সামনে ফাঁকা মাঠ। দাঁড়িয়ে একটা গাছ। পিছনে লাল-হলুদ দেওয়ালের ইমারত। বড় বড় গম্বুজ। অনেক নকশা করা। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি। নদিয়া জেলার সদর শহর কৃষ্ণনগর। স্টেশন থেকে মিনিট দশ-কুড়ি গাড়ি অটো করে গেলেই রাজবাড়ি।
রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের নামেই শহরের নাম। এই শহরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে গোপাল ভাঁড়ের গল্প। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নাম। তার সঙ্গে সরপুরিয়ার মতো মিষ্টি।
আজ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র নেই। নেই রাজতন্ত্র। গোপাল ভাঁড়ের আবাস নিয়ে নানা গল্প বাতাসে ওড়ে।
তবে রাজবাড়িতে আজও আছেন রাজা-রানি। সামনেই দুর্গাপুজো। এই সময়টাতে জনসাধারণের সামনে আসেন তাঁরা। পুজোর ক’দিন সাধারণ মানুষ রাজবাড়িতে প্রবেশ করতে পারেন। বছরের বাকি সময় সেই অনুমতি পাওয়া যায় না। পুজোর নিয়ে সেজে উঠছে বাংলা। বাদ যাচ্ছে না কৃষ্ণনগর রাজবাড়িও।
রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আমলে গড়ে ওঠে বর্তমান ভবনটি। পুজোর ক’টা দিন কৃষ্ণচন্দ্রের বাড়ি, নদিয়া ও আশেপাশের অঞ্চল পর্যটকদের মূল আকর্ষণ হয়ে ওঠে। এই রাজবাড়িতে দেখার মতো একাধিক নির্দশন থাকলেও দর্শকদের কাছে প্রধান আর্কষন বিরাট পুজো মণ্ডপ। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির মতো বিশালাকার পুজো মণ্ডপ খুব একটা দেখা যায় না। এখানকার বিচিত্র কারুকার্য চোখ ধাঁধিয়ে দেয়।
রাজবাড়ির ভিতরে এখনও পর্যন্ত রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভাসদরা যে জায়গায় বসতেন, তা অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। রাজার খাওয়ার জায়গা আজও একই ভাবে ব্যবহৃত হয়। যেহেতু এই বাড়িতেই রাজার বর্তমান উত্তরসূরিদের বাস, তাই সব সময় জনসাধারণকে এখানে ঢুকতে দেওয়া হয় না।
বর্তমান রাজা ও রানি সারা বছর সবার সামনে খুব বেশি না আসলেও পুজোর সময়তে তাঁদের দেখা যায় বনেদি সাজেই। সেই রীতি মেনেই বর্তমান রাজা সৌমিশ চন্দ্র রায় ও রানি অমৃতা রায় নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন এ বছর।
কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে সাধারণত সব পুজোই করা হয়। তবে বিশেষ ভাবে দুর্গাপুজো ও জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। রাজবাড়ির মা দুর্গা ‘রাজেশ্বরী’ নামে পরিচিত। এখানে মায়ের রূপও অনেক আলাদা। সিংহের পরির্বতে মা এখানে ঘোড়ার উপর বিরাজমান। প্রাচীন রীতি অনুযায়ী আজও দেবীর পিছনে চালিতে চালচিত্র দেখা যায়। আগে এখানে পশুবলি হত। আজ বন্ধ। সব বারোয়ারি পুজোর ঠাকুর রাজবাড়ি হয়ে তবেই বির্সজনে যায়।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy