আলিপুরদুয়ারের শহরতলি ফালাকাটায় বেড়ে ওঠা। প্রচলিত গানের কোনও তালিম ছিল না তাঁর ঝুলিতে। এমনকি ছোটবেলা থেকে আদৌ গানের জগতে আসা নিয়ে কোনও ভাবনা চিন্তাই ছিল না তাঁর। সেই বাঙালি কন্যে মৌসুমি দত্তই বাংলা কাঁপিয়েছেন তাঁর অভিনব কণ্ঠ দিয়ে। এখন তিনি আরব পারে। কেমন চলছে তাঁর মুম্বইয়ের ঘরকন্না? পুজোতেই বা কী কী করবেন? জানালেন আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনকে।
ছোট থেকে মায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি কত্থকে পারদর্শী। ঠুমরির সুরে ‘ভাব ও অভিনায়া’ থেকে সূত্র পেয়ে কলকাতায় প্রথম এসেছিলেন অভিনয় করতেই। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাটক নিয়ে স্নাতক স্তরের পড়াশুনাও করেন তাঁর মায়ের ইচ্ছেয় । পাশাপাশি একই সময় থিয়েটার দলেও যোগ দেন তিনি।
তাঁর স্বামী দিগন্ত সাহাও একজন অভিনেতা। যার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় এই থিয়েটার দলের সূত্রেই। মৌসুমীর মন মাতানো গানের সুরে প্রভাবিত হয়ে দিগন্ত তাঁকে গানের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য রাজি করান। ‘ওই আমাকে ঘাড় ধরে গান শিখতে পাঠায়’, হাসতে হাসতে বললেন ‘রসগোল্লা’ নামে বাংলা ছবির গায়িকা।
কলকাতায় এসে প্রথমে উত্তর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কিরানা ঘরানার সঙ্গীতে প্রশিক্ষণ নেন আচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর কাছে। পরের দিকে সন্দীপ নাগের কাছে গানের প্রশিক্ষণ সেনিয়া ঘরানার তালিম চলছে। ‘আমার দুর্গা’-এর মতো কিছু টিভির পর্দায় আসা সিরিয়ালেও গান গেয়েছেন তিনি।
ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর যন্ত্রসঙ্গীতের হাতেখড়ি বিখ্যাত গিটার বাজিয়ে অমিত দত্তের কাছে। দুই রকম গানের জগতে এগোতে এগোতেই তিনি সুযোগ পেয়ে যান ‘রসগোল্লা’ ছবিতে গান গাইতে। তবে এর পরে তিনি আর কাজের জন্য কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করেননি এই নিয়ে।
মৌসুমী বললেন, ‘আমি যেহেতু খুব দেরিতে গান শেখা শুরু করেছিলাম, তাই আমার লক্ষ্য ছিল আগে নিজের গানের ভিত শক্ত করা। তাই আমি একেবারেই গৃহবন্দী হয়ে যাই গানের চর্চা করতে।’
সঙ্গীত পরিচালক নীল অধিকারীর সঙ্গে সমাজ মাধ্যমের পাতায় তাঁর হঠাৎ পরিচয় এই সময়ের আশেপাশেই। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে হোয়াটসঅ্যাপে গান গেয়ে পাঠিয়ে তিনি মুম্বইয়ে প্রথম গান গাওয়ার সুযোগ পান। দৃশ্যম ফিল্মস-এর পরিচালক মনীশ মুন্দ্রার পরিচালনায় ‘সিয়া’ ছবিটিতে গান গেয়েছেন তিনি। সেখানে রয়েছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ব্যবহার। এমন কী আলাপও।
বছরখানেক হল মুম্বইয়ে থিতু হয়েছেন মৌসুমী। পুজোয় কলকাতায় আসছেন নাকি? উত্তরে জানালেন, অনেক কষ্ট করে বহু পরিকল্পনা বানচাল করে দিয়ে এই বারে কলকাতায় আসছেন তিনি। পুজোর আগে প্রথমা থেকে পঞ্চমীতে কলকাতায় আসছেন স্কিনি মো’স জ্যাজ ক্লাব, ব্রডওয়ে ইত্যাদি জায়গায় গানের অনুষ্ঠানের কারণে। তার পরেই সোজা চলে যাবেন ফালাকাটায়। নিজের বাড়ি ও নিজের পরিবার-পরিজনদের কাছে। তাঁর কথায়, ‘আমার কাছে পুজো মানেই শুধু ঘুরতে যাওয়া আর খাওয়া-দাওয়া।’
পুজোর মধ্যে আপাতত আসছে না তাঁর কোনও নতুন গান। তবে এই বছরের শেষে আসতে পারে তাঁর ব্যান্ডের কিছু নতুন গান, যেখানে তিনি গান নিয়ে নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy