Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Kali Puja 2021

Kali Puja 2021: কালী-কৃপায় দৃষ্টি ফিরে পেয়ে বর্গি সর্দার বলে উঠেছিলেন, ‘মা-ই তো কালী’

কথিত আছে, কয়েকশো বছর আগে এক রাতে বাঁকু়ড়ার সোনামুখীকে বর্গি হানার হাত থেকে বাঁচিয়েছিল মা-ই-তো কালী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২১ ১৪:০১
Share: Save:
০১ ১০
‘খোকা ঘুমোলো, পাড়া জুড়োলো, বর্গি এলো দেশে...’ অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি দীর্ঘ ন’বছর বর্গি হানায় তটস্থ ছিল বাংলা। কথিত আছে, কয়েকশো বছর আগে এক রাতে বাঁকু়ড়ার সোনামুখীকে বর্গি আক্রমণের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন মা-ই-তো কালী। সাড়ে তিনশো বছর সেখানে পূজিত তিনি। দেবী কালিকার এই রূপের সঙ্গে জড়িয়ে বাংলার বর্গি হামলার রোমাঞ্চকর ইতিহাস, গল্প-কাহিনি।

‘খোকা ঘুমোলো, পাড়া জুড়োলো, বর্গি এলো দেশে...’ অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি দীর্ঘ ন’বছর বর্গি হানায় তটস্থ ছিল বাংলা। কথিত আছে, কয়েকশো বছর আগে এক রাতে বাঁকু়ড়ার সোনামুখীকে বর্গি আক্রমণের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন মা-ই-তো কালী। সাড়ে তিনশো বছর সেখানে পূজিত তিনি। দেবী কালিকার এই রূপের সঙ্গে জড়িয়ে বাংলার বর্গি হামলার রোমাঞ্চকর ইতিহাস, গল্প-কাহিনি।

০২ ১০
কোথাও তিনি ডাকাতে কালী। লোকের বাড়িতে লুঠপাট করতে যাওয়ার আগে নিজে হাতে পুজো দিতেন ডাকাত সর্দার। কোথাও আবার এই বর্গি-হামলা থেকে রেহাই পেতে মানুষ শরণ নিতেন তাঁর কাছে। দেবী সেখানেও সদয়। অন্তত সোনামুখীর মানুষের তেমনই বিশ্বাস।

কোথাও তিনি ডাকাতে কালী। লোকের বাড়িতে লুঠপাট করতে যাওয়ার আগে নিজে হাতে পুজো দিতেন ডাকাত সর্দার। কোথাও আবার এই বর্গি-হামলা থেকে রেহাই পেতে মানুষ শরণ নিতেন তাঁর কাছে। দেবী সেখানেও সদয়। অন্তত সোনামুখীর মানুষের তেমনই বিশ্বাস।

০৩ ১০
 বাংলার মূল উৎসব কোনটি? অনেকেই এক কথায় বলবেন দুর্গাপুজো। কিন্তু সোনামুখীর কাছে উৎসব মানে কালীপুজো। এলাকার প্রায় শতাধিক কালীপুজোর মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ও জাগ্রত এই মা-ই-তো কালী। কেন এমন অদ্ভুত নাম?

বাংলার মূল উৎসব কোনটি? অনেকেই এক কথায় বলবেন দুর্গাপুজো। কিন্তু সোনামুখীর কাছে উৎসব মানে কালীপুজো। এলাকার প্রায় শতাধিক কালীপুজোর মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ও জাগ্রত এই মা-ই-তো কালী। কেন এমন অদ্ভুত নাম?

০৪ ১০
জানতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে প্রায় তিনশো বছর। আঠেরো শতকের মাঝামাঝি। বাংলায় তখন লাগাতার হামলা চালাচ্ছে মরাঠি সেনাপতি ভাস্কর পণ্ডিত ও তার দলবল। তাদেরই রুখে দিল বাংলার মল্ল সেনারা। বাধা পেয়ে মল্ল রাজধানী বিষ্ণুপুরে লুটপাটের সিদ্ধান্ত বাতিল করে মরাঠি বর্গিরা চলল সোনামুখীর উদ্দেশে।

জানতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে প্রায় তিনশো বছর। আঠেরো শতকের মাঝামাঝি। বাংলায় তখন লাগাতার হামলা চালাচ্ছে মরাঠি সেনাপতি ভাস্কর পণ্ডিত ও তার দলবল। তাদেরই রুখে দিল বাংলার মল্ল সেনারা। বাধা পেয়ে মল্ল রাজধানী বিষ্ণুপুরে লুটপাটের সিদ্ধান্ত বাতিল করে মরাঠি বর্গিরা চলল সোনামুখীর উদ্দেশে।

০৫ ১০
নিঝুম এক সন্ধ্যার স্তব্ধতা ভেঙে বর্গি এল সোনামুখীর রানির বাজারে। কথিত আছে, গাছপালা ঘেরা এক মন্দিরে প্রদীপের আলোয় তারা দেখে— এক বৃদ্ধ পুরোহিত বলির হাঁড়িকাঠের সামনে ভক্তিভরে প্রণাম করছেন দেবীকে। প্রবল পরাক্রমে ভাস্কর পণ্ডিত সেই বৃদ্ধকে বলি দিতে উদ্যত হলে দৈববলে তাঁর হাতের খড়্গ আটকে যায়। সঙ্গে হারিয়ে ফেলেন দৃষ্টিশক্তিও।

নিঝুম এক সন্ধ্যার স্তব্ধতা ভেঙে বর্গি এল সোনামুখীর রানির বাজারে। কথিত আছে, গাছপালা ঘেরা এক মন্দিরে প্রদীপের আলোয় তারা দেখে— এক বৃদ্ধ পুরোহিত বলির হাঁড়িকাঠের সামনে ভক্তিভরে প্রণাম করছেন দেবীকে। প্রবল পরাক্রমে ভাস্কর পণ্ডিত সেই বৃদ্ধকে বলি দিতে উদ্যত হলে দৈববলে তাঁর হাতের খড়্গ আটকে যায়। সঙ্গে হারিয়ে ফেলেন দৃষ্টিশক্তিও।

০৬ ১০
অনুতপ্ত বর্গি সেনাদলের অনুরোধে শেষমেশ দৃষ্টি ফিরে পান ভাস্কর। এই অলৌকিক ঘটনা দেখে মরাঠি সেনারা চিৎকার করে ওঠেন, ‘মা-ই তো মা, কালী হ্যায়।’ সেই থেকে মায়ের নাম মা-ই-তো কালী। কয়েকশো বছর আগে বর্গি হানা থেকে রক্ষা পাওয়ার সেই কাহিনি আজও মনে রেখেছে সোনামুখী।

অনুতপ্ত বর্গি সেনাদলের অনুরোধে শেষমেশ দৃষ্টি ফিরে পান ভাস্কর। এই অলৌকিক ঘটনা দেখে মরাঠি সেনারা চিৎকার করে ওঠেন, ‘মা-ই তো মা, কালী হ্যায়।’ সেই থেকে মায়ের নাম মা-ই-তো কালী। কয়েকশো বছর আগে বর্গি হানা থেকে রক্ষা পাওয়ার সেই কাহিনি আজও মনে রেখেছে সোনামুখী।

০৭ ১০
মা-ই-তো কালীপুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ শ্রীকান্ত দে বলেন, ‘‘পুরনো ঐতিহ্য মেনে আজও বিসর্জনের সময় কোচডিহি গ্রামের ৪২ জন বেহারা মন্দির থেকে প্রতিমা কাঁধে চাপিয়ে গোটা সোনামুখী শহর প্রদক্ষিণ করেন। পরে স্থানীয় একটি পুকুরে বিসর্জন হয়।’’

মা-ই-তো কালীপুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ শ্রীকান্ত দে বলেন, ‘‘পুরনো ঐতিহ্য মেনে আজও বিসর্জনের সময় কোচডিহি গ্রামের ৪২ জন বেহারা মন্দির থেকে প্রতিমা কাঁধে চাপিয়ে গোটা সোনামুখী শহর প্রদক্ষিণ করেন। পরে স্থানীয় একটি পুকুরে বিসর্জন হয়।’’

০৮ ১০
নিরঞ্জন হয় কেবল কালী-প্রতিমার। ঘট বিসর্জন হয় না। অপেক্ষা চলে  পরের বছরের। নতুন বছরে পুজোর সময়ে আগের ঘট বিসর্জন দিয়ে নতুন ঘট প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ ভাবেই পুরনো রীতি ও ঐতিহ্য মেনে পুজো পান মা-ই-তো কালী।

নিরঞ্জন হয় কেবল কালী-প্রতিমার। ঘট বিসর্জন হয় না। অপেক্ষা চলে পরের বছরের। নতুন বছরে পুজোর সময়ে আগের ঘট বিসর্জন দিয়ে নতুন ঘট প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ ভাবেই পুরনো রীতি ও ঐতিহ্য মেনে পুজো পান মা-ই-তো কালী।

০৯ ১০
শ্রীকান্ত বলছেন, ‘‘পুজো ও তার পরের দু’দিন দূরদূরান্ত থেকে মায়ের মন্দিরে আসেন মানুষ। এই মন্দিরে প্রার্থনা জানালে মা কাউকে ফিরিয়ে দেন না বলেই আমাদের বিশ্বাস।’’ করোনা পরিস্থিতিতে এ বছরও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হবে কালীপুজো।

শ্রীকান্ত বলছেন, ‘‘পুজো ও তার পরের দু’দিন দূরদূরান্ত থেকে মায়ের মন্দিরে আসেন মানুষ। এই মন্দিরে প্রার্থনা জানালে মা কাউকে ফিরিয়ে দেন না বলেই আমাদের বিশ্বাস।’’ করোনা পরিস্থিতিতে এ বছরও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হবে কালীপুজো।

১০ ১০
মূর্তি গড়া হয় মন্দিরের ভিতরেই। বহু মানুষের বিশ্বাস, মা-ই-তো কালী খুব জাগ্রত। এই বিশ্বাসেই বেঁচে আছে তিনশো বছরের ইতিহাস, বর্গি হানার ত্রাসের কাহিনি, আর বাংলার প্রতিরোধের স্মৃতি।

মূর্তি গড়া হয় মন্দিরের ভিতরেই। বহু মানুষের বিশ্বাস, মা-ই-তো কালী খুব জাগ্রত। এই বিশ্বাসেই বেঁচে আছে তিনশো বছরের ইতিহাস, বর্গি হানার ত্রাসের কাহিনি, আর বাংলার প্রতিরোধের স্মৃতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy