আসল জামদানি এমনই! আংটির মধ্যে গলিয়ে এপার ওপার করে দেওয়া যায়!
“রাজা বললেন — সাগরের মাঝে মুক্তোর রাজ্য, সেখান থেকে গলার হার আনব। আর কী আনবো রানি?”
তখন আদরিনী সুয়োরানি সোনার অঙ্গে সোনার আঁচল টেনে বললেন — “মা গো, শাড়ি তো নয় বোঝা! আকাশের মতো নীল, বাতাসের মতো ফুরফুরে, জলের মতো চিকন শাড়ি পাই তো পরে বাঁচি।”
‘ক্ষীরের পুতুল’—এ সুয়োরানির নীলাম্বরী না হোক, পিওর মসলিন না হোক, এমনি সুতি বা সিল্কের জামদানির কদরই বা কম কীসের!
ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রামের দৌলতে এখন আপনি সরাসরি জামদানি তাঁতিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিতে পারেন। তাঁদের থেকে নিজের পছন্দ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী কিনে নিতে পারেন থান। তা যদি সম্ভব না হয়, খাদির যে কোনও দোকানে খোঁজ নিতে পারেন। সেই জামদানি থান দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন কত কী!
থান কিনে একটা গোটা শাড়িই বানিয়ে নিতে পারেন! শাড়িতে বৈচিত্র চাইলে, বসিয়ে নিতে পারেন ইচ্ছে মতো পাড়; আঁচলে করিয়ে নিতে পারেন এমব্রয়ডারির কাজ, বা আঁকিয়েও নিতে পারেন তার উপর! পশ্চিমবঙ্গে বোনা জামদানিতে বুনট যেহেতু বাংলাদেশী জামদানির চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি ঘন, তাই এই কাজগুলি সহজেই ফুটে উঠবে, আর লাগবেও দারুন!
অবশ্যই জামদানি কাপড় দিয়ে তৈরি করতে পারেন ইচ্ছে মতো ব্লাউজও। শাড়ির মতো এতেও উজাড় দিতে পারেন আপনার সৃজনশীলতা! তাক লাগানো অভিনবত্ব !
একই ভাবে তৈরি করতে পারেন কুর্তা বা কুর্তি-ও। জামদানি কাপড়ের তৈরি ড্রেস, শার্ট বা স্কার্ট বা প্যান্ট-ও দেখায় ভারী সুন্দর। ফুটিয়ে তোলে পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের এক নান্দনিক মেলবন্ধন।
এ বার ধরা যাক আপনার মা বা দিদার পুরনো জামদানি, হয়তো বা ঢাকাই জামদানি পিঁজে যাচ্ছে ভাঁজে ভাঁজে, ফেলে তো দেওয়া যায় না! যে অংশগুলি রক্ষা করতে পারবেন, তা দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন জ্যাকেট বা শ্রাগ! নতুন কাপড় কিনে তার উপর পুরনো জামদানির পাড়ও বসিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন হাল ফ্যাশনের নতুন জামা, এমনকী ধুতিও!
শুধু জামা কাপড়ে আটকে পড়ে থাকবেন কেন! পুরনো জামদানি শাড়ি বাঁচিয়ে, অথবা নতুন জামদানি থান দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন ব্যাগ বা গয়না-ও।
বাড়ি সাজানোর জন্যও জামদানি অসাধারণ। জামদানির কুশন কভারের আভিজাত্যই আলাদা! তৈরি করতে পারেন পর্দা। খুব ফাঁকা ফাঁকা লাগলে, সেই কাপড় ছাপিয়ে নিয়ে তাতে যোগ করতে পারেন আলাদা মাত্রা! কুশন কভার, ল্যাম্পশেড, টেবিল রানার, এই সবেও যোগান দিতে পারেন জামদানির ছোঁয়া। আর কোনও কিছুই যদি করতে ইচ্ছে না করে, পুরনো জামদানির যে অংশ বাঁচাতে পারবেন, তাকে ফ্রেম করে শুধু দেওয়ালেও টাঙিয়ে রাখতে পারেন! সুন্দর হবে।
আপনার পরিকল্পনা অনেক, কিন্তু তা রূপ দেওয়ার মতো কাউকে ভরসা করতে পারছেন না? কলকাতা শহর জুড়ে রয়েছেন এমন অনেক সৃজনশীল ডিজ়াইনার, যাঁরা অনায়াসেই আপনার ভাবনাকে রূপ দিতে পারবেন বাস্তবে।
তবে কীসের অপেক্ষা? আলমারি থেকে বের করে ফেলুন জামদানিগুলি; হারিয়ে যাওয়ার আগে, তাদের দিন নতুন জীবন! ওরাও নতুন জীবন ফিরে পাক, আর আপনার বাড়িও হেসে উঠুক।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy