এবারে আর শরতে নয় মাদুর্গা সপরিবারে আসছেন হেমন্তে।অক্টোবরের শেষের দিকে বাতাসে হিমের পরশ টের পাওয়া যায়। ঋতু পরিবর্তনের আভাস আমাদের মতই পছন্দ করে নানা রোগ জীবাণু। ইনফ্লুয়েঞ্জা, টনসিলাইটিসের মতো জীবাণুদের তফাতে রেখে ঝড়ের বেগে এগিয়ে চলেছে উহান থেকে পৃথিবী জয় করে আসা নভেল করোনা ভাইরাস।
এখনই দৈনিক সংক্রমণ ৯৬.৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে পুজোয় সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়বে। তাই এবছরে প্যান্ডেলে ঘুরে ঠাকুন দেখতে যাবেন না। বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে প্যান্ডেলে যাওয়ার ঝুঁকি নিলে কোভিড-১৯-সহ অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি, বললেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ পল্লব চট্টোপাধ্যায়।
প্যান্ডেলে ভিড়ের মধ্যে গেলে কম উচ্চতার কারণে ড্রপলেট শিশুদের উপরেই বেশি পড়বে।কোভিড-১৯ ছাড়াও অন্যান্য ড্রপলেট সংক্রমণের ঝুঁকিও অনেক বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।কোভিড-১৯ এর অতিমারির শুরুতে ভাবা হয়েছিল বাচ্চারা বুঝি এই ভাইরাসকে আটকাতে পারে।কিন্তু ইদানীং বাচ্চাদের মধ্যেও নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে।সম্প্রতি সদ্যোজাত শিশুরাও কোভিড-১৯-এ সংক্রমিত হওয়ায় দীর্ঘ দিন হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করার প্রয়োজন হচ্ছে।এই ভোগান্তি এড়াতে পুজোয় প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে বেড়ানো এই বছরে একেবারেই অনুচিত জানালেন পল্লব চট্টোপাধ্যায়।
পাড়া বা হাউজিং এর প্যান্ডেলে কিছুক্ষণের জন্য ঘুরে আসতে পারে একটু বড় ছেলেমেয়েরা।৬–১০বছরের বালক বালিকাদের মাস্ক সঠিক নিয়মে পরিয়ে তার উপর নজর রেখে প্যান্ডেলে পাঠানো যেতে পারে।তবে কোনও অবস্থাতেই রাস্তার ফুচকা, চুরমুর, ঠান্ডা পানীয় কোনও খাবারই খাওয়া চলবেনা।যদিও খাবার মারফত ড্রপলেট সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা অত্যন্তকম, কিন্তু হাত মুখ থেকে কোভিড-১৯ সহ অন্যান্য ড্রপলেট সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি।
বাচ্চাদের নিয়ে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখাতে এইবছর রাশ টানা উচিত। ফাইল চিত্র।
বাইরের এই সব খাবার ছাড়া পাড়ার প্যান্ডেলে ভোগ রান্নাও পংক্তি ভোজনেও এইবছর রাশ টানা উচিত বলে পল্লব বাবুর মত।যাঁরা বাচ্চাদের নিয়ে পাড়া বা হাউজিংয়ের পুজোয় যাবেন তাঁরা প্রথমত বাচ্চাদের উপর নজর রাখবেন যেন মুখে-নাকে-চোখে(টি জোনে) হাত না দেয়। তবে বাচ্চাদের সামলে রাখা মুশকিল, তাই সঙ্গে রাখতে হবে ভাল স্যানিটাইজার।
আরও পড়ুন: করোনা আবহে নিরাপদে পুজোর শপিং করতে খেয়াল রাখুন এইসব
প্রয়োজন একাধিক বার হাত ও আঙুলের খাঁজ স্যানিটাইজ করে নিতে হবে।বাইরের খাবার খেতে চাইলে খাবার বাড়িতে এনে হাত মুখ সাবান দিয়ে ধুয়ে নুন জলে কুলকুচি করে তবেই খাবার খেতে হবে।পোশাকের ব্যাপারেও এই বছরটা একটু সতর্ক থাকা উচিত।বাচ্চাদের সুতির পোশাক পরাতে হবে।বেশি ঝুলের জামা কাপড় বা বাচ্চা মেয়েদের কোন ও গয়না বা ব্যাগ দেবেন না।হাত মুখ ধুয়ে স্যানিটাইজ করা হলেও এ সব থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি খুব বেশি।ঠাকুর দেখে বাড়ি ফিরে স্নান করে নেওয়া প্রয়োজন।একই সঙ্গে পুজোর নতুন জামা কাপড়ের মায়া না করে জামা কাপড় কেচে ফেলা উচিত বলে পল্লববাবুর পরামর্শ।অনেক বাচ্চার মুখে নাকে হাত দেওয়ার বদ অভ্যাস আছে, অনেকে আবার আঙুল চোষে।কোভিড অতিমারির আবহে এই সব বদ অভ্যাসে লাগাম টানতে হবে।
আরও পড়ুন: পুজোর সময় রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে এই সব মানতেই হবে
মাস্কের ব্যাপারে পল্লববাবু জানালেন, এখনকার নিউ নর্মাল জীবনে মাস্ক আমাদের সকলেরই সঙ্গী।কিন্তু ২ বছরের কম বয়সি বাচ্চাদের মাস্ক পরানো ঠিক নয়।এর থেকে চোকিং অর্থাৎ দম বন্ধ হয়ে বাচ্চার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি খুব বেশি।এমন যেন কখনও না হয় যে মাস্ক পরিয়ে বাচ্চা দের ছেড়ে রেখে নিজেরা মোবাইল বা টিভিতে একাগ্র হয়ে থাকলেন।এর থেকে আচমকা বিপদে পড়ার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।৩ – ৫ বছরের বাচ্চাদের মাস্ক পরালে তাদের সঙ্গে বাবা, মা বা বড় কোনও মানুষের থাকা উচিত বলে পরামর্শ পল্লব চট্টোপাধ্যায়ের।
বায়না করলে বাচ্চাকে বুঝিয়ে বলা ও খুব ইচ্ছা হলে সকালবেলা বা দুপুরের দিকে একবার প্যান্ডেলে ঘুরে আসা যায় ফাঁকা থাকলে।পুজোর আগে বাচ্চাদের বকেয়া টিকা দিয়ে নেওয়া উচিত।৫বছরে মিসলস-মাম্পস-রুবেলা অর্থাৎ এমএমআর বুস্টার ডোজও ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা দেওয়া থাকলে বাচ্চারা অনেকটা নিরাপদে থাকবে।পুজোয় আনন্দে থাকুন, ভাল থাকুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy