Durga Puja 2020: Famous Durga Temples in India dgtl
Durga Puja 2020
বিখ্যাত এই সব দুর্গামন্দিরের কোনওটার সঙ্গে জড়িত আকবরের নাম, কোথাও দেবী পাথরে পরিণত
সতীপীঠগুলি ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন অংশ আছে বহু দুর্গামন্দির। রইল তারই হদিস।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
সতীপীঠগুলি ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন অংশ আছে বহু দুর্গামন্দির। তার মধ্যে বেশ কিছু মন্দির প্রাচীনত্ব ও জনপ্রিয়তার নিরিখে রয়েছে প্রথম সারিতে। শুধু শরতের নির্দিষ্ট দিনগুলিতে নয়, সেই সব দেবস্থানে বছরভরই দেবীপক্ষ। এখানে বলা হল সে রকমই কিছু মন্দিরের কথা। যার মধ্যে কিছু সতীপীঠ। কিছু মন্দিরের সঙ্গে আবার জড়িয়ে আছে অন্য মাহাত্ম্য। এই ধর্মীয় স্থানগুলিতে বিভিন্ন রূপে পূজিত হন দেবী দুর্গা।
০২২০
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত, জম্মু থেকে ৬০ কিমি উত্তরে এই মন্দির ভক্তদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। একটি গুহার মধ্যে এই দেবস্থানে পূজিত হন দেবী কালী, দেবী সরস্বতী ও দেবী লক্ষ্মীর বিগ্রহ। বৈষ্ণবী থেকেই পীঠস্থানের নামকরণ বৈষ্ণোদেবী।
০৩২০
কথিত, দেবী গৌরী, লক্ষ্মী ও সরস্বতীর শক্তি মিলিত হয়ে সৃষ্টি হয়েছেন দেবী বৈষ্ণবী। বিষ্ণুভক্ত এই দেবী তাঁর উপাস্য দেবতাকেই বিবাহ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সেই প্রার্থনা পূর্ণ হয়নি। পরে দেবী আশ্বাস পান, কলিযুগে বিষ্ণুর দশম অবতার কল্কিদেব তাঁকে বিবাহ করবেন। তাঁর জন্য অপেক্ষা করতে হবে বৈষ্ণবীকে।
০৪২০
দুর্গম পাহাড়ের গুহায় সেই অপেক্ষাতেই তপস্যা করে চলেছেন তিনি। ভৈরবনাথ নামে এক তান্ত্রিক তাঁর প্রতি কামার্ত দৃষ্টিপাত করায় তিনি মহাকালী রূপ ধারণ করে তান্ত্রিকের মুণ্ডচ্ছেদ করেন। মৃত্যুর পরে অবশ্য তিনি ভৈরবনাথকে ক্ষমা করেন। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী বৈষ্ণবী স্বয়ং এখানে তিনটি প্রস্তরখণ্ডে রূপান্তরিত হয়েছেন।
০৫২০
চামুণ্ডারূপে দেবী পূজিত হন হিমাচল প্রদেশের কাংড়া জেলায়। চণ্ড এবং মুণ্ড, দুই দৈত্যকে এই রূপে বধ করেছিলেন বলে এই রূপের নাম চামু্ণ্ডা। পালমপুর থেকে ১০ কিমি পশ্চিমে বানের নদীর পাশে এই পীঠস্থানে প্রায় চারশো বছর আগে পুজো শুরু হয়েছিল বলে প্রচলিত বিশ্বাস।
০৬২০
হিমাচল প্রদেশের কাংড়া উপত্যকা থেকে ৩০ কিমি দূরত্বে আছে জ্বালামুখী মন্দির। পাথরখণ্ডের ফাঁকে আগুনের শিখাকে এখানে পুজো করা হয়। এই আগুনের শিখা থেকেই মন্দিরের নাম জ্বালামুখী। কথিত, বিষ্ণুর তেজ থেকে সৃষ্টি হয় আগুনের শিখা। সেই শিখা থেকে কিশোরীর রূপে জন্ম নেয় আদিশক্তি। পরে সেই শক্তির কাছে বিনাশ হয় এক দৈত্যের। এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রঞ্জিত সিংহ এবং সম্রাট আকবরের দানও।
০৭২০
মারাঠাদের হাতে ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত দিল্লির কালকা দেবী মন্দিরে মাতৃশক্তি পূজিত হয় দেবী কালী রূপে। প্রচলিত বিশ্বাস, এই স্থানে পাণ্ডবদের হাতে পূজিত হয়েছিলেন দেবী কালী। সেই ধারা অনুসরণ করেই পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত হয় মন্দির। তান্ত্রিক মতে আরতি এই মন্দিরের বিশেষ বৈশিষ্ট।
০৮২০
অষ্টাদশ শতাব্দীতে বারাণসীর দুর্গা মন্দির নির্মাণ করিয়েছিলেন পূর্ববঙ্গের নাটোরের রানি ভবানী। উত্তর ভারতের বিখ্যাত নির্মাণশৈলি নাগারা রীতিতে তৈরি হয়েছিল এই মন্দির। এর প্রাঙ্গণে যে পুকুর আছে, সুদূর অতীতে তার সঙ্গে গঙ্গার সংযোগ ছিল। ভক্তদের বিশ্বাস, মন্দিরের ভিতরে যে দেবী বিগ্রহ তা কেউ নির্মাণ করেননি. বরং, সেটি নিজে থেকেই সৃষ্টি হয়েছিল।
০৯২০
অসমের নীলাচল পাহাড়ের উপর মাতৃকাশক্তি পূজিত হন কামাখ্যা নামে। তবে বহু ইতিহাসবিদের মতে, কামাখ্যা প্রকৃতপক্ষে গারো ও খাসি উপজাতির দেবী কামিখ্যের পরিবর্তিত রূপ। কীরাত উপজাতির ধারা মেনে এখনও এই দেবস্থানে প্রাণীবলি হয়। এই মন্দিরে মহাসমারোহে পালন করা হয় অম্বুবাচী।
১০২০
রাজস্থানের মাউন্ট আবু থেকে তিন কিমি দূরে পাহাড়ের উপরে অবস্থিত অধর দেবীর মন্দির। বলা হয়, এখানে সতীর অধর পড়েছিল। সেই থেকে পীঠস্থানের নামকরণ। এর আর এক নাম অর্বুদ দেবী। ৩৬৫ ধাপ সিঁড়ি পেরিয়ে গুহায় প্রবেশ করে তবে দেবী বিগ্রহ দেখতে পান ভক্তরা।
১১২০
মহারাজা গঙ্গা সিংহের আমলে তৈরি হয়েছিল ৬০০ বছরের প্রাচীন এই মন্দির। পঞ্চদশ শতাকের এই মন্দিরে পূজিত হন দেবী কারনি মাতা। তাঁকে দেবী দুর্গার অবতার বলে মনে করা হয়। রাজসিক রুপোর সিংহদ্বারের পিছনে এই মন্দিরের প্রধান আকর্ষণ প্রায় ২০ হাজার ইঁদুর। তাদের দেখতে পেলে পুণ্যসঞ্চয় করা যায় বলে বিশ্বাস ভক্তদের।
১২২০
গুজরাতের জুনাগড়ে পবিত্র গিরনার পবর্তের উপরে বিরাজ করছে অম্বামাতা মন্দির। দ্বাদশ শতাব্দীতে নির্মিত এই মন্দির ভক্ত এবং পর্যটকদের পছন্দের গন্তব্য।
১৩২০
উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালে হ্রদের তীরে অবস্থিত নয়না দেবীর মন্দির। পৌরাণিক মতে, এখানে সতীর চোখ বা নয়ন পড়েছিল। তার থেকেই এই ধর্মস্থানের নামকরণ। দেবীর পাশাপাশি এখানে পূজিত হয় হনুমান এবং গণেশের বিগ্রহও।
১৪২০
কনকদুর্গাকে মনে করা হয় শক্তি, ধনসম্পদ ও ক্ষমার প্রতিভূ। অন্ধ্রপ্রদেশের ইন্দ্রকীলাদ্রি পর্বতের উপর কনকদুর্গার রাজকীয় মন্দির ভক্তদের কাছে খুবই পবিত্র।
১৫২০
কর্নাটকের কটিল দেশের অন্যতম বিখ্যাত মন্দিরশহর। এই শহরের নন্দিনী নদীর মাঝে একটি দ্বীপে আছে শ্রী দুর্গা পরমেশ্বরী মন্দির। চারদিকে সবুজের সমারোহে এই মন্দির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কেন্দ্র।
১৬২০
কর্নাটকের প্রাচীন জনপদ বাদামি থেকে পাঁচ কিমি দূরে দেবী দুর্গা পূজিত হন বনশঙ্করী বা শাকম্ভরী রূপে। এখানে তিনি বন বা জঙ্গলের রক্ষাকর্ত্রী। বাদামির চালুক্য বংশের তিনি ছিলেন কুলদেবী। তবে এখন যে মন্দির দাঁড়িয়ে আছে, সেই কাঠামো নির্মিত হয়েছিল সপ্তদশ শতাব্দীতে। প্রাচীন দ্রাবিড়ীয় স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত এই মন্দিরে দেবীর বিগ্রহ কষ্টিপাথরের। তিনি এখানে সিংহবাহিনী।
১৭২০
ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে ৬০ কিমি দূরত্বে প্রাচীন জনপদ উদয়পুরে দেবী দুর্গা পূজিত হন ত্রিপুরাসুন্দরী রূপে। ১৫০১ খ্রিস্টাব্দে ত্রিপুরার সে সময়কার রাজা ধনমানিক্যের আমলে তৈরি হয়েছিল এই মন্দির।
১৮২০
ছত্তীসগঢ়ের বস্তারে দেবী দুর্গা পূজিত হন দন্তেশ্বরী রূপে। বলা হয়, এখানে সতীর দাঁত পড়েছিল। সেখান থেকেই প্রাচীন এই সতীপীঠের নামকরণ।
১৯২০
মহারাষ্ট্রের কোলাপুরে মহালক্ষ্মী মন্দিরে দেবী বিগ্রহ নির্মিত কষ্টিপাথরে। এই মন্দিরের জনপ্রিয় পার্বণ হল কিরোণৎসব। বছরে দু’বার এই পার্বণ পালিত হয়। সূর্যাস্তের আলো মন্দিরে দেবীবিগ্রহের পা স্পর্শ করা মাত্র এই পার্বণ শুরু হয়।
২০২০
সিমলার তারাদেবী পাহাড়ের নাম হয়েছে তারাদেবীর নামে। দেবদারু গাছের ছায়ায় এই মন্দির তৈরি হয়েছিল আড়াইশো বছর আগে। প্রতি বছর অসংখ্য পুণ্যার্থীর সমাগম হয় এই প্রাচীন মন্দিরে।