দীপাবলিতে বাজির ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে সরব হয়েছে চিকিৎসক সংগঠনগুলি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোলা চিঠি লিখে পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম।বায়ুদূষণ তো বটেই, করোনা পরিস্থিতিতে ফুসফুসের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক এই ধোঁয়া, এমনটাই বলছেন তাঁরা।
এ বছরের দীপাবলি হোক বাজিহীন। চিকিৎসকরা বারবার আর্জি জানাচ্ছেন এমনই। কারও সাময়িক আনন্দ যেন অন্যের যন্ত্রণার কারণ না হয়ে ওঠে, সেদিকেও নজর রাখতে বলছেন চিকিৎসকরা। কোভিড-১৯ সংক্রমণের এক মারাত্মক উপসর্গ শ্বাসকষ্ট। এ রোগে কত অল্পবয়সি মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন, তার ঠিক নেই। তীব্র-উপসর্গযুক্ত এবং হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে আরও অনেক বেশি সাবধানতার প্রয়োজন। শুধু অতিমারি সৃষ্টিকারী ভাইরাস ছাড়াও নানা কারণে রেসপিরেটরি এমার্জেন্সি হতে পারে। সে ক্ষেত্রেও বাজির ধোঁয়া অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
আরও পড়ুন: বাজি থেকে দূরে থেকে কী ভাবে মাতবেন উৎসবে? রইল টিপস
কালীপুজোতে বাজির ব্যবহার বেশিরভাগের কাছেই অপরিহার্য হয়ে ওঠে। জনস্বাস্থ্য চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বাজির এই ধোঁয়া বিষপানের চেয়েও বেশি ক্ষতিকারক। শুধু তাই নয়, করোনা থেকে সেরে ওঠা রোগী, বয়স্ক মানুষ, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিরা বা বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এ জাতীয় ধোঁয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে।’’
হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সাবধানতার প্রয়োজন।
বাজি থেকে নির্গত উপাদান যেমন-সিলিকন, ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), হাঁপানির রোগীদের সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলায় প্রতি বছরই আলোর উৎসবে বাজির ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করা হয়। করোনা আবহে বাজি পোড়ানোয় তাই নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। চেস্ট মেডিসিনের চিকিৎসক সৌম্য দাসের কথায়, ‘‘বাজি পোড়ানো বন্ধ রাখা উচিত। অন্য বছরও আবেদন করি। এ বছরে বিশেষ করে কোভিড পরিস্থিতি। করোনায় ৫ শতাংশ আক্রান্ত ব্যক্তিই আইসিইউ-তে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। অনেকের ক্ষেত্রেই সুস্থ হলেও অক্সিজেন লাগছে বাড়িতে ফিরেও। ফুসফুস যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এতে কোনও সন্দেহ নেই।’’
আরও পড়ুন: করোনা থেকে সেরে উঠেছেন? পুজোর সময় কী কী খেয়াল রাখবেন
তিনি বলেন, ‘‘২০০২ সালে যে সার্স মহামারি হয়েছিল, সেখানেও স্টাডিতে দেখা গিয়েছে লং টার্মে ৩০ শতাংশের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও অর্থাৎ ২০২০ সালের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ মহামারির ২০-৩০ শতাংশ আক্রান্তের ফুসফুসে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে লং টার্মে। লাং ফাইব্রোসিস এবং ব্রঙ্কিয়েকটেসিস হতে পারে। তাই বাজি পোড়ানো একেবারেই ঠিক হবে না।’’
করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিকে বিশুদ্ধ বাতাস দেওয়া আপনার সামাজিক কর্তব্য।
সৌম্য জানান, বাজি পুড়িয়ে কেউ সাময়িক আনন্দ পেতে পারেন। কিন্তু তার পাশেই করোনা আক্রান্ত কিংবা করোনা থেকে সেরে ওঠা কেউ না কেউ রয়েছেন। বাজির ধোঁয়া তো তার কাছেও যাবে। বিশুদ্ধ বাতাস তাঁকে দেওয়া তো সামাজিক কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে।
বাজির দূষিত পদার্থ ধোঁয়ার মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, এ কথা বলছে একাধিক গবেষণাপত্রও। একজন সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে আপনি কি চাইবেন বাজি পোড়াতে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy