Kali Puja 2022: Different kind of ghosts and their significant in Bengali Culture dgtl
ভূতের কথা
বিশ্বাসে মিলায় ভূত, জানেন তাদের নামযশের ইতিবৃত্ত?
ভূত মানেই যেন এক গা ছমছমে শিহরণ! মনে হয় কে যেন দেখছে অন্ধকারের ওপাশ থেকে! এই বুঝি এল, আর প্রাণটা গেল বেঘোরে! আচ্ছা, সব থেকে ভয়ঙ্কর ভূত কে?
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ১৫:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১১
গল্প, সিনেমা, রূপকথা, লোককথায় ভূতের স্থান পাকা হয়েছে বহু কাল আগেই।
প্রতীকী ছবি। সৌজন্যে গুগল
০২১১
অনেকের বিশ্বাস, মানুষের মৃত্যুর পরে তার আত্মা মুক্তি না পেলে তা অশরীরী রূপ নেয়। কী ভাবে মৃত্যু হল, তার উপরে নির্ভর করে কী ধরনের অশরীরী হয়ে উঠবে সে। আর সেই ভাবনা থেকেই জন্ম নিয়েছে মামদো, নিশি, পেত্নিরা! ভূতেদের রকমফের ঠিক কেমন?
০৩১১
ব্রহ্মদৈত্য-ভূতের মধ্যে যদি কারও আভিজাত্য থাকে, তবে সে হল ব্রহ্মদৈত্য। কথিত, কোনও ব্রাক্ষণ মারা গিয়ে ভূত হলে সেই ব্রহ্মদৈত্য হয়। এদের পরনে থাকে ধুতি ও পৈতে। বিবরণ শুনে মনে হতেই পারে সাত্ত্বিক! আদতে কিন্তু তা নয় মোটেও।
০৪১১
মামদো -ভীষণ গম্ভীর ও বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন হল মামদো। এদেরও আবার প্রকার আছে। অমাবস্যার ঘন কালো রাতে আলেয়ার দেখা মেলে। কিছু ভূত আবার উঁচু-উঁচু তেঁতুল, শেওড়া, তাল গাছের মাথায় অবস্থান করে। এরা হল গেছোভূত।
০৫১১
পেত্নি -ভুতেদেরও নারী-পুরুষের ভেদাভেদ আছে খানিক। ভূত সম্প্রদায়ের মহিলা প্রতিনিধি হল পেত্নি। মনে করা হয়, অবিবাহিতা নারী অতৃপ্তি নিয়ে মারা গেলে তারা হয় পেত্নি। এরা সাধারণত মৃত্যুর পরেও খারাপ অভিসন্ধি নিয়ে পৃথিবীতে বিচরণ করে। ভীষণ বদমেজাজি এবং আক্রমণাত্মকও বটে।
০৬১১
শাঁকচুন্নি-লাল পাড় সাদা শাড়ি ও হাতে শাঁখা। ভূত হিসেবে শাঁকচুন্নি কিন্তু যথেষ্ট সাজ-সচেতনা। মূলত বিবাহিত নারীদের উপরে ভর করে এই ভূতগোষ্ঠীর মহিলা প্রতিনিধি। কারণ এদের লক্ষ্যই হল সধবা মহিলাদের মতো জীবনযাপন এবং স্বামীর সঙ্গে বিবাহিত জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করা।
০৭১১
চোরাচুন্নি- চোরাচুন্নি ভীষণই ভয়ঙ্কর ভূত। এরা কোনও বাড়িতে প্রবেশ করলে বাড়ি তছনছ করে দেয়। বলা হয়, চোর চুরি করার সময় অপঘাতে মারা গেলে হয় চোরাচুন্নি ভূত।
০৮১১
মেছো ভূত - মাছে-ভাতে বাঙালির শান্তি নেই মোটে! মাছপ্রেমী বাঙালির হেঁশেলে হানা দিয়েছে মাছপ্রিয় মেছো ভূত! এই ভূতের প্রিয় খাবার মাছ, তাই এ হেন নাম। রাতে যদি কেউ মাছ নিয়ে যায় আর মেছো ভূতের খপ্পরে পড়ে, তা হলে তার আর রক্ষে নেই! বিশেষত গ্রামগঞ্জে এদের উৎপাতের গল্প দেদার।
০৯১১
নিশি- ভুত সমাজে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হিসাবে গণ্য করা হয় নিশিকে। গভীর রাতে শিকারকে তার প্রিয় মানুষের গলায় নাম ধরে ডাকে নিশি। সে ডাকে সাড়া দিয়ে বেরোলে আর বাড়ি ফেরে না লোকে। প্রচলিত যে, নিশিরা দু’বারের বেশি কাউকে ডাকতে পারে না।
১০১১
স্কন্ধকাটা- মাথা থাকে না বলেই এই ভূতেদের ‘স্কন্ধকাটা’ বলা হয়। কোনও দুর্ঘটনায় মাথা কাটা গিয়েছে, এমন লোকদের আত্মাই নাকি স্কন্ধকাটা ভূতে পরিণত হয়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, এই ভূতেরা সব সময়ে তাদের হারানো মাথার খোঁজ করে।
১১১১
এঁরা ছাড়াও, বাংলায় বেঘোভূত, মাথাকাটা, কানাভুলো ইত্যাদি নানা প্রকার ভূতের সন্ধা্ন মেলে। সামনেই ভূত চতুর্দশী। ওদের একসঙ্গে হওয়ার দিন। মানে, মানুষের যেমন রি-ইউনিয়ন হয় আর কী! ভূতেরা যাতে নির্বিঘ্নে স্বজাতির সঙ্গে দেখা করতে পারে, সেটা খেয়াল রেখে ওই দিনে চোদ্দো শাক খেতে আর চোদ্দো প্রদীপ জ্বালাতে ভুলবেন না যেন! তা ছাড়া সকলের নামযশ তো জানাই হয়ে গেল, এ বার ভূত চতুর্দশীতে একটু চোখ-কান খোলা রাখবেন নাকি?
প্রতীকী ছবি। এই প্রতিবেদনটি আনন্দ উৎসব ফিচারের একটি অংশ।