নকশা তৈরির প্রায় ৭০ বছর পর সুইৎজারল্যান্ডে তৈরি হল বিশ্বের দীর্ঘতম রেল সুড়ঙ্গ। অল্পস পর্বতের তলা দিয়ে ৫৭ কিলোমিটারের এই সুদীর্ঘ সুড়ঙ্গের উদ্বোধন হল মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০১৬। গটহার্ড বেস নামে এই সুড়ঙ্গের নকশা তৈরি হয়েছিল ১৯৪৭ সালে।
আল্পসের পেটের ভিতর দিয়ে ছুটে চলা এই সুড়ঙ্গটি সুইৎজারল্যান্ডের উরি এলাকা থেকে দক্ষিণ টিসিনো ক্যান্টন পর্যন্ত বিস্তৃত। মঙ্গলবার প্রথম বারের জন্য একটি ট্রেনকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই সুড়ঙ্গের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত চালানো হল। ডিসেম্বর থেকে গটহার্ড বেস দিয়ে নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে যাবে। তাতে জুরিখ আর মিলানের দূরত্ব অনেক কমে যাবে। এই মুহূর্তে রেল পথে জুরিখ থেকে মিলান পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় আড়াই ঘণ্টা। সুড়ঙ্গ দিয়ে ট্রেন চলাচল পুরোদস্তুর শুরু হয়ে গেলে জুরিখ থেকে মিলান পৌঁছতে এক ঘণ্টাও সময় লাগবে না।
কিন্তু এমন অপরিহার্য একটা সুড়ঙ্গ তৈরি করতে ৭০ বছর সময় কেন নিল সুইৎজারল্যান্ডের মতো উন্নত দেশ? আসলে ১৯৪৭-এ নকশা তৈরি হলেও আমলাতান্ত্রিক জট-সহ নানা সমস্যায় আটকে ছিল ছাড়পত্র। ১৯৯৯ সালে সবুজ সঙ্কেত পায় গটহার্ড বেস প্রকল্প। ১২00 কোটি টাকা খরচ করে ১৭ বছর পর সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শেষ হল।
আল্পসের পেটের ভিতর দিয়ে এই সুদীর্ঘ সুড়ঙ্গ তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছিল ৪১০ মিটার লম্বা দৈত্যাকার টানেল বোরিং মেশিন। প্রায় ৪৪ হাজার ঘন্টা অবিরাম কাজ করেছেন ১২৫ জন শ্রমিক।
গটহার্ড বেস চালু হওয়ার আগে বিশ্বের দীর্ঘতম সুড়ঙ্গের শিরোপা ছিল জাপানের সেইকান টানেলের মাথায়। সেই সুডঙ্গের দৈর্ঘ্য ৫৩.৯ কিলোমিটার। ইংল্যান্ড-ফ্রান্সের সংযোগকারী ৫০.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গটি চলে গেল তৃতীয় স্থানে।