ওয়্যাক্স, লিটেরাল, পপ আর্ট, পোলকা— শব্দগুলো চেনা চেনা লাগছে!
অতিমারি, লকডাউন যা-ই হোক ছাপা কিন্তু চলছে!
এখন তো এই ছাপা বা ফুলেল নকশা শুধু পোশাকে নয়, মাস্কে মুখ এঁটে ঘুরছে মুখে মুখে।আর এ বার পুজোয় সেই ছাপা আর নকশার রমরমা।
লেপার্ড প্রিন্টের ফার কোটে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বা জ্যাগড প্যাটার্ন প্রিন্টে ক্রিস্টেন স্টুয়ার্টরা চোখ টানেন মাঝেমধ্যেই। এখানে আলিয়া ভট্টও পরে ফেলেন ডিজাইনার পঙ্কজ-নিধির ছাপানো এক্সোটিক পোশাক। প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বর্যা রাই বা দীপিকা পাড়ুকোনদের আবার প্রায়ই দেখা যায় ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের ফ্লোরাল প্রিন্টে। অন্য দিকে হবু মা অনুষ্কা শর্মাকে বেশ কিছু দিন আগেই দেখা গিয়েছে ফুলেল লো কাট ব্লাউজে।
আরও পড়ুন: কাঠ-সেরামিকের এই সব গয়নায় বাজিমাত পুজোর ফ্যাশনে
কিন্তু শুধুই নায়িকা আর বিশ্বসুন্দরীরা? প্রিন্টের প্রেমে কি পড়ে নেই হোয়াটসঅ্যাপ প্রজন্মও?
ডিজাইনার দেব-নীল প্রিন্ট নিয়ে প্রচুর এক্সপেরিমেন্ট করে ফেলেছেন। ওঁদের কালেকশনের চে গেভারা প্রিন্টের শাড়ি বা বাইক প্রিন্টের জ্যাকেট, টি-শার্টের চাহিদাতে যেমন আছেন বছর পঞ্চাশের মহিলারা, তেমনই রয়েছেন কুড়ি থেকে তিরিশরা। নীল বললেন, ‘‘এক ৫০ বছরের মহিলা এসে বললেন বাইক প্রিন্টের জাম্পস্যুট তৈরি করে দিতে। বয়সটা কোনও ব্যাপারই নয়। প্রিন্ট ঠিক ভাবে ক্যারি করতে পারার অ্যাটিটিউডটাই আসল।’’ নীনা গুপ্তর মেয়ে মাসাবা বিখ্যাত হয়েছেন তাঁর নিজস্ব প্রিন্ট ভাবনায়। ফুল-হেলিকপ্টার-পাতা-পেঁচা-জংলা প্রিন্টের জন্য।
প্রিন্ট ম্যানিয়া জুতোতেও
খুব উজ্জ্বল রঙে মজাদার প্রিন্টের এই জুতোগুলো আবার দামেও বেশ সস্তা।
জুতো-ডিজাইনার স্বাতী মেহরোত্রা বললেন, এই মরসুমে জুতোর প্রিন্টে হিট পাইনঅ্যাপল প্রিন্ট। আর জুতোয় ফ্লোরাল প্রিন্ট নিয়েও সাঙ্ঘাতিক রকম উত্তেজনা ক্রেতাদের মধ্যে। কিন্তু এই প্রিন্টগুলো কি বানানো, না কি বাজার থেকে কেনা? স্বাতী বললেন, কিছু প্রিন্ট বা মোটিফ বাজারেই কিনতে পাওয়া যায়। আর বাকিটা নিজেরা ডিজাইন করে নেন। ‘‘আমি ডিজিটাল প্রিন্ট নিজেই ডিজাইন করি। এখন হেম্প মেটিরিয়ালেও জুতো ডিজাইন করছি। হেম্প একটা বায়োডিগ্রেডেবল মেটিরিয়াল। আর এতে যে জুতোগুলো বানাচ্ছি, সেগুলো ইকো-ফ্রেন্ডলি। কেমিক্যালি ট্রিটেড চামড়ার জুতো নয়।’’ খুব উজ্জ্বল রঙে মজাদার প্রিন্টের এই জুতোগুলো আবার দামেও বেশ সস্তা।
আরও পড়ুন:পুজোর ফ্যাশনে পরিবেশ বাঁচানোর ডাক, আপনি কী ভাবছেন?
কুশনে পুরনো কলকাতা
কেমন হয় যদি সিপিয়া টোনে আপনার কুশন কভারের উপর দিয়ে চলে যায় পুরনো কলকাতার ট্রামলাইন? বা আপনার পর্দায় লেদারের ঝিলিমিলিতে ধরা পড়ে রেট্রো কোনও প্রিন্ট? আপনার ঘর, আসবাবগুলোকে প্রিন্ট দিয়ে বদলে ফেলতে পারেন চাইলেই। এমনটাই মনে করেন ডিজাইনার অভিষেক দত্ত। যাট-সত্তরের দশকের ভিন্টেজ প্রিন্ট রীতিমতো টানে অভিষেককে। ‘‘আমি যে কুশন বা ড্রেস করছি, তাতে রেট্রো, ভিন্টেজ প্রিন্ট নিয়ে কাজ করছি অনেক। সিপিয়া টোনে পুরনো কলকাতার মোটিফও রাখছি আমার কাজগুলোতে। পেয়ে যাবেন জ্যামিতিক প্যাটার্নেও। আর প্রত্যেকটাই করছি ব্রাইট কালারে। আসলে লোকে বেডরুমটাকে ক্লাসি রাখলেও লিভিং রুম নিয়ে প্রচুর এক্সপেরিমেন্ট করে আজকাল,’’ জানান অভিষেক।
হাতে বুনোট নস্টালজিয়া
আর ব্যাগ? নামজাদা ব্যাগ প্রস্তুতকারী এক আন্তর্জাতিক সংস্থার ক্রিয়েটিভ হেড রাশি আগরওয়াল জানালেন, তাঁদের তৈরি ব্যাগে এখন অ্যানিম্যাল বা ফ্লোরাল প্রিন্টের আধিক্যই বেশি। কথায় কথায় রাশি বললেন, ‘‘আমাদের ব্যাগ বেশিটাই ক্রোকোডাইল লেদারের তৈরি। ফ্লোরাল আর নানা মোটিফের অ্যানিম্যাল প্রিন্টের ব্যাগ সবাই খুব ব্যবহার করছেন এখন। আর আমরাও ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে ব্যাগে এই প্রিন্টগুলোই বেশি করে নিয়ে আসছি।’’
আরও পড়ুন: পুজোর সাজে সঙ্গী থাকুক হাতে বোনা এই সব শাড়ি
লেপার্ড প্রিন্টের ফার কোটে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।
অন্য এক সংস্থার ব্র্যান্ড ম্যানেজার দীপেন দেশাই বললেন, তাঁরা ভেজিটেবল ট্যানড ফুল গ্রিন লেদার দিয়ে তৈরি করেন তাঁদের সব ব্যাগ। সেই লেদার ব্যাগগুলোতে বেশির ভাগই থাকে ক্রোকোডাইল, লিজার্ড বা স্নেক মোটিফ। ‘‘আমরা ভেজিটেবল ট্যানড লেদারেই বেশি কাজ করি। বড় বড় হাতের বুনোটে তৈরি প্রিন্টও এখন দেওয়া হচ্ছে আমাদের ব্যাগে। ক্রেতারা দারুণ পছন্দও করছেন। তবে আমাদের প্রিন্ট বেশিটাই নেচার ইন্সপায়ার্ড’’, বলেন দীপেন।
পপ। রক। নেচার— প্রিন্ট থেমে নেই পোশাকআশাকের অভিনবত্বে। গেঁথে রয়েছে আমাদের জীবনেও।অতিমারির পরিসংখ্যান ভুলে এ বার পুজোয় মাস্ক থেকে পোশাকে আনুন ছাপার আনন্দ!
আপনার স্মার্টফোনের ব্যাক কভারটাই উল্টে দেখুন। দারুণ একটা প্রিন্টে সাজানো... ঠিক বলেছি না?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy