ডিম পাড়ার জন্য সমুদ্রতীরে ফিরে এসেছে ৬৮ বছর বয়সী অ্যালবাট্রস পাখি। একটি ডিম পেড়েছে সে ইতিমধ্যেই।
পাখি বিশারদরা বলছেন, উইসডমই সবচেয়ে বয়স্ক পাখি যে ডিম পাড়ার জন্য ফিরেছে। উইসডম নামের এই পাখিটি এখন সঙ্গী আকেআকামাইয়ের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে। আকেআকামাইয়ের অর্থ জ্ঞানের (উইসডম) প্রতি ভালবাসা।
পাখিটি এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিডওয়ে অ্যাটোল জাতীয় বন্যপ্রাণী আশ্রয়কেন্দ্রে। এর অবস্থান হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ থেকে ১৫০০ কিমি উত্তর-পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে।
পায়ে রিং পরানো পাখির মধ্যেও এটি সবচেয়ে প্রাচীন। ১৯৫৬ সালে পাখিটির পায়ে রিং পরানো হয় জীববিদ চান্ডলার রবিনসের তরফে। সেই সময়ই পাখিটির বয়স ছিল পাঁচ বছরের বেশি। তার পর থেকে উইসডম ৪০ বার ডিম পেড়েছে।
৪৬ বছর পর ২০০২ সালে রবিনস ফের পুরনো ব্যান্ড ফেলে নতুন ব্যান্ড পরিয়ে দেন অ্যালবাট্রস পাখিটিকে। ২০০৬ সালে ফের ইউএস ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের তরফে ব্যান্ড পরানো হয় পাখিটিকে। সেই থেকে টানা পর্যবেক্ষণেই থাকে উইসডম।
অ্যালবাট্রস পাখি প্রতি বছর একটি ডিম পাড়ে এবং ছয় মাস পর্যন্ত বাচ্চাকে আগলে রাখে। বছরের বাকি সময় তারা দূর-দূরান্তে উড়ে বেড়ায়।
সাত ফুট দীর্ঘ ডানার জন্য এই পাখিকে বলা হয় আকাশের দানব। দীর্ঘ ডানা মেলে তারা সমুদ্রে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দেয়।
সারাটা জীবন এই উইসডম কেবল সমুদ্রে ঘুরে বেড়িয়েছে। পাখিটি তার পুরো জীবনে সাত লক্ষ মাইলেরও বেশি সামুদ্রিক পথ পাড়ি দিয়েছে। এর মধ্যেই ডিম দেওয়ার জন্য সেটি ফিরে আসায় উচ্ছ্বসিত বন্যপ্রাণী আশ্রয়কেন্দ্রের কর্মীরা।
২০১১ সালে সুনামিতে হাজার হাজার পাখি মারা গেলেও বেঁচে গিয়েছিল সে। ২০১৫ সালে উইসডম ও আকেআকামাইয়ের একটি ডিম নষ্ট হয়েছিল। পরে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে মা হয়েছিল উইসডম। এবারও সেই পালা।
সাধারণত সামুদ্রিক পাখি অ্যালবাট্রস বাঁচে ১২ থেকে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত। সেদিক থেকেও রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে উইসডম। মাস দুয়েক পর ডিম ফুটে উইসডমের ছানা চোখ মেলবে। তবে পাঁচ-ছয় মাস বাসাতেই থাকে সদ্য জন্মানো পাখিগুলি। তারা একটু বড় হলে ফের আকাশে ডানা মেলবে উইসডম।