Positive and negative effects of turkey on health of people as advised by nutritionist dgtl
Turkey Meat Effects on Body
টার্কি দারুণ সুস্বাদু, দুর্ধর্ষ পুষ্টিকর! অনেকের জন্য ক্ষতিকরও, জানালেন পুষ্টিবিদ
ইদানীং টার্কির মাংস খাওয়ার খুব চল হয়েছে। সুস্বাদু, পুষ্টিকর। কিন্তু পুষ্টিবিদ রিম্পা বসু সাবধান করে দিলেন কয়েকটি ব্যাপারে। জেনে নিন তাঁর পরামর্শ এই প্রতিবেদনে।
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৪২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
ভোজনরসিক বাঙালির স্বাস্থ্য সচেতনতাও ইদানীং হু হু করে বেড়ে চলেছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সবার ঘরে-ঘরে না হলেও, অনেকের হেঁশেলেই টার্কির মাংসের সমাদর।
০২১৫
বিশেষ করে ফিটনেস উৎসাহী আর ‘ডায়েট’ সচেতনদের মধ্যে। এমতাবস্থায় টার্কির মাংস খাওয়ার গুণাবলীর কথা আনন্দবাজার অনলাইন-কে শোনাচ্ছেন পুষ্টিবিদ ডাঃ রিম্পা বোস।
০৩১৫
প্রথমেই একটা জিনিস পরিষ্কার করে নেওয়া ভাল যে, দুটোই পোলট্রিবর্গীয় মনুষ্যখাদ্য পাখি হলেও টার্কি মোটেও মুরগি নয়। অনেকে ভুল ভাবেন, টার্কি বোধহয় মুরগিরই একটি প্রকার। কিন্তু আসলে তা নয়।
০৪১৫
টার্কি সম্পূর্ণ ভিন্ন এক প্রজাতির পাখি। পৃথিবীতে সর্ব প্রথম উত্তর আমেরিকা থেকে টার্কি মানুষের খাদ্য হিসেবে গণ্য হতে শুরু করে। তার পর ইউরোপ হয়ে ইদানীং ভারতেও নানা ‘পোলট্রি ফার্মে’ টার্কির উৎপাদন শুরু হয়েছে।
০৫১৫
আমাদের রাজ্যে সরকারি তত্ত্বাবধানেও উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে টার্কির চাষ শুরু হয়েছে। কলকাতায় আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি পাবেন টার্কির মাংসের দোকানের খোঁজ।
০৬১৫
টার্কির মাংস ও ডিম যে ইদানীং মুরগির মাংস আর ডিমের মতোই বাঙালির পাতেও সমাদৃত, তার কারণ একটাই। টার্কির মাংসে হাই প্রোটিন ও কম ক্যালোরি থাকে। মুরগি আর টার্কির মাংসের মধ্যে প্রধান তফাত, মুরগির পুরোটাই সাদা মাংস, টার্কির কিছুটা সাদা বা ‘হোয়াইট মিট’ আর কিছুটা লাল বা ‘রেড মিট’।
০৭১৫
টার্কির বুকের মাংস ‘হোয়াইট মিট’, আবার ' পায়ের দিকের মাংস ‘রেড মিট’। টার্কির দেহের ওই অংশটায় প্রোটিনের মায়োগ্লোবিনের জন্য ‘রেড মিট’ থাকে। সার্বিক ভাবে স্বাস্থ্য ও পুষ্টির দিক দিয়ে উৎকৃষ্ট শ্রেণীর প্রোটিন অর্থাৎ ‘হাই প্রোটিন’ আমরা অনেক বেশি পেয়ে থাকি টার্কির মাংস থেকে।
০৮১৫
এ ছাড়াও, টার্কির মাংস যাবতীয় ‘বি কমপ্লেক্স ভিটামিন’ সমৃদ্ধ। যে ভিটামিনগুলি আমাদের শরীরের সুস্বাস্থ্যের জন্য খুব জরুরি।
০৯১৫
সেই সঙ্গে টার্কির মাংসে বিশেষ করে সিলিনিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো যে বিভিন্ন ‘মিনারেল’ বা খনিজ লবণগুলি থাকে সেগুলিও মানুষের শরীরের পক্ষে খুব দরকারি। এটি অ্যান্টি অক্সিডেন্টের উৎসেচক রূপেও স্বাস্থ্যপুষ্টি জোগায়।
১০১৫
তা ছাড়া, আমাদের টার্কির মাংস খাওয়ার একটা অর্থনৈতিক সুবিধার বিষয়ও রয়েছে। এটা ভীষণ পেট ভরা একটি খাবার। মানে, ৫০ গ্রাম মুরগির মাংস খেলে আপনার যতটা পেট ভরবে, তার চেয়ে বেশি পেট ভরবে ওই ৫০ গ্রামই টার্কির মাংস খেলে।
১১১৫
ফলে, বাজার থেকে আপনি মুরগির তুলনায় কম পরিমাণ টার্কির মাংস কেনার সুবিধা পাচ্ছেন। খরচ কম হচ্ছে অথচ পেট ভরছে বেশি। এমনিতেও টার্কির মাংসের দাম দোকানে কম।
১২১৫
তা ছাড়া দেশি মুরগির চেয়েও নরম ও চর্বিবিহীন হয় টার্কির মাংস। যার জন্য রোগীদের ইদানীং মুরগির চেয়েও টার্কির মাংস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
১৩১৫
টার্কির মাংস বাড়িতে রান্না করা নিয়েও কোনও ঝক্কি নেই। দোকান থেকে পাঁঠা বা মুরগির মাংসের মতোই কেটেকুটে কিনে এনে বাড়িতে পরিষ্কার করে ধুয়ে, সাধারণ চিকেন কারি ও কচি পাঁঠার ঝোলের রন্ধন প্রণালী মতো রান্না করলেই সুস্বাদু খেতে লাগে টার্কির মাংস।
১৪১৫
সব শেষে একজন পুষ্টিবিদ জানিয়েছেন, ‘‘অল্প হলেও টার্কির মাংসের একটা নেতিবাচক দিকও কিন্তু আছে। টার্কির মাংসের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে, বিশেষ করে তার ‘প্যাকেজিং’ অংশে যে ‘ব্রাইন ওয়াটার’ ব্যবহৃত হয়, তাতে সোডিয়ামের পরিমাণ খুব বেশি থাকে।
১৫১৫
বেশি সোডিয়াম মানুষের শরীর গ্রহণ করলে, তার থেকে আমাদের রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, যকৃতের ক্ষতি হয়, যাঁদের কিডনি সমস্যা আছে সেটা আরও বেড়ে যায়। তাই মন চাইলেও উচ্চ রক্তচাপ, যকৃত ও কিডনির রোগীদের তো টার্কির মাংস খাওয়ার প্রশ্নই নেই! সোজা কথা, টার্কির মাংস খান কিন্তু আপনার ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থান বুঝে খান।