তিস্তা চুক্তি না হওয়ার জন্য এ বার সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ জলসম্পদ মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে এই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাসিনা। তাঁর মতে, তিস্তা জলবন্টন চুক্তির সব কিছু চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে তা স্বাক্ষরিত হয়নি। বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, “মমতা যে ভাবে তিস্তা চুক্তির বিরোধিতা করছেন, তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।” হাসিনার মতে,“ তিস্তার জল নিয়ে আমরা (ভারত-বাংলাদেশ) আলোচনা করে একটা সমঝোতায় এসেছিলাম। কিন্তু মমতা আপত্তি করলেন। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমরা দেখেছি ভারত সরকার চুক্তি করার জন্য কতটা আগ্রহী ছিল।”
শেখ হাসিনার অভিযোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন,“ কেন্দ্রীয় সরকার এই চুক্তি নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেনি। আর নিজেদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে কোনও কাজ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।” চার দিন আগেই বাংলাদেশের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মহম্মদ বলেছিলেন, “ভারতে এখন লোকসভা নির্বাচন চলছে। তা শেষ হলে দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে থাকা তিস্তা ও অন্য নদীর জলবণ্টন সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলেই মনে করে বাংলাদেশ।”
তার এই কথার পরেই হাসিনা প্রথম বারের জন্য মুখ খুলে তিস্তা চুক্তি না হওয়ার দায় মমতার উপর চাপিয়ে দেওয়ায় বিষয়টি অন্য মাত্রা পেল। ভারতে আর কয়েক দিনের ভিতরেই নির্বাচিত হতে চলেছে নতুন সরকার। তার আগে তিনি আগাম বার্তা দিয়ে রাখলেন বলেই কূটনীতিকদের একাংশ মনে করছে। তবে প্রথম থেকেই তিস্তা চুক্তির বিরোধিতা করতে গিয়ে মমতা অভিযোগ এনেছিলেন,, এই চুক্তি হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে পশ্চিমবঙ্গ। ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বাংলাদেশ সফরের সময় তিস্তা চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। এই সফরে মনমোহন সিংহের সঙ্গে বাংলাদেশে যাওয়ার কথা ছিল মমতারও।
কিন্তু তিস্তা চুক্তির বিরোধিতা করে সে বার বাংলাদেশ সফরে যাননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। আজ সেই ক্ষোভই প্রকাশ করলেন হাসিনা।
দ’ুদেশের যৌথ উদ্যোগে গঙ্গা ব্যারেজ নির্মানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন হাসিনা। টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্পের বিষয় দূদেশের মধ্যে আলোচনা করেই এগোবে বলেই মনে করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।