মানিক চট্টোপাধ্যায়
নতুন বিদেশমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্করকে শনিবার জেড্ডা থেকে টুইটে ভিডিয়ো বার্তা পাঠানোর পরে দুবাইয়ের ভারতীয় দূতাবাস থেকে মানিক চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। মানিক নিজের সমস্যার কথা তাঁদের জানিয়েছেন। তিনি যে অবিলম্বে দেশে ফিরতে চান, সে কথা বলেছেন। নিজের পাসপোর্ট নম্বর এবং অন্যান্য তথ্যও দিয়েছেন। কিন্তু রবিবার আর কেউ যোগাযোগ করেনি। তবে বিদেশমন্ত্রী নিজে সৌদির ভারতীয় দূতাবাসকে তাঁর বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেওয়ায় আশাবাদী হুগলির দশঘরার মানিক। তিনি বলেন, ‘‘এ বার একটা কিছু ঠিক হবে!’’
উদ্বেগে দশঘরা স্কুলপাড়াও। বস্তুত শনিবার পর্যন্ত কেউ কিছু জানতেন না। রবিবার খবরের কাগজ পড়ে কয়েক জন জয়শঙ্করের টুইট দেখেন। মানিকের এক আত্মীয় বলেন, ‘‘এই মানিকই যে আমাদের মানিক, সেটা ওই ভিডিয়ো দেখে নিশ্চিত হই। কিন্তু আমরা জানতাম সে ভাল আছে। আমরা চাই, ভারত সরকার তাকে ফিরিয়ে আনুক।’’ মানিকের মা শোভনাদেবী জানান, তিনি কাগজ দেখেননি। পাড়ার লোকেরাই তাঁকে খবর দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘মানিক যে বিপদে পড়েছে, এক বারও বলেনি। নিয়মিত ফোন করে, বলে খুব ভাল আছি। আজ সকালে খবর ছড়িয়ে পড়ে। মা হিসেবে চাই, সে ভালয় ভালয় বাড়ি ফিরে আসুক।’’
শোভনাদেবী জানান, কলকাতার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ার পরে মানিক গোয়া ও উটিতে কাজ করেছেন। তার পরে মুম্বইয়ের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সৌদি আরবের জেড্ডার এই হোটেলে চাকরির সুযোগ পান। হোটেল কর্তৃপক্ষের পাঠানো টিকিটেই ৫ মে জেড্ডার বিমানে উঠেছিলেন মানিক। তাঁর মা বলছেন, ‘‘ও যখন সেখানে থাকতে পারছে না, সুস্থ ভাবে ফিরে আসুক। বিমান ভাড়ার খরচ আমরা যে ভাবে হোক হোটেল কর্তৃপক্ষকে ঠিক দিয়ে দেব।’’
মানিক জানিয়েছেন, ধর্মীয় কারণে সব ধরনের খাবার যে তিনি খেতে পারেন না— সেটা তিনি এজেন্টকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু জেড্ডায় গিয়ে দেখেন, কর্মীদের জন্য শুধু সেই খাবারই বরাদ্দ। বিকল্প কোনও খাবার না মেলায় এক মাস কার্যত না খেয়ে থাকতে হচ্ছে তাঁকে।কর্তৃপক্ষকে মানিক জানিয়েছেন, বাড়ি ফিরতে চান। তাঁরা বিনিময়ে ১৫ হাজার দিনার (প্রায় ৩ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা) চেয়েছেন। মানিক বলেন, ‘‘এই টাকা দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই।’’ এর পরে তিনি অভিবাসীদের সমস্যা নিয়ে কাজ করা লন্ডন ভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের সাহায্য চান। তাঁরাও তৎপর হয়েছেন। কিন্তু জেড্ডার ভারতীয় কনসুলেটে যোগাযোগ করে সেখানকার অফিসারদের কাছ থেকে খুব খারাপ ব্যবহার পেয়েছেন। তার পরেই মরিয়া হয়ে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করকে টুইট-বার্তা পাঠান।