কী ভাবে যেন এক দিন নিখোঁজ় হয়ে গিয়েছিল বিমানটি। বহু তল্লাশি করেও খোঁজ না মেলেনি তার। ধরে নেওয়া হয় যাত্রীরা সকলেই মৃত। না মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান এমএইচ ৩৭০-র কথা নয়। ৫৫ বছর আগে প্রায় সে রকমই আর একটি বিমান-রহস্য তৈরি হয়েছিল চিলিতে। এত দিন জানা ছিল, সেটি নিখোঁজ। কিন্তু রবিবার এক দল পর্বতারোহী জানালেন, সেই বিমান ‘ডগলান ডিসি-৩’-র ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পেয়েছেন তাঁরা। চিলির আন্দিজ পর্বতের গভীরে এক জায়গায় পড়ে রয়েছে সেটি। তাঁদের আরও দাবি, আশপাশে বহু মানুষের দেহাংশের চিহ্নও দেখতে পেয়েছেন তাঁরা।
এত দিন বাদে বিমানের খোঁজ? বিশ্বাস হচ্ছে না অনেকেরই। গত ৫৫ বছরে এক বার শুধু শোনা গিয়েছিল, বিমানটিকে চিলির লিনারেস শহরের কাছে কোথাও দেখতে পেয়েছিলেন এক পাইলট। ব্যস্ ওটুকুই। তার পর আবার সেই রহস্য। রবিবার অবশ্য ওই পর্বতারোহীর দলটি জানিয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দশ হাজার ফুট উচ্চতায় আন্দিজ পর্বতমালার একাংশে পড়ে রয়েছে বিমানটি। তবে তার নিখুঁত অবস্থান এখনও জানাননি ওই পর্বতারোহীরা। তাঁদের যুক্তি, এই খবর ছড়িয়ে পড়লে বহু মানুষ ভিড় জমাতে পারে ওই জায়গায়। স্মারক হিসেবে ঘরে নিয়ে যেতে পারে বিমানের অংশ। তা মোটেও হতে দিতে চান না তাঁরা।
ইতিহাস বলছে, ১৯৬১ সালের ৩ এপ্রিল সান দিয়েগো ফেরার পথে আন্দিজে ভেঙে পড়ে বিমানটি। তখন তাতে সফর করছিলেন চিলির ঘরোয়া ফুটবল দলের ৮ জন খেলোয়াড়-সহ ২৪ জন। ঘরোয়া ফুটবল টুর্নামেন্ট ‘কোপা দি চিলি’ খেলে ফিরছিলেন তাঁরা। কিন্তু আর ফেরা হয়নি। আন্দিজেই কোথাও হারিয়ে যান ওই ৮ খেলোয়াড়। দেহটুকুও হাতে পাননি পরিজনরা। শুধু তাঁদের নামাঙ্কিত সৌধের সামনেই এত দিন চোখের জল ফেলতে হয়েছে আত্মীয়দের।
এখনও যে দেহ পাবেন, সে আশা নেই। বড় জোর ভাঙা হাড়গোড়ের শেষাংশ বা বিমানের টুকরো-টাকরা মিলতে পারে। তা-ই বা কম কী? হয়তো এমনই ভাবছেন এমএইচ ৩৭০-র যাত্রীদের পরিজনরা।