করাই যায় ‘দমদমের বড়মা’র সঙ্গে। কী ভাবে যাবেন? ট্রেন কিংবা মেট্রো ধরে প্রথমে দমদমে নামুন। এ বার নাগেরবাজারমুখী যে কোনও বাস কিংবা অটো ধরেই চলে যেতে পারবেন এই পুজোমণ্ডপে। সময় লাগবে মাত্র ৫ থেকে ৬ মিনিট। তা হলে আর দেরি কেন? ঠাকুর দেখা এবং কেনাকাটা– দুই-ই হোক একসঙ্গে!
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।