আমাদের বাড়িতে দেওয়ালি হয়, বন্ধুবান্ধবরা আসে। সংখ্যায় হয়তো খুব বেশি নয়। কারণ সবার বাড়িতেই পুজো থাকে। আর ফিতে কাটা থাকলে আমিই বাড়িতে থাকি না।
দেওয়ালিতে আমাদের বাড়িতে যে রুপোর লক্ষ্মী-গণেশ আছে, তাঁদের পুজো হয়। আর আমাদের একটা কালী ঠাকুর আছে যেটা লন্ডনে তৈরি, দুশো-আড়াইশো বছরের পুরনো। অ্যান্টিক কালী। তাঁরও পুজো হয়। আর আছেন ‘মাতাজি’। মাতাজির কোনও আলাদা মূর্তি নেই। একটা কৌটো আছে আমাদের। প্রত্যেক বছর এটায় ওই দিনে একেকটা কয়েন আমরা যোগ করতে থাকি। ওটাই আমাদের মাতাজি। কৌটোটা পুরনো। আগে দশ পয়সা, পাঁচ পয়সা রাখা হত। এখন পাঁচ টাকা, দশ টাকার কয়েনও রাখা হয়।
আর সাজানো বলতে খুব বেশি গেস্ট আসেন না তো, তাই সাজানোর দিকে খুব বেশি মনোযোগ দিই না। ওইদিন প্রত্যেকটা দরজায় ‘ওঁম’ ও ‘সাথিয়া’ চিহ্ন আঁকা হয় দেয়ালে। এটাকে বাংলায় বোধহয় স্বস্তিকা বলে। রঙ্গোলি হয়, প্রত্যেকটা দরজার সামনে লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ আঁকা হয় সাদা আর লাল রঙে। আমাদের আরও দু’টো ফ্ল্যাট আছে। ওই দু’টো ফ্ল্যাটেও আমরা প্রদীপ জ্বালাই, লক্ষ্মীর পা আঁকি।
আমাদের বাড়িতে খাওয়া দাওয়া মানেই ভেজ। যে কোনও জৈন পরিবারে এটাই নিয়ম। তো ওইদিন ফ্রায়েড রাইস, আলুর দম আর পনিরের একটা সাইড ডিশ থাকে। আর একটা থাকে ‘পেঠা’। আমরা যে নিমকি খাই সেটাই চিনির চাসনিতে ভেজানো থাকে। খুব বেশি মিষ্টি হয় না। এটা বানায় মা, প্রসাদে দেওয়ার জন্য।
আর একটা হয় ‘কুমড়া কা পেঠা’, কুমড়ো দিয়ে তৈরি। বাংলায় এটাকেই মোরব্বা বলে। কিন্তু আমাদের মোরব্বা আলাদা, লেডিকেনির মতো দেখতে হয়। যদি পুজো করে, বাজি ফাটিয়ে হাতে সময় থাকে তো বোনকে নিয়ে, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে দু একটা জায়গায় নিমন্ত্রণ থাকে সেখানে যাই।
আগে কী হত, আমাদের বাড়ির আশেপাশে খুব ভাল ভাল পুজো হয়, সেখানে সবাই মিলে ঘুরতাম আর ঘোরার ফাঁকে বাইরে কিছু খেয়ে নিতাম। কিন্তু এখন ওই ভিড়ের মধ্যে ঘোরা সম্ভব হয় না। আমাদের পাড়ায় ব্যোমদার কালীপুজো খুব বিখ্যাত। পুজোটা ফেমাস নবকালীর জন্য। ওদের ভাসানের জন্য তিন লরি বাজি আসে। প্রত্যেক বছর ওরা একই ধরনের বাজি ফাটায়। এই বাজিগুলো স্পেশালি ওদের জন্যই বানানো হয়। এই ধরনের বাজি আর কোথাও দেখা যাবে না। তো ওদের ভাসানের দিন বাজি পোড়ানো দেখতে খুব ভাল লাগতো। কিন্তু প্রত্যেক বছর একই জিনিস দেখে দেখে এখন আর ভাল লাগে না। আরও দু একটা জায়গায় পুজো ও বাজি ফাটানো দেখতে যেতাম। এখন আর যাওয়া হয় না।
আমাদের ভাইফোঁটা ট্র্যাডিশনাল। ভাইফোঁটার দিন মামাবাড়ি থেকে সবাই আসে আমাদের বাড়ি। আমাদের নিয়ম দাদারা যাবে বোনদের বাড়ি। তো সারাদিন খাওয়া দাওয়া হয়, ফোঁটা দেওয়া হয়। আর আমাকে আমার বোন ফোঁটা দেয়। প্রত্যেক বছর ভাইফোঁটার উপহার হিসেবে বোনকে টাকা দিই। আর সারা বছর ও যা চায় তা তো দিতেই থাকি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy