Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Heritage Durga Puja

‘গাইন গার্ডেন’-এ দুর্গাভক্তিতে কোনও খামতি রাখেননি ইংরেজরা, বানিয়েছিলেন স্টেশনও

কলকাতার খুব কাছেই ধান্যকুড়িয়া, ‘প্রাসাদ ঘেরা গ্রাম', বর্তমানে যা হেরিটেজ সাইট। দেখতে দেখতে ১৮০ বছরে পা দিল সেখানকার গাইন বাড়ির পুজো। সেখানে সন্ধিপুজোর সময়ে আজও বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হয়।

আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৫৯
Share: Save:

মার্টিন কোম্পানির বাষ্পচালিত ট্রেন থামত গাইনদের বাগানবাড়ির জন্য বিশেষ ভাবে বানানো 'গাইন গার্ডেন' স্টেশনে! আর ট্রেন থেকে নেমে ইংরেজরা যেতেন সে বাড়ির দুর্গাপুজো দেখতে। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। প্রায় দেড়শো বছর আগের এই কাহিনি। সে সময়ে এই পথে মার্টিন কোম্পানির ট্রেন চলত।

ধান্যকুড়িয়ার মানুষ এক ডাকে চেনেন গাইনদের। এই এলাকায় যদিও গাইন ছাড়াও বল্লভ ও সাউদের আধিপত্য ছিল একটা সময়ে। তবে গায়েনদের প্রতিপত্তিই ছিল সর্বাধিক। তাদের এই বাগানবাড়িতেই প্রিয়নাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্বাক ছবি 'কপালকুন্ডলা', গুরু দত্তের 'সাহেব বিবি অউর গোলাম' কিংবা হাল আমলে ঋতুপর্ণ ঘোষের শেষ ছবি 'সত্যান্বেষী'র শ্যুটিং হয়েছে।

গাইন পরিবারের আদিপুরুষ গোবিন্দচন্দ্রের ছিল মূলত পাটের ব্যবসা। পাট তখন ইংরেজদের কাছে সোনার সমতুল্য। ইংরেজদের সঙ্গে সেই পাটের ব্যবসা করেই গোবিন্দচন্দ্রের ধনসম্পত্তি ফুলেফেঁপে ওঠে। 'বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স'-এর সদস্য ছিলেন গোবিন্দচন্দ্রের পুত্র মহেন্দ্রনাথ। তাঁকে 'জুট লর্ড' বলা হত। তাঁর আমলেই গাইনদের পাটের ব্যবসার বিপুল শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। ইংল্যান্ড ও ইউরোপ জুড়ে বিরাট চাহিদা তৈরি হয় গাইনদের পাটের। আর সেই সূত্রে ইংরেজদের আনাগোনা শুরু হয় গাইন বাড়িতে। গোবিন্দচন্দ্রের আমলে 'গাইনদের রাজবাড়ি'র যে মূল মহল নির্মিত হয়, পুত্র মহেন্দ্রনাথ তার শ্রীবৃদ্ধি ঘটান। শুধু তা-ই নয়, মহেন্দ্রনাথের আমলে গড়ে ওঠে দুর্গের আদলে এক বিরাট বাগানবাড়ি। যা 'গাইনদের বাগানবাড়ি' নামে জনপ্রিয়।

গাইন বাড়ির পুজো বেশ প্রাচীন। দেখতে দেখতে এ বার তা ১৮০ বছরে পা দিল। এ বাড়ির বংশধর মনজিৎ গাইনের কথায়- "গাইন রাজবাড়িতে এক চালার প্রতিমায় পুজো হয় প্রাচীন পরম্পরা মেনে, সাবেক রীতিতে। সন্ধিপুজোয় বাড়ির সবার সহযোগিতায় জ্বলে ওঠে ১০৮টি প্রদীপ। আট থেকে আশি সবাই হাত লাগান তাতে। নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট সন্ধিক্ষণে বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হয়। এই পরম্পরাও দীর্ঘ দিনের। রীতি মাফিক হয় নবমীর ধুনোপোড়া, কনকাঞ্জলি প্রথা। একটা সময়ে দশমীর দিন কাহারদের কাঁধে চেপে মা বিসর্জন যেতেন। এখন আর কাঁধে বিসর্জন হয় না।"

কী ভাবে যাবেন? কলকাতার খুব কাছেই ধান্যকুড়িয়া, 'প্রাসাদ ঘেরা গ্রাম'। ট্রেনে গেলে শিয়ালদহ-হাসনাবাদ লাইনের কাঁকড়া মির্জানগর স্টেশন থেকে নেমে যাওয়া যায় ধান্যকুড়িয়া। আর বাস অথবা গাড়ি নিয়ে গেলে টাকি রোড ধরে ধান্যকুড়িয়া দেড় ঘণ্টার পথ। গাইনদের এই প্রাচীন পুজো দেখতে আজও বহু বিদেশি অতিথি আসেন। কলকাতার খুব কাছে হওয়ার সুবাদে শহর থেকেও বহু মানুষ এই পুজো দেখতে যান।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy