পায়েল দে।
বহুবার পাহাড়ে গিয়েছেন অভিনেত্রী পায়েল দে। পুজোর ছুটিতে বেড়াতে গিয়ে যে এমন বিপদ আসবে কে জানত!
প্রকৃতিকে এত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে দেখেননি কখনও। তাণ্ডব থেকে বাঁচতে টানা তিন দিন হোটেলবন্দি। বৃহস্পতিবার ১৫ মিনিট পায়ে হেঁটে নামার পরে গাড়ি পেয়েছেন। অবশেষে সপরিবারে নিরাপদে সমতলে ফিরতে পেরেছেন পায়েল ও তাঁর অভিনেতা স্বামী দ্বৈপায়ন দাস।
শিলিগুড়ি থেকে ফোনে আনন্দবাজার অনলাইনকে পায়েল বলেন, ‘‘১৫ অক্টোবর কালিম্পং থেকে ২১ কিমি দূরের একটি নির্জন গ্রামে পৌঁছই। ১৬ অক্টোবর রাত থেকে দুর্যোগ শুরু। চার দিক অন্ধকারে ডুবে। ফোনে চার্জ নেই। কারও সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছি না।’’ সমতলে নামার পর আপাতত একটি অনুভূতিই কাজ করছে তাঁর— কতক্ষণে বাড়ি ফিরবেন!
পর্যটকদের ভিড় বরাবরই অপছন্দ পায়েল-দ্বৈপায়নের। পাহাড় টানে দু’জনকেই। এ বার পুজোর ছুটিতে তাই গন্তব্য ছিল পাহাড়ে ঘেরা গ্রাম টাকনা। ‘‘দু’দিন খুব ভাল আবহাওয়া। আমরা পাহাড়ি সৌন্দর্যে বুঁদ। তুমুল বৃষ্টি তার পর থেকেই’’, বললেন পায়েল। প্রকৃতির সেই ভয়াল চেহারা বুকে কাঁপুনি ধরিয়েছে। দলে বাড়ির সবচেয়ে ছোট সদস্য মেরাক। সবচেয়ে বড় দুই সদস্য শ্বশুর, শাশুড়িও সঙ্গে। তখন একটাই চিন্তা, সবাইকে নিয়ে ঠিকমতো সমতলে পৌঁছতে পারবেন তো?
সময় এগিয়েছে। দাপট বেড়েছে বৃষ্টির। পায়েলের কথায়, ‘‘বিদ্যুৎ ছিল না। অন্ধকারে বসে শুনছি বৃষ্টির গর্জন। সে যে কী ভয়ানক!’’ ততক্ষণে কালিম্পং থেকে নামার চারটি রাস্তার তিনটি বন্ধ। একটি দিয়ে কোনও ক্রমে গাড়ি যাতায়াত করছে। মাঝেমধ্যে সেই রাস্তা বন্ধ রেখে সারাই চলছে। এ ভাবেই বৃহস্পতিবার ভোরে টাকনা থেকে শিলিগুড়ি আসতে পিছনের রাস্তা ধরে নেমেছেন তাঁরা। ‘‘মিনিট ১৫ মেরাককেও ব্যাগ কাঁধে হাঁটতে হয়েছে!’’, তখনও আতঙ্ক পায়েলের গলায়।
ঠিক সময়ে সমতলে নামতে পারেননি। তাই বুধবার কলকাতায় ফেরার ট্রেন ধরা হয়নি। শুক্রবার আকাশপথে বাড়ি ফিরবেন সদলবলে। অভিনেত্রীর আপশোস, ‘‘বেড়াতে এসে কী বিড়ম্বনা! সময়ে বাড়ি ফিরতে পারলাম না। মাঝখান থেকে এক দিনের শ্যুট বাতিল হল আমার আর দ্বৈপায়নের।’’