অভিনেত্রী উষসী রায়
পঞ্চমীতে শুরু হয়ে দশমীতে ভাসান হয়ে যাবে এরকম কোন প্রেম আমার পুজোয় হয়নি, লিখলেন উষসী রায়
ছোটবেলায় পুজো কেটেছে মা-বাবা আর পরিবারের বাকিদের সঙ্গে, গ্রামের বাড়িতে। ষষ্ঠী থেকে লক্ষ্মীপুজো অবধি ঘিরে থাকত দাদু-দিদা, ভাই-বোনেরা, আরও অনেক আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা। তাই বড় হওয়ার দিনগুলোয় কলকাতার পুজো সে ভাবে কখনওই দেখা হয়নি। কলকাতার পুজোয় হাতেখড়ি হল কলেজ জীবনে এসে।
গ্রামে পুজোর সময়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হত। আমিও তাতে অংশ নিতাম, তার আগে চলত রিহার্সাল। অষ্টমীতে আমাদের পরিবারের সবথেকে বড় দাদু গ্রামের সমস্ত বাচ্চাদের খাওয়াতেন তাঁর প্রয়াত স্ত্রীর স্মরণে। সে এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা। ওটাই ছিল আমাদের কাছে উৎসব। বালক ভোজন নাম হলেও বালিকারাও সমান সমান অংশ নিত তাতে। সবাই মিলে ভ্যান রিকশা করে ঠাকুর দেখতে যেতাম। এর পরে নবমীতে পিকনিক আর দশমীর দিন নৌকো করে ভাসান দেখতে যাওয়া- আমার স্বপ্নের মতো পুজো।
পুজোর প্রেম বলতে প্যান্ডেলে মিষ্টি চোখাচোখি হয়েছে। পরপর অনেকগুলো প্যান্ডেলে দেখা হয়েছে, চোখের ভাষা পড়েছি। কিন্তু পঞ্চমীতে শুরু হয়ে দশমীতে ভাসানের মতো প্রেম আমার কখনও হয়নি।
ছোটবেলায় শেষ মুহূর্তে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে যেমন পড়তাম, বড় হয়ে পুজোর আগে কেনাকাটাও তেমনটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বছর অবশ্য আর কিছুই হয়নি। কারণ, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিতে এ বছর আর কেনাকাটা করতে ইচ্ছে করেনি।
যে সমস্ত ফটোশুট বা কাজের কথা অনেক আগে থেকে হয়েছিল, শুধু সে সব করেছি। আলাদা করে পুজো নিয়ে কোনও প্ল্যান বা উত্তেজনা নেই এ বছর। পুজোর আগে যে পরিস্থিতি তৈরি হল, তা একদমই অনভিপ্রেত এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। তবে আমার পেশা বা কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন আরও অনেক মানুষ। তাঁরা অনেকেই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির। তাই আমি চাইলেও হঠাৎ করে সব কাজ বন্ধ করে দিতে পারব না। এতে তাঁদের আর্থিক ক্ষতি হবে।
পুজো পরিক্রমা বা এই সংক্রান্ত কাজগুলো এখন অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। তাই সেগুলো করতেই হয়। পেশাদারী কাজের জন্য কিছু জামাকাপড় কিনতে হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সেগুলো কখনওই পুজোর কেনাকাটার মধ্যে নয়। আসলে সত্যিই এবার মন থেকে ইচ্ছে করেনি উৎসবে অংশ নিতে।
এই প্রতিবেদনটি আনন্দ উৎসব ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy