ফুটবলের টানেই ব্রাজিলে এসেছিলেন। কিন্তু ব্রাজিল এতটাই ভাল লেগে গিয়েছে যে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেলেও, দেশে ফেরার নাম নেই বহু আর্জেন্তিনীয় সমর্থকের। ফুটবলে ব্রাজিল ও আর্জেন্তিনার রেষারেষি নতুন নয়। দেশে ফিরতে নারাজ এমনই এক জন বছর তেইশের লুকাশ বাজান পন্টনির কথায়, “অপূর্ব জায়গা ব্রাজিল। কত দিন এখানে থাকব জানি না। হতে পারে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস।” ব্রাজিলে আসতে গেলে আর্জেন্তিনীয়দের ভিসা বা পাসপোর্ট লাগে না। সরকারি পরিচয়পত্র থাকলেই চলবে। আর তাই শুধু পন্টনি নন। তাঁর সঙ্গেই ব্রাজিলে থেকে গিয়েছেন হাজার হাজার আর্জেন্তিনীয়। এঁদের বেশি ভাগেরই বয়স কুড়ির কোঠায়। শুধু ভাল লেগেছে বলেই কি এত মানুষ আর্জেন্তিনায় ফেরেননি? অনেকে মনে করছেন, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ব্রাজিল খানিকটা হলেও আর্জেন্তিনার থেকে এগিয়ে। তাই বোধ হয় আর্জেন্তিনীয়রা বিশ্বকাপ শেষের দু’সপ্তাহ পরেও থেকে ওই দেশে গিয়েছেন। জীবিকাও খুঁজে নিয়েছেন অনেকে। ঠিক কত জন আর্জেন্তিনীয় সমর্থক ব্রাজিলে থেকে গিয়েছেন, সে নিয়ে ব্রাজিল সরকার কোনও তথ্য দেয়নি। কিন্তু সমাজকল্যাণ দফতরের দাক্ষিণ্যে যে ভাবে এত আর্জেন্তিনীয় দিন কাটিয়ে দিচ্ছেন, তা নিয়ে চিন্তিত প্রশান। ব্রাজিলের বছর ষাটের শিক্ষিকা ফাতিমা সুজা ডে অলিভেরার কথায়, “আমাদের দেশের মনোরম আবহাওয়া এবং দেশের মানুষের জন্যই ব্রাজিল ছাড়তে চাইছেন না আর্জেন্তিনীরা।”
দেশের মানুষ দেশে ফিরুক, এমনটা চায় আর্জেন্তিনাও। যাঁদের টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে বা কাগজপত্র হারিয়েছে, তাঁদের জন্য দেশে ফেরার ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন কয়েক জন সরকারি কর্তা। তবে অনেকেই সে সাহায্য নিতে চাননি। বছর পঁচিশের মার্টিন সিশেরোর কথায়, “এখন মনে হচ্ছে এ দেশ ছেড়ে আর যাব না।” ফুটবল ভালবেসে ব্রাজিলে এসে সেখানেই থেকে যাওয়া। ফুটবলেই মিলে গেল দু’দেশ।