প্রতীকী ছবি।
মা আসবেন সিংহে চড়ে। কার্তিক ময়ূরে। গণেশের তো ইঁদুর বাহন। কিন্তু আপনার? কয়েক বছর হল, বাঙালি জীবনে পুজোর মরশুমে নতুন জামা-কাপড়ের মতো গাড়ি কেনার এক প্রবণতা দেখা দিচ্ছে। তবে জামা-কাপড়ের মতো গাড়ি তো আর বছর বছর কেনা যায় না। কম করে আট-দশ বছর ব্যবহার করতে হয় একই গাড়ি। আর সেখানে রয়েছে এক উভয় সঙ্কট।
জ্বালানির দাম যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে পেট্রল-ডিজেল গাড়ি কেনা কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে? ইলেকট্রিক গাড়ি বা ব্যাটারি চালিত বাহনের ওপর আবার পাওয়া যাচ্ছে ভর্তুকি। তার উপর এমন গাড়ি চালিয়ে পরিবেশ রক্ষার ছোট্ট হলেও একটু দায় নেওয়া যায়।
এই মুহূর্তে ভারতে বিদ্যুতিক বা ব্যাটারি চালিত বাহনের কমতি নেই। প্রায় সব কোম্পানি নিজেদের বিদ্যুতিক বাহনের সম্ভার নিয়ে এসেছে। কিন্তু কেনার আগে কয়েকটা বিষয় একটু নজরে রাখা উচিত:
১. গবেষণা খুব জরুরি: ভারতে বৈদ্যুতিক গাড়ির যে মডেলগুলো পাওয়া যাচ্ছে, তার মধ্যে ‘এক বার চার্জ দিলে কত কিলোমিটার চলবে’, ‘শহরে বা শহরতলিতে চার্জ দেওয়ার পরিকাঠামো কেমন’ এবং ‘অন রোড দাম কত পড়বে’, এই তিনটে বিষয় ভাল করে দেখে নিন।
২. এর পর দেখুন প্রয়োজনীয়তা: দেখুন প্রতি মাসে কতটা পথ আপনি গাড়ি চালাবেন। সপ্তাহ শেষে যদি কাছাকাছি ঘুরতে যান, তা হলে সেটাও হিসেবে রাখবেন।
৩. এবার দেখুন ভর্তুকি: আপনার পছন্দের বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য সরকারি ভর্তুকি কতটা পাচ্ছেন, সেটা জেনে নিন।
৪. চার্জ দেওয়ার পরিকাঠামো: এটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেখে নিন নিজের এলাকায় এবং সাধারণত যে পথে অফিস যান, সেই রুটে চার্জ দেওয়ার সুবিধা কেমন। বাইরে কোথাও ঘুরতে গেলেও, এটাই মনে রাখবেন।
৫. টেস্ট ড্রাইভ: এত সব কাগজে কলমে দেখে নেওয়া হয়ে গেলে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, এক বার টেস্ট ড্রাইভ অবশ্যই নিয়ে নেবেন। টেস্ট ড্রাইভ করলে তবেই বুঝতে পারবেন, গাড়িতে চড়ার আরাম বা চালানোর সুবিধার মতো বিষয়গুলি।
গাড়ি কেনার পর
সবার প্রথমে শুধু মাত্র গাড়ি চার্জ করার একটা পয়েন্ট বাড়িতে বানিয়ে নিন। যন্ত্রাংশ কম থাকার কারণে পেট্রল গাড়ির তুলনায় বৈদ্যুতিক গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কম হলেও মনে রাখবেন, ব্যাটারি খুব দামি হয়। তাই ব্যাটারির ওয়ারেন্টির শর্ত ভাল করে বুঝে নিন।
ব্যাটারিই যেহেতু বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রাণ ভ্রোমরা, তাই তার যত্ন নেওয়ার টিপস জেনে নিন:
১. বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারির আয়ু বাঁচাতে সব সময় ধীরে ধীরে আকসেলেরেটরে চাপ দেবেন।
২. আজকাল সব বৈদ্যুতিক গাড়িতে রিজেনারেটিভ ব্রেকিং আছে। মানে ব্রেকের শক্তিকে ব্যাটারিকে চার্জ করার কাজে লাগানো হয়। সুযোগ পেলেই সেটা করুন। এ ভাবে ‘ব্রেক’ করে করে চললে, বাড়ি থেকে যতটা পথ পাড়ি দিতে পারবেন ভেবেছিলেন, তার থেকেও বেশি পথ যেতে পারবেন।
৩. কোথাও যাত্রার আগে চার্জ দেওয়ার জায়গা ঠিক করে নিন: সপ্তাহ শেষে বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করলে, আগে দেখে নিন আপনার গাড়ি একবার চার্জ করলে যতটা পথ চলতে পারে, তার আগেই যেন কোথাও চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। মনে রাখবেন, চড়াই পথে ব্যাটারি বেশি খরচ হয়। উ্তরাই পথে উল্টো। তবে আপনার রুটে চার্জিং স্টেশন খুঁজতে গাড়ি কোম্পানির অ্যাপ সাহায্য করে দেবে।
৪. অত্যধিক চার্জ দেবেন না: মনে রাখবেন ব্যাটারি সব থেকে ভাল চলে মাঝারি চার্জের অবস্থায় রাখলে, বিশেষজ্ঞরা বলেন ২০% থেকে ৮০% চার্জে ব্যাটারি ভাল থাকে। তাই সারা রাত গাড়িকে চার্জে বসিয়ে রাখবেন না।
৫. ঠান্ডায় বিশেষ দেখভাল: কলকাতায় এই সমস্যা কম হলেও, মনে রাখবেন, খুব ঠান্ডা ব্যাটারির পক্ষে ভাল না। শীতকালে খুব ঠান্ডা পড়লে, চেষ্টা করুন গাড়ি ঢেকে রাখতে বা গ্যারেজের ভিতরে রাখার।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy