পুজো এসে গেল। পুজোতে রংবেরঙের জামাকাপড় পরে গাড়িতে করে ঠাকুর দেখা আরম্ভ হতে চলেছে। এই সময় অনেক গাড়ি বিক্রেতা নানা রকম ডিসকাউন্ট বা ফ্রি গিফট দিয়ে ক্রেতাদেরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে থাকে। কিন্তু ডিসকাউন্ট বা গিফটের ফাঁদে পা না দিয়ে ভাল করে জেনে নিন আপনার গাড়ির সুরক্ষা বা সেফটি ফিচার্স বলতে কী কী আছে।
আজকাল সব গাড়িতেই থ্রি পয়েন্ট সিট বেল্ট আছেই। এটি সর্বদা ব্যবহার করুন। দেখে নিন এয়ারব্যাগ আছে কি না বা থাকলে দেখে নিন ক’টি আছে। সাধারণত সামনে দু’টি থাকে। একটি চালকের স্টিয়ারিংয়ের মধ্যে ও অন্যটি কোড্রাইভার সাইডে গ্লোভ বক্সের উপর। এর উপর সাধারণত SRS শব্দটি লেখা থাকে, যার মানে সাপ্লিমেন্টাল রেস্ট্রেন্ট সিস্টেম, মানে সিট বেল্টের সঙ্গে এটি আপনাকে দুর্ঘটনাজনিত চোট এড়াতে সাপ্লিমেন্ট বা সাহায্য করবে। দেখে নিন পেছনের যাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত এয়ারব্যাগ আছে কি না। এ ছাড়া দামি গাড়িতে সাইড এয়ারব্যাগও থাকে গাড়ির দরজায়।
সিটবেল্ট কখন কাজ করবে বা কত স্পিডে কাজ করবে এ নিয়ে নানান মানুষের নানান মত। সাধারণত ২৫-৪৫ বা তার বেশি কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে গাড়ির গতি থাকলে এয়ারব্যাগ কাজ করা উচিত। মনে রাখবেন, এক বার সিটবেল্ট ইনফ্লেট হয়ে গেলে সেটি সেই গাড়ির অথারাইজড সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে সারান বা পাল্টান। মনে রাখতে হবে, সিটবেল্ট না পরলে এয়ারব্যাগ ডেপ্লয় বা কাজ করবে না।
আরও পড়ুন: পুজোর আগে নতুন রূপে বাজারে হাজির নিসানের ‘সানি’
দেখতে হবে অ্যান্টিলকিং ব্রেকিং সিস্টেম বা ‘এবিএস’ আছে কি না। এটি থাকলে, আপনি যখন গাড়ি ব্রেক করছেন তখন রাস্তায় টায়ার স্কিড করা থেকে রেহাই দিয়ে থাকে এই এবিএস। এটা ব্যবস্থা গাড়ির চাকাগুলোকে একেবারে লক না করে অল্প অল্প করে ঘুরতে সাহায্য করে যাতে টায়ার স্লিপ না করে গাড়িটি ঘুরে না যায় বা নিয়ন্ত্রণের বাইরে না চলে যায়।
আর একটি ফিচার হল ইলেকট্রনিক ব্রেকফোর্স ডিস্ট্রিবিউশন বা সংক্ষেপে ‘ইবিডি’। এটির সাহায্যে গাড়ির যে অংশে লোড বা ভার অপেক্ষাকৃত বেশি সেটির নীচের চাকায় তুলনামূলক ভাবে বেশি ব্রেকিং করানো হয় ইলেকট্রনিক সেন্সরের মাধ্যমে, যাতে গাড়িটি স্টেবল বা ব্যালান্সড থাকে।
কিছু গাড়িতে অতিরিক্ত ভাবে ট্রাকসন কন্ট্রোল সিস্টেম বা ‘টিআরসি’ থাকে যার দ্বারা ওভার অ্যাক্সেলারেট করলে গাড়ির চাকা সহজে রাস্তায় ফলস স্পিন বা উহলস্পিন করবে না। এটি সাধারণত বরফের দেশে লাগে বা ধুলোবালি ও জলকাদা ভরা জায়গায় লাগে।
ভাবতে হবে টু হুইল ড্রাইভ না ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়ি কিনবেন। প্রথম ধরনটির ইঞ্জিনের পাওয়ার হয় সামনের দু’চাকায় বা পিছনের দু’চাকায় ট্রান্সফার করে। ফোর হুইল গাড়িতে ইঞ্জিনের পাওয়ার চার চাকাতেই ট্রান্সফার হয়, তাই গাড়ি অনেক শক্তিশালী হয়। তবে রোজকার শহরে চলার জন্য টু হুইল ড্রাইভ গাড়িই যথেষ্ট। আপনি যদি বাইরে বেড়ানো বা জঙ্গল ও পাহাড় অভিযানে যান তবেই ফোর হুইল গাড়ির কথা ভাবুন।
আরও পড়ুন: বাজারে আসছে মার্সিডিজ বেঞ্জের চোখধাঁধানো নতুন সি-ক্লাসের গাড়ি
হ্যাঁ মানছি, এই সব অতিরিক্ত ফিচার্সের জন্য আপনার বাজেট বাড়াতে হচ্ছে। কিন্তু কথাতেই আছে সেফটি ফার্স্ট। এটা কম্প্রোমাইজ মানেই আপনার জীবন সংশয়। তাই কিছু বাড়তি ইএমআই দিয়ে যদি এই সুরক্ষা কবচগুলি আপনার গাড়িতে থাকে, তা হলে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেরিয়ে আসতে পারেন যে কোনও জায়গা থেকে।
মনে রাখবেন, তেরো বছরের কমবয়সী বাচ্চাদের সামনের সিটে বসা বাঞ্ছনীয় নয়। একদম বাচ্চা বা দু’-তিন বছর বয়সী বাচ্চার জন্য রিয়ার ফেসিং বেবি সিট ব্যবহার করুন। বাচ্চার উচ্চতা ৪ ফুট ৯ ইঞ্চি না হওয়া পর্যন্ত ফ্রন্ট ফেসিং বেবি সিট ব্যবহার করুন যাতে সিটবেল্ট লাগান। পিছনের দরজায় চাইল্ড লকটি অন করে দিন। পিছনে ‘বেবি অন বোর্ড’ স্টিকার লাগিয়ে নিন যদি গাড়িতে বাচ্চা থাকে।
এই সব সুরক্ষা ও সাবধানতা অবলম্বন করুন ও ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ আক্ষরিক ভাবে পালন করুন, দেখবেন, আপনার যাত্রা অনেকটাই মসৃণ ও সুন্দর হয়ে উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy