স্মৃতিচারণায় সৌরসেনী
এ বার অনেকগুলো শাড়ি কিনেছি। ঢাকাই জামদানি, বিষ্ণুপুরী কাঁথা, এ ছাড়া মা-দিদার শাড়ি তো আছেই। চতুর্থী থেকে শাড়ি পরা শুরু করব। পুজো মানে শুধু শাড়ি। এ ছাড়া কিছু ভাবতেই পারি না! এ বছর আমার পুজো শুরু হয়ে যাবে মহালয়া থেকেই। অনেক প্ল্যান আছে। গত দু’বছর কোভিডের কারণে পুজোতে কিছুই করতে পারিনি। এ বার বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দেব। প্রচুর খাব। এক বন্ধুর বাড়িতেই পুজোর আড্ডার আসর বসবে।
চতুর্থীর দিন হয়তো পুজো পরিক্রমায় বেরোতে হবে। তখনই ঠাকুর দেখাও হয়ে যাবে। এমনিতে ভিড়ের মধ্যে ঠাকুর দেখতে যাওয়া হয় না। কয়েকটা অনুষ্ঠানও রয়েছে। তবে সবটাই পঞ্চমী অবধি। ষষ্ঠী থেকে ‘নো’ কাজ। আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় বাইরে থাকেন। তাঁদের এ বার পুজোয় কলকাতায় আসার কথা রয়েছে। ছোটবেলার পুজোটা একেবারে অন্য রকম ছিল। এখনও ভাবতে যে কী ভাল লাগে! ওই সময়ে হাফ-ইয়ারলি পরীক্ষা পুজোর আগে হয়ে যেত। শেষ দিন পরীক্ষার পরে বন্ধুরা এক জায়গায় দেখা করতাম। কার ক’টা জামা হল, কেমন জামা এঁকে বোঝানো হত।
আমার বাড়ির উল্টো দিকেই দিদার বা়ড়ি। এখনও ওটাই আমার পুজোর ঠিকানা। পুজোর সময়ে অন্য ভাই-বোনেরাও আসত। এমনিতে বাড়িতে রাত জাগার অনুমতি ছিল না। এদিকে ঠাকুর আসবে রাতে। তখন তো জেগে থাকতেই হবে। তখন দাদুর সাহায্য নিতাম। দাদুই বাবা-মাকে ম্যানেজ করতেন। আমাদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা ছিল, কে আগে ঠাকুরের মুখ দেখবে। আমাকে কেউ হারাতে পারত না। আমিই প্রথম ঠাকুরের মুখ দেখতাম।এখন প্যান্ডেলে সবাইকে আড্ডা মারতে দেখলে মনটা খারাপ হয়ে যায়। আমার সমসাময়িক অনেকেই কাজের সূত্রে অন্য জায়গায় থাকে। আমার আর প্যান্ডেলে আড্ডা দেওয়া হয় না। ছোটবেলায় পুজোর চার দিন প্যান্ডেলেই কাটত। আর ছিল বাবার সঙ্গে ঠাকুর দেখতে যাওয়া।
কোন দিন উত্তর কলকাতার ঠাকুর দেখব, কোন দিন দক্ষিণের, বাবা আগে থেকে ঠিক করে রাখতেন। পুজোর সঙ্গে প্রেমও জড়িয়ে আছে। পুজোতেই আমাদের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল। আবার পুজোতেই সেই সম্পর্কের শেষ। দশমী এলেই মনে পড়ে। সে দিন আমার প্রেমেরও বিসর্জন হয়েছিল। যদিও এখনও আমরা খুব ভাল বন্ধু।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের অংশ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy