Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Kali Puja 2020

ভোরবেলার সেই ধোঁয়া ওঠা খিচুড়ি যেন অমৃত!

বড় হয়েও বাজি পোড়াইনি। তার মধ্যেও কালী পুজোর আলাদা আনন্দ ছিল।

অগ্নিমিত্রা পাল
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২০ ১২:৫১
Share: Save:

বিশ্বাস না করলে কিচ্ছু করার নেই। সত্যিই এ বছর হাতে একদম পয়সাকড়ি নেই। তাই ধনতেরাসে গয়না হবে না। তার বদলে নতুন বাসন কিনব ঠাকুরের। না না, রুপোর বাসন নয়! কাঁসার বাসন আমার খুব প্রিয়। প্রতি বছর শ্বশুরবাড়ির গ্যারাজে ধুমধাম করে পুজো হয় দেবী কালিকার। এ বছর সেটাও মনে হয় নমঃ নমঃ করেই হবে।

ছোট থেকেই বাজির থেকে শত হাত দূরে। বিশেষ করে শব্দবাজি। কানের কাছে দুমদাম ফাটছে চকোলেট বোম, পটকা, দোদোমা! অস্বস্তিতে কুঁকড়ে যেতাম। বড় হয়েও বাজি পোড়াইনি। তার মধ্যেও কালী পুজোর আলাদা আনন্দ ছিল। তখনও দীপাবলি আসতে আসতে শরৎ পেরিয়ে কার্তিক। তখন বিশ্ব উষ্ণায়ণ ছিল না। ফলে, ঠাকুর জলে পড়লেই ঝুপ করে শীত নামত। আমার ছোটবেলায় এই সময় ভাল শীত পড়ে যেত আসানসোলে। তারই মধ্যে প্যান্ডেল খোলা হচ্ছে দুগ্গা মায়ের। মন জুড়ে বিষণ্ণতা। সেই প্যান্ডেলের কিছুটা রেখে মঞ্চ জুড়ে বসতেন দেবী। মঞ্চের গোড়ায় কাঠের সিঁড়ির ধাপ। সেই ধাপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে থাকতাম আমরা, পাড়ার মেয়েরা।

মা-কাকিমাদের রাত জাগা, উপোস। পুজো মিটতে মিটে রাত গড়িয়ে ভোর। আমরাও জেগে বসে থাকতাম বড়দের সঙ্গে। কেন জানেন? ভোরবেলায় গরম গরম খিচুড়ি, লাবড়া আর চাটনির লোভে! বলতে গিয়ে সেই বিজ্ঞাপনী কথাটা ভীষণ মনে পড়ে গেল, ‘অল্পেতে সাধ মেটে না! এ স্বাদের ভাগ হবে না।‘ ধোঁয়া ওঠা খিচুড়ি ফুঁ দিতে দিতে ঠান্ডা হত। খেয়ে মনে হত যেন অমৃত। তখন জীবন কত সহজ ছিল! কত অল্পে সবাই খুশি হয়ে যেতাম! খুব মিস করি সে সব দিন।

ছোট থেকেই বাজির থেকে শত হাত দূরে।

দিওয়ালি ফুরোলেই ভাই ফোঁটা। আমার নিজের কোনও ভাই নেই। তাই তুতো ভাইদের ফোঁটা দিতাম।তখনকার উপহার এখনকার মতো এত দামি কিছু নয়। সত্যজিৎ রায়ের ‘ফেলুদা’ কিংবা ‘টিনটিন’ সিরিজের একটি খণ্ড। সঙ্গে পার্পল কালারের ক্যাডবেরি বার। কী খুশি, কী খুশি! আনন্দে চোখগুলো যেন চকচকে মার্বেল গুলি। এই উপহারেই বর্তে যেতাম সবাই।

আরও পড়ুন: কালীপুজোয় চুল খুলে সন্ধের পর বাইরে! কক্ষণো না...

মামারা আসতেন আমাদের বাড়িতে। মায়ের কাছে ফোঁটা নিতে। মা রান্না করতেন সবার জন্য- ফ্রায়েড রাইস, কষা মাংস। বিয়ের পরে চলে এলাম কলকাতায়। দূরত্ব বাড়ল আসানসোলের সঙ্গে। বদলে শ্বশুরবাড়ির পুজো সমস্ত মনোযোগ কেড়ে নিল। তুতো ভাইরাও বড় হয়ে গেল। তাদের জায়গা নিল ভাইয়ের মতো দেওরেরা। প্রতি বছর ওঁদেরই ফোঁটা দিই। তার পরে বাড়ির মেয়ে-বৌয়েরা মিলে ঠিক করি একটা রেস্তোরাঁ। যেখানে দলবল মিলে পৌঁছে যাই খেতে। পুরো গ্যাংয়ের খরচ দিই, আমরা যাঁরা বয়সে বড়। বদলে ছোটরা আমাদের সিনেমা দেখায় আইনক্সে টিকিট কেটে। বহু বছর ধরে এই রেওয়াজই চলে আসছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy