Durga Puja 2021: Bengali dishes you must try at home during this Durga Puja dgtl
Durga Puja 2021
Durga Puja 2021: সারা বছর মোমো-পিৎজায় মজে থাকেন? সাবেক বাঙালি রান্নায় হোক পুজোর স্বাদবদল
এ বারও হয়তো বাড়ি বসেই কেটে যাবে পুজো। বাইরে বেরোনো হয়ে উঠতে পারে দুষ্কর। কিন্তু দুর্গাপুজোয় ভাল খাওয়াও হবে না?
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৬:১০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১১
অতিমারির প্রকোপ কাটার দিকে গোটা বিশ্ব এগোনো শুরু করতেই তৃতীয় ঢেউয়ের পূর্বাভাসে ফের আশঙ্কায় আসন্ন পুজোর যাবতীয় আনন্দ। হয়তো এ বারও বাড়িতে বসেই কেটে যাবে পুজোর পাঁচটি দিন। রেস্তরাঁয় বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা হবে না। কিন্তু দুর্গাপুজো আসবে, আর বাঙালির জীবনে উত্সবের ছোঁয়া থাকবে না, এও কি সম্ভব? বাঙালির পুজোর ঐতিহ্যের অংশ হয়ে থাকা এই চিরসবুজ পদগুলি বাড়িতে বানিয়ে নিন সহজেই। পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই সমস্ত পদ উত্সবের স্বাদকে অনায়াসে নিয়ে আসবে আপনার বাড়িতে।
০২১১
নিরামিষ চিংড়ির মালাইকারি: না, নামটা ভুল পড়েননি। ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের সময়ে যখন গোটা উপমহাদেশ উত্তাল, তখন উত্তর কলকাতার চোরবাগানে দুর্গাপুজা শুরু করেছিলেন রাজা রামচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। সেই ঐতিহ্যপূর্ণ পুজোর এক বিশেষ অংশ হচ্ছে বহু যুগ ধরে তাঁদের পরিবারের খাদ্যতালিকায় জায়গা করে নেওয়া নিরামিষ চিংড়ির মালাইকারি। পেয়াঁজ-রসুনবিহীন চিংড়ির এই সুস্বাদু পদটি এক নিমেষে আপনার ষষ্ঠীর সকালে পুজোর আমেজকে আরও ঝলমলে করে দিতে পারে।
০৩১১
ভাপা ইলিশ: বাঙালির ইলিশের সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। বাঙালির জীবনের যে কোনও দিনে এক রাশ আনন্দ নিয়ে আসার জন্য ইলিশের থেকে বেশি ভাল আহ্বায়ক খুব একটা কেউ হতে পারে না। এমন সম্পর্ক যে পুজোর মুহূর্তকে আরও কয়েক গুণ আহ্লাদের করে তুলবে, তা বলাই বাহুল্য। ষষ্ঠীর রাতে ভাপা ইলিশ সহযোগে আপনার প্রিয়জনদের সঙ্গে মেতে উঠুন পুজোর উল্লাসে।
০৪১১
মাছের চপ: মাছের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক যে পুজোর সময়ে বাঙালির খাদ্যতালিকায় প্রাধান্য পাবে, এতে সন্দেহের কিছু নেই। পুজোর সময়ে ভালমন্দ খাওয়ার প্রবল ইচ্ছার মধ্যে মাছের সঙ্গে বাঙালির রসনার এই গভীর আঁতাঁতের আখ্যানে আর একটি সংযোজন হল সপ্তমীর সকালের মাছের চপ। অতিপরিচিত এই সুস্বাদু পদটি পুজোর দিনে আপনার সপ্তমীকে মুহূর্তের মধ্যে আরও উত্ফুল্ল করে দিতে পারে।
০৫১১
বিরিয়ানি: বাঙালির পুজো এসে যাবে আর বিরিয়ানির সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হবে না, এমন অকল্পনীয় বিপর্যয়ের আশঙ্কা আমরা এই মুহূর্তে না করলে বিশেষ ভুল হবে না। চিকেন হোক বা মটন, বিরিয়ানির সঙ্গে এই সুগভীর নির্লজ্জ প্রেমালাপ বাঙালির চিরকালের। তাই সপ্তমীর রাতে সুস্বাদু পদের সহকারে আপনার প্রিয় মানুষের সঙ্গে উত্সবের প্রেমের আমেজকে বাড়িতে নিয়ে আসুন অনায়াসে।
০৬১১
খিচুড়ি: অষ্টমীর সকালের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকা পদটি হল খিচুড়ি। অঞ্জলির পরেই পাড়ায় পাড়ায় পুজোর মণ্ডপের বাইরে লম্বা লাইন পড়ে ভোগের জন্য। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই অভ্যাসের জুড়ি মেলা ভার। তাই বাঙালির অষ্টমীর দুপুরে খিচুড়ি নেই, এমন দৃশ্য শুধুমাত্র বিরল নয়, অপ্রত্যাশিতও বটে।
০৭১১
লুচি-আলুর দম: অষ্টমীর দিন বহু বাড়িতেই ভাত বা চালের কোনও পদ খাওয়ার চল নেই। আবার অন্য দিকে বাঙালির লুচি-আলুর দমের সঙ্গে বন্ধুত্ব বহু যুগের। অত্যন্ত পরিচিত এই পদটি বাঙালির উত্সবের বাড়িতে থাকবে না, এমন হওয়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই। তাই অষ্টমীর রাতে, উৎসবের আমেজকে বাড়িতে নিয়ে আসতে বানিয়ে ফেলতেই পারেন লুচি-আলুর দম।
০৮১১
মাংসের ডাল: অষ্টমীতে পাঁঠা বলির চল ছিল বহু বাড়িতেই। পরদিন তাই পাঁঠার মাংস খাওয়া হত দু’বেলা। কষা মাংস তো হতই, সঙ্গে ডালেও পড়ত মাংস। ওপার বাংলার এই বিশেষ সুপরিচিত পদটি দিয়ে আপনার নবমীও অনায়াসেই আরও সুস্বাদু করে তুলতে পারেন। মাংস দিয়ে তৈরি এই ডাল বরিশালের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পদ। উত্সবের দুপুরে পরোটা, রুটি, বা ভাতের সঙ্গে মাংসের ডাল নিয়ে আপনার রসনাকে তৃপ্ত করুন।
০৯১১
কষা মাংস: মটনের নিত্য নতুন পদ হেঁশেলে এলেও, বাঙালির মননে কষা মাংসের মতো জায়গা দখল করে রাখা খুব একটা কেউ কোনও দিন করে উঠতে পারেনি। লুচি বা ভাত সহকারে বিজয়ার আগের রাতে উত্সবের আনন্দকে আরও সুগভীর ভাবে অনুভব করুন এই অতিপরিচিত সুস্বাদু পদের সঙ্গে। বাঙালির পছন্দের তালিকায় গোলবাড়ির কষা মাংস এখনও শীর্ষস্থানে। এ বার পুজোয় নিজের রান্নাঘরেই চেষ্টা করুন সে স্বাদ তৈরি করতে।
১০১১
নাড়ু: বিজয়া দশমীর সঙ্গে মিষ্টির সম্পর্ক বহুকালের। মিষ্টির মধ্যে নাড়ু দশমীর দিনে বাঙালির খাদ্যতালিকায় উপরের দিকেই থাকে। দশমীর দিনের উত্সব-শেষের বিষন্নতা এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে থাকার আন্তরিকতার মুহূর্তের শরিক হয়ে থাকে বিভিন্ন মিষ্টি, যার মধ্যে নাড়ু অন্যতম। মিষ্টিমুখ করে বিসর্জন হয়ে গেলে আপনার কাছের মানুষদের সঙ্গে এই বছরের পুজোয় শেষ বারের মতো উত্সবকে অনুভব করুন।
১১১১
নিমকি: মিষ্টির পাশাপাশি নিমকিও দশমীর দিনে বিসর্জন-পরবর্তী সময়ে আমাদের ঘরে ঘরে অত্যন্ত প্রচলিত। বিসর্জনের পর ঘরে ফিরে এসে সেই নিস্তব্ধতার সময়ে গোটা বাড়ি বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগে। উত্সবের শেষ মুহূর্তগুলোকে সহজে যেতে দিতে ইচ্ছে করে না। বাড়ির চোট-বড় সকলে একসঙ্গে নিমকি এবং মিষ্টি নিয়ে একান্তে সময় কাটিয়ে আপনার উত্সবের রেশকে স্নিগ্ধ করে তুলুন।