স্বজন স্মরণ। সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার আনসানে। ছবি: এ এফ পি
জাহাজের কর্মীদের পরামর্শ মেনে চললে যাত্রীদের ডুবে যাওয়ার কোনও আশঙ্কাই নেই। চার বছর আগে এ ভাবেই সকলকে অভয় দিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার ডুবে যাওয়া জাহাজের ক্যাপ্টেন লি জুন-সিওক। অথচ গত বুধবার সমুদ্রের অথৈ জলে যখন জাহাজটি ডুবছে, তখনও এই ক্যাপ্টেন ও তাঁর কর্মীরা যাত্রীদের জাহাজ থেকে না নামার পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন। “এমন ভুল খুনেরই সামিল”, মত স্বয়ং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গুয়েন হাইয়ের।
কিন্তু তাতেও বা কী? দিনের শেষে যা চোখের সামনে ধরা দিচ্ছে, তা হল মৃতের সংখ্যা। এ দিনের পর যা পৌঁছেছে ৬৮তে। নিখোঁজ ২৩৮। তবে তাঁদের আত্মীয়রাও ধীরে ধীরে বুঝতে পারছেন, নিকটজনদের জীবিত ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। এ দিনও প্রবল স্রোতে উদ্ধারকাজ কিছু ক্ষণ ব্যাহত হয়। পরিজনেরা উদ্ধারকাজে প্রশাসনের ঢিলেমির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান। আর তাঁদের ক্ষোভ উস্কে দিয়েছে জাহাজের ক্যাপ্টেনের ভূমিকা। এ দিন জানা গিয়েছে জাহাজটি যখন ডুবছে, তখন ‘ভেসেল কন্ট্রোলার’ -এর তরফ থেকে বার বার বলা হয়েছিল, যাত্রীদের অন্তত লাইফ-জ্যাকেট পরিয়ে জাহাজ থেকে বার করে আনতে। তাতে তাঁরা অন্তত কিছু ক্ষণ ভেসে থাকতে পারতেন। কিন্তু ক্যাপ্টেন তা করেননি। শেষমেশ যখন ওই প্রক্রিয়া শুরু হয়, তখন প্রায় চল্লিশ মিনিট কেটে গিয়েছে। ক্যাপ্টেন ও বাকি কর্মীরা আশ্রয় নিয়েছেন ‘লাইফবোট’-এ। যাত্রীরা জলে পরে হাবুডুবু খাচ্ছেন। আর তার পর...
পুরো বিষয়টায় ক্যাপ্টেন ও তাঁর দুই কর্মীর ভূমিকা খতিয়ে দেখতে আগেই তাঁদের গ্রেফতার করে দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ। এ দিন আরও চার জনকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছে তারা। তথ্য বলছে, ডুবে যাওয়ার আগে একাধিক বার গতিপথ পরিবর্তন করেছিল জাহাজটি। কিন্তু কেন, তা জানা যায়নি।